somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এইতো সেদিন! (ছেলেবেলা)

২৪ শে জুন, ২০০৮ বিকাল ৪:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১. ময়ুর পালক
এইতো সেদিন! একটা ময়ুর পালক দিয়েছিল তানিয়া। বইয়ের মধ্যে রেখেদিলে একদিন নাকি সেটার বাচ্চা হবে! তারপর কেটে গেল অনেক দিন। বাচ্চা হলনা। তখন সে বলেছিল, শুধু মা দিয়ে তো হবে না। বাবাও লাগবে। অনেক খুজে পেতে একটা বাবা পালক জোগাড় করা হল। আবারো কেটে গেল অনেকগুলো দিন! তবুও বাচ্চা হল না। কেউ কেউ বলল, ময়ুর পালকটা বাজা। ‘বাজা’ মানে জানিনা। তানিয়া বলল, দেখিতো কোথায় রেখেছিস?
বই খুলে দেখালাম!
-এএ মা!! এ তো ধর্ম বই।
-তাতে কি?
-এইসব আরবী লেখার মধ্যে শুয়ে ময়ুর পালকরা বাচ্চা বানাবে কি করে? !!!
সমস্যাটা কোথায় বুঝিনা! তবে এরপর তাদের ঠাই হয় আমার বাংলা বইএ। যেখানে ষড় ঋতুর বর্ণনা দিতে দিতে থেমে গেছে বসন্তে! তারপর আবারো কাটে অনেক অনেক দিন...

ময়ুর পালকদের বাচ্চা হয়েছিল কিনা জানিনা। বসন্ত নয়, তাদের ঋতুতো বর্ষা। তবে তানিয়ার বিয়ে হয় একদিন। একদিন দুএকটা বাচ্চাও হয়ে যায় তার!

ওদের ঘরে মনে হয় কোন আরবী লেখা টানানো নেই...

২. ভোকাট্টা
বাড়িটা ছিল আমাদের একতলা। ভোকাট্টা ঘুড়ি গুলো তাই সব সময় আশে পাশের দু-তিন তলা বাড়ির ছাদে গিয়ে পড়ত। অথবা আটকতো কোন নারিকেল গাছে।

এইতো সেদিন! একটা ঘুড়ি ভুল করে আটকিয়েছিল আমাদের আন্টিনার বাশে। যেন একটা সত্যিকারের ঈদ ছিল সেটা!! সুতা ধরে টেনে নামাতে নামাতে সেই বিচ্ছিরী এন্টিনাটা ছিড়ে ফেলল ঘুড়িটাকে। সেদিন হাতে জড়ানো সুতার একাংশ ভিজে গিয়েছিল জলে। অশ্রু!

জানেন? আজ হুঠ করে আবার একটা ঘুড়ি পড়েছে আমাদের ছাদে! এই ঢাকা শহরে!! এইতো এখন পড়ে আছে পড়ার টেবিলে। কোথা থেকে উড়ে এসেছে কে জানে? কিন্তু কই? কিছুই তো মনে হচ্ছেনা! আসলে আমার ছেলেবেলাটাও হয়তো ভোকাট্টা হয়ে চলে গেছে কোথাও। এই ঘুড়িটার মতই...

৩. তৃতীয় চিঠি
এইতো সেদিন! আরবী শেখানোর জন্য এক হুজুর রাখল বাবা। সপ্তাহে ছয়দিন চলত দুজনের আপ্রান ব্যর্থ চেষ্টা! শেখানোর। আর শেখার। কিছুই শিখতে পারিনি সে সময়। তবে হুজুরের একটা কথা মনে আছে এখনো। চিঠির কথা!

মানুষকে নাকি সারা জীবনে চারটা চিঠি পাঠানো হয়। যেগুলো তাকে কিছু একটা মনে করিয়ে দেওয়ার কথা!! প্রথম চিঠিটা আসে যখন তার প্রতথম দাঁত ওঠে। পরের টা, যখন তার গোফ ওঠে। তৃতীয় চিঠি টা আসে যখন তার প্রথম চুল পাকে। আর চতুর্থ টা, যখন আবার দাত পড়ে যায়! হুজুরকে বলেছিলাম, মেয়েদের তো গোফ ওঠেনা তাদের কাছে কি চিঠি একটা কম আসে? সে বলেছিল, তাদের কাছেও চিঠি আসে। তাদের মত করে।

আজ সকালে হুঠ করে তৃতীয় চিঠিটা পেয়ে গেলাম!! বেসিনের আয়নার সামনে ঝুকে দাড়িয়েছি। হঠাৎ দেখলাম একটা পাকাচুল ব্রৃদ্ধ! ক্ষনিকের জন্য। তারপর কালো হয়ে গেল সব চুল। শুধু একটা বাদে। এটাই বোধ হয় সেই চিঠি।

বার্ধক্যের যে বীজ বুকে নিয়ে জন্ম হয়েছিল অনেক অনেক দিন আগে। আজ সেটা অঙ্কুরিত হল...
৭৩টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×