somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পায়ের তলায় ধ্বংসের ধোঁয়া

০৮ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পায়ের নীচে তখন জ্বলছে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। আর তার কালো ধোঁয়া পৃথিবী ছাড়িয়ে উঠে আসছে মহাকাশে। অনেকটা ঠিক জেগে ওঠা আগ্নেয়গিরির মতো। আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে একা বসে ৯/১১ তাণ্ডবের দৃশ্য দেখেছিলেন মার্কিন মহাকাশচারী ফ্র্যাঙ্ক কালবার্টসন। চলতি মাসের শেষে ফ্র্যাঙ্কের সেই সব অসহায় মুহূর্তগুলোর ছবি, ভিডিও নিয়ে তৈরি একটি তথ্যচিত্র সম্প্রচার করবে এক ব্রিটিশ চ্যানেল।
কিছু ছবি অবশ্য ২০১১ সালে প্রকাশ করেছিল নাসা। আর সেখানেই ধরা পড়েছিল ফ্র্যাঙ্কের অসহায়তা। সদ্য তখন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংসের খবর পেয়েছেন তিনি। পরিস্থিতি বুঝতে তড়িঘড়ি একটি ক্যামেরাতেও চোখ রেখেছেন। তখনই ধরা পড়ল গলগল করে বেরোচ্ছে ধোঁয়া। তার তীব্রতা এতই, যে মহাকাশে বসেও শিউরে উঠেছিলেন ফ্র্যাঙ্ক। সেই তাণ্ডবের রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ফের দুঃসংবাদ। ফ্র্যাঙ্ক জানতে পারলেন, জঙ্গিরা যে বিমানগুলি ছিনতাই করে ওই আক্রমণ চালিয়েছিল, তার একটির পাইলট ছিলেন তাঁর বন্ধু চিক বার্লিনগেম। জাতীয় শোক আর বন্ধু খোয়ানোর দুঃখ একাই সহ্য করতে হয়েছিল মহাকাশচারীকে। তাঁর বয়ানে, “ওই সময়ে মনে হচ্ছিল দেশের মানুষের পাশে থেকে তাঁদের সাহায্য করা দরকার। কিন্তু তা না করে এক নিঃসঙ্গ মানুষের মতো পৃথিবী থেকে অনেক দূরে বসে আমেরিকার বুকে এত বড় আঘাতের ছবি দেখছি।”
বাস্তবিক। মার্কিন নাগরিক হিসেবে অসহায় লাগারই কথা। কিন্তু ফ্র্যাঙ্কের ব্যাখ্যা, “বিশ্ববাসীর জীবনের মানোন্নয়নের জন্য মহাকাশ যানে দিন কাটাচ্ছি। অথচ সেখান থেকেই দেখতে হচ্ছে এই হত্যালীলা। এর থেকে বড় অসহায়তা আর কী হতে পারে?”
সে দিনে কী করেছিলেন ফ্র্যাঙ্ক, কী ভাবে কাটিয়েছিলেন গোটা দিনটা, সে সব নিয়েই তথ্যচিত্র। সঙ্গে থাকছে তাঁর ধারাভাষ্যও।
তবে শুধু তিনি নন। আরও বেশ ক’জন মহাকাশচারীর অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হবে ওই উপস্থাপনায়। আসলে মহাকাশচারীদের জীবন, তাঁদের লড়াই, এ সব নিয়ে সপ্তাহব্যাপী একটি বিশেষ উপস্থাপনার কথা ভেবেছে চ্যানেলটি। তারই একটি অংশে থাকছে ফ্র্যাঙ্কের উপর তৈরি তথ্যচিত্র। বাকি অংশের মধ্যে রয়েছে কিছু রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। যেমন ধরুন ইতালীয় মহাকাশচারী লুকা পারমিতানো। মহাকাশে হাঁটার সময় এক বার তাঁর হেলমেটে জল ঢুকে যাওয়ায় কী প্রচণ্ড জীবনসংশয় হয়েছিল, কী ভাবে সেই অবস্থাতেই হেলমেট না খুলে মহাকাশযানে ফিরেছিলেন তিনি, আর তা দেখে তাঁর সতীর্থরা যে ভাবে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন, সে সব অভিজ্ঞতার কথাই ফুটে উঠেছে ওই অনুষ্ঠানে। তবে একটি বিশেষ অভিজ্ঞতার কথা ভুলতে পারছেন না আয়োজকরা। ঘটনাটি ঘটেছিল শ্যুটিংয়ের সময়। নাসার ভিতরে তখন পুরোদমে কাজ করছে শু্যটিংয়ের দল। হঠাৎই খবর এল আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র বিগড়েছে। ফলে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিতে হয়েছে কেন্দ্রের অর্ধেকেরও বেশি অংশে।
সঙ্গে সঙ্গে তৈরি নাসার কর্মীরা। কী ভাবে হাঁটবেন মহাকাশচারীরা, কী ভাবে মেরামতির কাজ করবেন, সবটাই ছকে ফেললেন তাঁরা। আর বুঝিয়ে দিলেন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের কর্মীদের। পুরো ব্যাপারটাই হল অসম্ভব দ্রুততায়। অভিজ্ঞতাটা ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন অনুষ্ঠানের আয়োজকরা। সে সবও উঠে আসবে চ্যানেলের উপস্থাপনায়।
তবে সব কিছু পেরিয়ে নজর কাড়বে বিষধোঁয়াই। অন্তত তেমনই আন্দাজ চ্যানেলকর্মীদের। আমেরিকার বুকে বসে ৯/১১-র অভিঘাত সহ্য করেছেন অনেকেই। কিন্তু মহাকাশে একা বসে ফ্র্যাঙ্ক কী দেখেছিলেন, কী বুঝেছিলেন, তা জানতে চাইবেন অনেকেই। ক্ষত দূর থেকে কেমন দেখতে লেগে, সেটাও তো জানা দরকার।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×