বৃষ্টিভেঁজা দিন। দুপুরে বাসা থেকে খাবার এসেছে লাউ আলু পেঁপে দিয়ে রান্না করা এক পট নিরামিষ। এই নিরামিষ রান্নার সময় খানিকটা ভিনেগার দেওয়া হয়। এক পট সাদা আতপ চালের ভাত। আর তিনটি সন্দেশ। যদিও আজ বৃহস্পতিবার কাজের প্রচন্ড চাপ থাকার কথা, কিন্তু দুপুরের পর অফিসে আর তেমন কাজ ছিলো না। আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু সামার সাহেব এসেছেন। একজনের খাবার কিভাবে যেনো দুজনের বেশ ভালোভাবেই হয়ে গেলো। সামার সাহেবের সাথে ভাত খেতে খেতে জানতে চাইলাম - মানুষের জীবন আর সময় নিয়ে কিছু বলু্ন। তিনি খেতে খেতে গল্প শুরু করলেন, আসুন তাঁর গল্প শুনি।
জীবন কখনোই আমাদের অনুকূল পরিবেশে থাকে না। আমাদের তাঁকে অনুকূলে করে নিতে হয়। নয়তো সময় আমাদের দায়ী করে - কখনো কখনো ! গণহারে সবাইকে অবশ্য দায়ী করে না। সবাই দায়ভার, দায়িত্ব, কর্তব্য, দায়ী কে - বোঝার জ্ঞানও রাখেন না। চলার পথও কখনো মসৃণ হয় না। উচু নিচু বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে যার যার নিজ গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যেতে হয়। প্রকৃতির এ এক আজব খেলা - পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ একক ও অদ্বিতীয় (ইউনিক/মাস্টারপিস) তাই পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের চলার পথ আলাদা এবং গন্তব্যও আলাদা। আর তাই এগিয়ে যাওয়া মানুষগুলোকে দেখে তাদের পেছনে জীবনের অমূল্য বা বিনামূল্য সময় ব্যয় করে পাগল প্রায় হয় দৌড়ানো কখনো কোনো বুদ্ধিমান মানুষের কাজ নয়। এগুলো অসুস্থতা। মানসিক অসুস্থতা - যা হিংসা থেকে তৈরি হয়। আর মানসিক অসুস্থতার হাত ধরে আসে ব্যর্থতা ও অসফলতা। প্রতিটি মানুষের ব্যর্থতা ও অসফলতা হচ্ছে তার নিজ নিজ কর্মফল।
দেশের প্রথম শ্রেণীর সেলুন বাসগুলোর সকল যাত্রীর উক্ত বাসে যাতায়াত করার আর্থিক সচ্ছলতা আছে বলেই তারা উক্ত বাসে যাত্রা করেন বলে মনে করি। তারপরও কেনো বাসের সিট ছেঁড়া থাকে? - কারণ হিংসা। অদৃশ্য হিংসা। তার আছে আমার নেই এই জাতীয় হিংসা। আর এই জাতীয় হিংসা থেকে বাসের সিট ছিড়ে রেখে যান কোনো না কোনো যাত্রী। এই ধরনের কার্যকলাপ করে করে মানুষ যন্ত্রপাতির মতো আউট অব সার্ভিসেস / বিয়ন্ড সার্ভিসেস হয়ে পরে। তাদের আর চিকিৎসা নেই। পৃথিবীর সকল চিকিৎসা ও চিকিৎসক তাদের জন্য ফেইল। একদিন ঝন্টু মামা এসে থাবা দিয়ে নিয়ে যান অজানা গন্তব্যে! যে গন্তব্যের কোনো ঠিক - ঠিকানা নেই। যে অজানা গন্তব্য থেকে কেউ কখনো ফিরে আসেনি। কেউ কখনো ফিরে আসবে না।
শেষকথা: আমাদের খাবারের সাথে সাথে সামার সাহেবের গল্পও শেষ। আমাদের অন্ধগ্রামে একটি প্রচলিত মজাদার গল্প আছে, তা লিখে আজকের মতো আমিও সকলের কাছে দোয়া চেয়ে বিদায় নিচ্ছি। - ইঁদুর মরার সময় পা গুলো উপরের দিকে দিয়ে কেনো মরে জানেন কি? - কারণ আকাশ ভেঙ্গে পরলে যেনো পা দিয়ে ঠেকাতে পারে। মানুষের মাঝে ইঁদুর স্বভাব দেখতে পাওয়া যায়। তারা ইঁদুর হয়ে পাহাড় ঠেলার কাজটি করে। পাহাড় পাহাড়ের যায়গাতেই থাকে, কিন্তু ইঁদুর বেচারা অযথা অকারণ ক্লান্ত হয়। আমার নিজ বক্তব্য, শুধু মানব সমজ নয়! সমগ্র জীব জগতে সবচেয়ে মূল্যবান বিষয়টির নাম - সময়। সময়ের চেয়ে মূল্যবান আর কিছু আছে বলে আমার ধারণা নেই।
ছবি সূত্র: দেয়াল ঘড়ি
কৃতজ্ঞতা স্বীকার: সামহোয়্যারইন ব্লগ। নির্বাচিত পোষ্টে “উক্ত লেখাটি” স্থান দেওয়াতে সামহোয়্যারইন ব্লগ কর্তৃপক্ষকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:২৪