আমাদের দেশের পুলিশ বাহিনী সময়য় পেলেই মারেন। বুড়ো হাবড়া থেকে পোলাপাইন, আমলা থেকে কামলা, রাজনীতিবিদ থেকে পাড়ার নাপিত কিংবা শিক্ষক থেকে সাংবাদিক, সবাইকেই তারা ইলিয়াস কোবরা স্টাইলে মারধোর করেন আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন 'ওসব কিছু না, একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে এই আর কি...।'
আল্লাহই মালুম কবে যে পুলিশের সাথে সাধারণ মানুষের এরকম ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়... হাজার হোক পুলিশ জনগণের বন্ধু, এক বন্ধু তো আরেক বন্ধুকে ভালোবেসে ধাক্কা দিতেই পারে। যেমন ভারতের পুলিশকে দিয়েছে তাদের বর্ধমানের আউশগ্রামের বন্ধুরা। ধাক্কাধাক্কির নমুনা ভিডিও দেখুন নিচের ইউটিউব লিংকে
এবার আসল ঘটনায় আসি। গত শুক্রবারই ভারতের বর্ধমানের আউশগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে একটি নির্মাণ কাজকে ঘিরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। অভিযোগ, পুলিশের মদতে স্কুলের জমিতে অবৈধ এই নির্মাণ কাজ চালাচ্ছিলেন এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার। বিদ্যালয় কতৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে উল্টো তাদেরই তিন জনকে আটক করে পুলিশ।
এর পরেই উত্তেজনা বাড়ে। ছাত্রছাত্রী-সহ গ্রামবাসীরা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীদের পুলিশ সরাতে গেলে শুরু হয়ে যায় খণ্ডযুদ্ধ। পুলিশ ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপরও লাঠিচার্জ করে।
এরই প্রতিবাদে শনিবার আইসি'র অপসারণের দাবিতে গ্রামবাসীরা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান। তখন পুলিশ তাদের উপর হামলা চালালে গ্রামবাসীরাও পালটা জবাব দেন। থানা ভাঙচুর করা হয়, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। থানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এমনকী পুলিশদের মাটিতে ফেলে পেটানো হয়। অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যান, অনেকে লুকিয়ে পড়েন।
পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তাবাহিনী পাঠিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর সাংবাদিকদের কাছে হামলার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আতঙ্কে কেঁদে ফেলেন থানায় থাকা ডিউটি অফিসার দীপক পাল। দীপক পালের বক্তব্য শুনতে নিচের ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন
আউশগ্রামের এই হামলার ঘটনায় ৬ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। কিন্তু ভারতে এরকম ঘটনা নতুন কিছু নয়, খোদ কলকাতার আলিপুর থানাতেও একই ঘটনা দেখা গিয়েছিল দেড় বছর আগে। সেখানে স্থানীয় জনতার হাতে আক্রান্ত হতে হয়েছিল পুলিশকে। এমনকি থানার টেবিলের নীচে আশ্রয় নিতে হয়েছিল পুলিশ কর্মীদের। গতকালের হামলার পর একই চিত্র দেখাল আউশগ্রামও।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৩৪