somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ম্যাজিষ্ট্রেটকে ম্যানেজ করে ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় পাশের বাণিজ্য ঘুষের পরিমাণ মাসে প্রায় কোটি টাকা

০৬ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৩:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)'র দক্খিণ জোনে পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটকে ম্যানেজ করে চলছে ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় পাশ করানোর রমরমা বানিজ্য। প্রতি সপ্তাহে ওই ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে বিআরটিএ'র দুস্কৃতিকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালালচক্রের একটি শক্তিশালী বাহিনী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে সপ্তাহে ২৫ লক্ষ টাকা। বিআরটির'র হিসাব মতে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ জোনে আবেদনকারী পরীক্ষার সংখ্যা হয় প্রতিদিন ৩'শ থেকে চারশ। এ সকল পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাশ করে দেয়ার নামে গড়ে ১৫'শ থেকে ২'হাজার টাকা ঘুষ নিলে দৈনিক সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা থেকে ৮ লাখ টাকা। অভিযোগ আছে, ঘুষের টাকা না দিলে পরীক্ষায় পাশ করা যায় না। যেভাবেই হোক দালাল চক্রের মাধ্যমে কৌশলে এ ঘুষের টাকা গ্রহণ করে বিআরটিএ'র কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ম্যাজিস্ট্রেট কে ম্যানেজ করে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিআরটিএ'র উত্তর জোনের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে সপ্তাহে ৪ দিনের হিসেব মতো গ্রহণ করা হয় ১৮ লক্ষ টাকা। মাসে এ ঘুষের পরিমাণ দাড়ায় ৭২ লক্ষ টাকা। এ হিসাব প্রতি মাসে বেশী বই কম না হওয়ার প্রেক্ষিতে প্রায় কোটি টাকা।
বিআরটিএ সূত্র মতে, একজন পেশাদার, অপেশাদার চালককে তার ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)'র মোট ৫টি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হয়। এর আগে চালককে দেয়া হয় তিন মাসের জন্য একটি শিক্ষানবীশ লাইসেন্স। যার দ্বারা পরীক্ষার্থীরা উপযুক্ত শিক্ষালাভালের পর পরীক্ষা দিবে। পরীক্ষাগুলো হল প্রথমত: লিখিত, মৌখিক, জিগজ্যাগ,র‌্যাম ও সর্বশেষ রোড টেস্ট। এসব পরীক্ষায় সাফল্যর সাথে উর্ত্তীন হওয়ার পর আরো নানা পরীক্ষা নিরিক্ষা করার পর একজন চালককে দেয়া হয় মোটরযান চালনার জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে একজন চালকের হাতে ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পেতে ৭ থেকে ৮ মাস সময় লাগে আর টাকা লাগে পেশাদার ১৫'শ থেকে ২'হাজার টাকা এবং অপেশাদার ২'হাজার থেকে ২৫'শ টাকা।
অভিযোগ আছে, ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রতি সপ্তাহে ৪ দিন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় বিআরটিএ'র দণিক্ষা জোন ইকুরিয়ায়। এই পরীক্ষায় একজন পরীক্ষার্থী গাড়ী চালনা সম্পর্কিত বিষয়ে যতই মেধা কিংবা দক্ষতাসম্পন্ন হোক না কেন অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে টাকার জোড় না থাকলে পরীক্ষায় পাশ করতে কি যে কষ্ট আর হয়রানী তা শুধুমাত্র ভুক্তভোগীরাই বুঝতে পারে।পরীক্ষার্থী যেই হোক না কেন দালালচক্রে সদস্যরা নানান কৌশলে পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেবে। টাকা না দিলে তাকে ফেল করানো হবে এটা নিশ্চিত। কেউ কেউ দালালদের এ কথাকে থোরাই উপো করে নিজে নিজে আপ্রাণ চেষ্টা করে পাশ করার জন্য কিন্তু বিধি বাম পরীার নিয়ন্ত্রণ কে বসে আছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। তার হাতেই সব মতা। তিনি যাকে ইচ্ছা পাশ করাবেন আর যাকে ইচ্ছা ফেল করাবেন। বিআরটির'র উত্তর জোনের পরীক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে আছেন ইন্সপেক্টর আব্দুল খালেক ও সহ ইন্সপেক্টর নূর হোসেন। মূলত এই দুজনই বর্তমানে ইকুরিয়ায় ঢাকা উত্তর জোনের পরীক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে আছেন। সহ ইন্সপেক্টর নূর হোসেন দীর্ঘদিন যাবৎ এই ইকুরিয়ায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের ভুমিকায় কাজ করছেন। দালাল চক্রের বাহিনীর মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ইকুরিয়ার আসে পাশে ঘোরাফের করে আবার কেউ কেউ থাকে ধরা ছোয়ার বাইরে গডফাদারের ভূমিকায়। এদের নিয়ন্ত্রকের ভুমিকায় আছেন গ্যাটিস ফায়েক। নতুন বদলী হয়ে আসা ইন্সপেক্টর খালেকের মতো ঢাকা দণি জোন ইকুরিয়ার পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের ভুমিকায় আছেন সহকারী পরিচালক শহীদুল্লাহ। এরা দুজনই নির্ভর করে তাদের সহকারীদের উপর। তারা যা বলে সেটাই যেন মেনে নিতে বাধ্য হয় তারা। কারণ এরা দু'জন দীর্ঘদিন যাবৎ এই শাখায় নানান নিয়ম-অনিয়মের সাথে জড়িত। তারা সহ আরো বেশ কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পর গত ১৭ জুলাই রেল ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ওই কার্যালয়ে আকস্মিক পরিদর্শন করে হাতেনাতে মোটরযান পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলমকে ক্লোজ ও শেখ মো. ইমরানকে কারন দর্শানোর জন্য বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। এছাড়া জাহাঙ্গীর নামে এক দালালকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। সে সময় তিনি বিআরটিএ'র সেবার মান নিয়ে চরমভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মুলত মোটরযান পরিদর্শক শেখ মো. ইমরান ও নূর হোসেনই ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় পাশ ফেলের রমরমা বাণিজ্যের সাথে জড়িত।

লেখক : এফ এম আনসারী
ডিজিটাল সময়।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×