somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মনিরপেক্ষতা আসলে ধর্মহীনতাঃ ধোকা দেয়ার জন্য কতগুলো কথামালা

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৪:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্লগের আজকাল ধর্মনিরপক্ষতাবাদী ও বামদের হাঁক ডাক বেশ শোনা যাচ্ছে। এরা সবাই ভাংগা ক্যাসেটের মত বলতে থাকে, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে হলো সব ধর্মের লোকেরা স্বাধীন ভাবে তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করবে, কিন্তু রাষ্ট্রীয় কোন বিষয়ে ধর্মকে জড়ানো হবেনা যাতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার ক্ষুন্ন না হয়। কথাটা শুনতে যতটা শ্রূতিমধুর, বাস্তব অনেক বেশি নির্মম ও অম্লীয় স্বাদযুক্ত। অনেকটা কাজীর গরু, কেতাবে আছে গোয়ালে নেই। কোন মতবাদকে বিচার করতে হলে, তার কাগুজে থিওরীর পাশপাশি বাস্তব প্রয়োগের ফলাফলকেও বিশ্লেষন করতে হয়। আমরা যদি অতীত ও বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী রাষ্ট্রগুলোর কর্মকান্ড বিশ্লেষন করি, তাহলে খুব খারাপ ফলাফলই দেখতে পাই। সোভিয়েত ইউনিয়নের আমলে বেশির ভাগ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয় ধ্বংস করা হয়েছিলো। বিশেষ করে মুসলমানদের ক্ষেত্রে সরকারে দমননীতি ছিলো সবচেয়ে কঠোর ও নির্মম। মানুষের মৌলিক অধিকারকে পদদলিত করে ওরা নাকি স্যেকুলারিজম প্রতিষ্ঠা করেছিলো। পোশাক মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইউরোপের দেশগুলো ধর্মনিরপেক্ষতার নামে হিজাব নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে মুসলিম মেয়েদেরকে ধর্মীয় অনুশাসন থেকে জোর করে দুরে রাখার হীন চেষ্টা চালাচ্ছে। একজন মানুষ তার পোষাক-আশাকে শালীন ভাবে চলবে, নিজেদেরকে ধর্মীয় সংস্কৃতিকে মেনে চলবে-এটা তার মৌলিক অধিকার। কিন্তু না, রাষ্ট্র তাদের বাধ্য করছে খোলামেলা চলতে। এটা ধর্মহীনতার আরেকটি জলন্ত ঊদাহরণ। ভারতের অবস্থা বিশ্লেষন করলে আরো ভয়াবহ চিত্র চোখের সামনে ভেসে উঠে। ধর্মনিরপেক্ষতার সবচেয়ে বড় ধ্বজাধারী রাষ্ট্রটিতে সংখ্যালঘুদের উপর হেন কোন জুলুম নেই, যা করা হচ্ছেনা। ভারতে অনেকগুলো রাষ্ট্রে গরু জবাইয়ের অনুমতি নেই, এমনকি ঈদ-উল-আযহাতেও না। প্রকাশ্যে আজান দেয়া নিষিদ্ধ। এটা কি ধর্মহীনতা নয়? অথচ, বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র না হলেও সংখ্যালঘুরা তাদের পুজা-পার্বনে ঠিকই উৎসব করছে, মাইক বাজাচ্ছে- তেমন কোন সমস্যা হচ্ছেনা। এজন্য আমরা গর্ববোধ করতে পারি। ট্রেনে নিজেরা আগুন জ্বালিয়ে মুসলমানদের দায়ী করে গুজরাটে হাজার হাজার মুসলিম নিধন করা হলো, এমনিক মুসলিম এমপি ও তার পরিবারকে প্রকাশ্যে ধর্ষন, নির্যাতন ও হত্যা করা হলো। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী সরকার ও তার সামরিক-বেসামরিক বাহিনী নির্যাতিত নাগরিকদেরকে নিরাপত্তা প্রদানের পরিবর্তে উল্টো সাম্প্রদায়িক দাংগাবাজ ও খুনীদের সহায়তা করেছে, এখনও করছে। এটা হলো ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের চরিত্র।

আমরা কি চাই এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে নিজেরা বোমা মেরে, বাসে আগুন দিয়ে বলব, এইসব করেছে সুরন্জিত বাবু ও তার সহযোগীরা, এমনকি পুরো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। সুতরাং, সবাই লাঠিসোঠা ও অস্রসহ সুরন্জিত বাবুদের বাড়ী ঘেরাও করব, তার পরিবারের মহিলা সদষ্যদের ধর্ষন করবো, অতঃপর তাকেসহ সবাইকে পুড়িয়ে মারব। নির্বিচারে হামলা চালাবো হিন্দুদের ঘরবাড়ী ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে। কারণ, তাদের অপরাধ তারা সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু নয়। এমনই একটা বর্বর রাষ্ট্র কি আমরা চাই? উত্তর না, আমাদের দেশে আমরা কল্পনাই করতে পারিনা এসব নিষ্ঠুরতা ও অমানবিকতা, এমনটি হোক আমরা চাইওনা। এর চেয়ে আমরা যেমন আছি মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টানসহ সকল ধর্মাবলম্বী মিলে মিশে বসবাস করছি, এমনটি থাকতে চাই। আমাদের বড় পরিচয় হলো আমরা সবাই বাংলাদেশি- এদেশকে আমরা প্রাণের চেয়ে ভালোবাসি।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৫:২৬
১৯টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×