somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্ল্যাক হোল-১( অ্যাস্ট্রোফিজিক্স-অসম্ভব অজানার মুখোমুখি)

১৩ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গ্যাস এবং পাথুরে কণার ধ্বংসাবশেষ যা একটি ডিস্ক তৈরী করে ধীরে ধীরে ব্ল্যাক হোলে হারিয়ে যাচ্ছে বিংশ শতাব্দী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষের শতক।এই ১০০ বছরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে তা বলে শেষ করা যাবে না।এমন অনেক আবিষ্কার হয়েছে যা আগের শতাব্দিতে মানুষ কল্পনাও করতে পারত না।নতুন নতুন যন্ত্রের আবিষ্কারের মাধ্যমে অ্যাস্ট্রোফিজিক্স বা জ্যোর্তিপদার্থবিজ্ঞানেও এসেছে অনেক পরিবর্তন।বিংশ শতাব্দীর অন্যতম বিস্ময়কর আবিষ্কার ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহ্বর।
যারা বিজ্ঞানের ছাত্র তাদের কাছে ব্ল্যাক হোল নতুন কোন বিষয় নয়।তার পরও এই বিষয়ে জানা অজানা অনেক তথ্য এবং কিছু ছবি নিয়ে ধারাবাহিক এই লেখা।
ব্ল্যাক হোল বলতে সাধারনভাবে এমন এক ধরনের নক্ষত্রকে বোঝায় যার মহাকর্ষীয় বল এতটাই তীব্র যে মহাবিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির আলো পর্যন্ত এর মধ্য থেকে বের হতে পারে না।

ব্ল্যাক হোলের ধারণা মানুষের মনে সৃষ্টি হয় অনেক বছর আগে।কল্পকাহিনী কিংবা পৌরাণিক কাহিনীতে যেমন অনেক অদ্ভুত এবং ভয়ঙ্কর জীব বা বস্তু পাওয়া যায় তেমনি বাস্তবেও অনেক অদ্ভুত এবং ভয় সৃষ্টিকারী বস্তুর দেখা মিলে।ব্ল্যাক হোল হল সেই রকম একটি বস্তু।ভয়ঙ্কর কিন্তু আকর্ষণীয়।ব্ল্যাক হোল এমন এক বস্তু যা থেকে আলোকরশ্মি পর্যন্ত বের হতে পারে না এবং এর ভিতরে পদার্থবিজ্ঞানের কোন সুত্র ও খাটে না।
বিখ্যাত পদার্থবিদ কিপ থর্নের ভাষায়,
“ইউনিকর্ন(এক শিং ওয়ালা ঘোড়ার মত কাল্পনিক প্রাণী) থেকে শুরু করে গার্গয়েল হয়ে হাইড্রোজেন বোমা যাই বলুন না কেন মানুষের কল্পনায় তৈরী সবচেয়ে অসাধারণ সৃষ্টি হল ব্ল্যাক হোল।মহাশূন্যের মাঝে এমন একটা গর্ত যাতে যে কোন কিছু ঢুকতে পারে কিন্তু বের হতে পারে না,এমনকি আলোক রশ্মি পর্যন্ত নয়।এমন একটি গর্ত যা স্থান ও কালকে একীভূত(space-time wraping) করে।”
অনেকের কাছে এইরকম মহাজাগতিক দানবীয় বস্তুর ধারণা কল্পবিজ্ঞানের কাহিনী মনে হতে পারে কিন্তু এটাই হল বাস্তবতা।থর্নের মতে “পদার্থ বিজ্ঞানের সাধারন সুত্রের সাহায্যেই দেখানো সম্ভব যে ব্ল্যাক হোল আছে এবং আমাদের গ্যালাক্সিতেই কয়েক মিলিয়ন(১ মিলিয়ন=১০ লক্ষ) ব্ল্যাক হোল থাকতে পারে। ”




যদিও আমাদের গ্যলাক্সিতে অসংখ্য ব্ল্যাক হোল থাকে তারপরও এদের পর্যবেক্ষণ করা কিংবা এদের অবস্থানসম্পর্কে জানা প্রায় অসম্ভব।কারন এরা আমাদের চোখে দেখা সম্ভব নয়।অন্ধকার তাদের আগলে রাখে(যেহেতু আলো বের হতে পারে না) তাই জোতির্বিদদের এদের খুঁজে পেতে অনেক কষ্ট হয়।এই কারনেই ব্ল্যাক হোল সবার কাছে অদ্ভুত একটা বস্তু এবং একই কারনে এটা অসম্ভব রকমের আকর্ষণীয়।যেহেতু আলোও ব্ল্যাক হোল থেকে বের হতে পারে না এবং এটা দেখা ও যায় না কাজেই এর থেকে একটা বিপদের সম্ভাবনা সব সময় থেকেই যায়।সবচেয়ে বড় কথা মানুষ যতই চেষ্টা করুক না কেন যতই তাত্ত্বিক ভাবে ব্যাখ্যা করার চেস্টা করুক না যে ব্ল্যাক হোলের ভিতরে কি আছে বা হচ্ছে এটা আমাদের অজানাই রয়ে যাবে।এ সম্পর্কে লন্ডনের কিংস কলেজের জন টেইলর বলেছেন,
“মানুষ যখন থেকে চিন্তা করতে শিখেছে তখন থেকে তারা যে বস্তু সম্পর্কে জানতে পারবে না তার পূজা করে আসছে...সহস্রাব্দ পার হয়ে গেছে...আমরা আমাদের চারপাশ সম্পর্কে আরও ভালভাবে জানতে পারছি...তারপরও আমরা আজ এমন একতা যায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি যেখানে কোন জিনিস টি আমরা কখনোই জানতে পারব না বলে দেয়া যায়...যতক্ষন না আমরা আমাদের এই অবস্থায় আছি...অসম্ভভ অজানার(ultimate unknowable) একটি বিষয় হল ব্ল্যাক হোল।আমরা যতই চেষ্টা করি না কেন আমরা কিছুতেই এটা(ব্ল্যাক হোল) থেকে বের হতে পারব না যদি এর ভিতরে ঢুকি।আবার আমরা যদি এর বাইরে থাকি তাহলে এর ভিতর কি হচ্ছে তা জানতে পারব না ”

পরবর্তি পর্বে থাকছে “কেন আমাদের ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে জানা দরকার?”

ডন নার্ডোর “ব্ল্যাক হোল” বইয়ের ছায়া অবলম্বনে...

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ২:২৬
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×