somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিষয়ে এখনকার কর্তব্য ঠিক করতে হবে দ্রুত

১১ ই মার্চ, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাঙালি জাতিয়তাবাদি এবং বাংলাদেশি জাতিয়তাবাদি এবং পাহাড়ি নেতাদের মধ্যে হাতেকগোনা কয়েকজন যারা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির কর্তৃক চালিত- তারা সবাই সেনাবাহীনিকে প্রধান সমস্যা বা সম্ভাবনা হিসাবে তুলে ধরেন। তিন পক্ষই নিজেদের রাজনৈতিক হঠকারিতা-ভুল এবং জালেম হিসাবে নিজেদের ভূমিকা আড়াল করতে এবং নিজেদের অঘোষিত রাজনৈতিক পরিকল্পনা সহজ করতে সেনাবাহীনির ঘাড়ে সব দোষ চাপিয় থাকেন। সেনাবাহীনির বিশেষ ভূমিকা সমস্যা তৈরি করতে পারে, কিন্তু সমস্যা মূলত সেনাবাহীনি নয়।

এখন আমাদের একইসাথে দুটো কাজ করতে হবে শান্তির লক্ষ্যে:

প্রথমত : মনে রাখতে হবে, পার্বত্য চট্টগ্রামে যাদের আদি নিবাস, হোক তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ অ-বাঙালি কিংবা খুবই সংখ্যা লঘু বাঙালি, ওটা তাদেরই নিবাস, তাদেরই জমা জমি ওখানে, বহিরাগত কারো ওইখানে জোর করে 'বসবাসের অধিকার' নাই। যেমন কোনো বহিরাগতের অধিকার নাই কারো জমি জমা জবরদখল করে পঞ্চগড় কিংবা ফেনিতে বসবাসের অধিকার। কাজেই জবরদখল বন্ধ করতে হবে।

দ্বিতীয়ত : একই সাথে আমারদের মনে রাখতে হবে, এখন পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীরা এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয় নাই যে তারা স্রেফ জাতীয়তার প্রশ্নে গ্রনতান্ত্রিক অধিকারের ক্ষেত্রে আত্মনিয়ন্ত্রনের প্রশ্নে আলাদা রাষ্ট্র গঠন করবে। সাতকন্যা রাজ্য সাক্ষী, এই অঞ্চলে এখনো এমন কোনো শর্ত তৈরি হয় নাই যে, স্রেফ নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীগত স্বাতন্ত্রে আলাদ রাষ্ট্র হতে পারে। সুতরাং এই বিষয়টা আমাদের স্পষ্ট করে বলতে হবে।

তৃতীয়ত : কাজেই আমাদের সাবধান থাকতে হবে, পদক্ষেপ নিতে হবে, ইউএনডিপি সহ পশ্চিমা লবির প্রচারনার বিরুদ্ধে, কার্যক্রমের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের অন্তর্ভূক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম, পার্বত্যবাসীরা বাংলাদেশের নাগরিক, সুতরাং ওই অধিবাসীদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করেই ওই অঞ্চলে স্বাভাবিকভাবেই শক্তিশালী সেনা উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। অবশ্যই।

আমরা যেন ভুলে নাই যাই

এক. 'বাঙালি' ও 'মুসলিম' শাসকরা যখনই ক্ষমতায় এলো একাত্তরে তখন থেকেই ঐতিহাসিক ভাবে ওই অঞ্চলের অধিবাসীদের প্রতি অত্যাচার করে এসেছে। তাদের জন্মগত অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।

দুই. ওখানকার সন্তুর মতো অনেক নেতারাই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যতটা না ভারতীয় পরিকল্পনার অংশ হয়ে লড়েছে, তার চেয়ে অনেক কম লড়েছে, স্বেচ্ছায়, নিজের জনগনের জন্য নিজের চাহিদা অনুযায়ি।

তিন. অমন লড়াই ঠেকাতে বাংলাদেশের সেনাশাসকরা ব্যবহার সামরিক শক্তি অনিবার্যভাবেই ব্যবহার করেছে। এবং লড়াই অবসানের পর কোনো রাজনৈতিক সামাজিক কর্মসূচি নেয় নাই, দীর্ঘ মেয়াদে পার্বত্যবাসীর অধিকার নিশ্চিত ও জাতীয় সুরক্ষা, দুইটাই নিশ্চিত করার জন্য।

এখনকার কর্তব্য :

এক . অনেক পার্বত্য প্রশ্ন আসলেই খালি 'সেনাবাহীনির প্রশ্ন' তোলেন। বিএনপিও তোলে, বামপন্থার দাবিদারেরাও তোলে। মনে হয় এটা শুধু সেনাবাহীনি থাকা না থাকার প্রশ্ন। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য ওইটা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ন জায়গা। ওইখানে স্থায়ি ও শক্তিশালী সেনা উপস্থিতি না থাইকা তো উপায় নাই।

দুই. যেটা নিশ্চিত করতে হবে যে, সেনা উপস্থিতি কোনোভাবেই জনজীবন কে নিয়ন্ত্রন করবে না। যেমন করেনা ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টের কিংবা ঢাকা ক্যন্টনমেন্টের সেনা উপস্থিতি।

তিন. সরকারকে আমাদের পক্ষ থেকে, নাগরিকদের পক্ষ থেকে চাপ দিতে হবে যে, যাতে ওখানে এমন সব রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক কর্মসূচি নেয়া হয় যাতে করে তারা আমাদের মতোই বাংলাদেশকে নিজের দেশ মনে করে।

চার. অবশ্যই সব অবৈধ সেটেলার কে ফেরত আনতে হবে।

পাঁচ. ইউএনডিপি'র কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। যারা এই অঞ্চলে একটা ক্রিশ্চিয়ান বেল্ট তৈরি করার জন্য কাজ করছে। প্রত্যক্ষ উন্নয়ন কর্মসূচির নামে বিচ্ছিন্নতার নৈতিক ও সামাজিক ভিত্তি তৈরি করতে। পার্বত্য কমিশনকে সাথে নিয়ে।

ছয়. ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনকে কাজ করতে দিতে হবে। সক্রিয়ভাবে

সাত. যারা বাংলাদেশে বসে পার্বত্য চট্টগ্রামের 'বিচ্ছিন্নতার অধিকারের কথা' বলে, তাদের বিষয়ে পর্যালোচনামূলক অবস্থান নিতে হবে। । এরা হয় গনতান্ত্রিক অধিকারের জায়গা থেকে আত্ননিয়ন্ত্রনের অধিকার আর স্রেফ সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে বিচ্ছিন্নতার ফারাক- এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তির ক্রিড়নক হয়ে যেই জাতীয়তার দাবি করা হয় সেইটার অগ্রহনযোগ্যতা ইত্যাদি বোঝেন না, নয় বুঝেও না বোঝার ভান করেন। বিষয়টি ব্যাখ্যা সমেত সবার সামনে তুলে ধরতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১২:৪১
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×