আমরা সাধারণত জানি কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে দায়ের করা যায় লিখিতভাবে। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধের বিষয়ে আপনি থানায়ও অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা ২০০৭ (সংশোধনী) ৪ বিধি তে বলা হয়েছে , দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধের বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা যাবে।
এখন প্রশ্ন হলো দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ কোনগুলো?
দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধের মধ্যে রয়েছে:
১. সরকারি দায়িত্ব পালনের সময় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষ বা উপঢৌকন নেওয়া।
২. বাংলাদেশের যে কোনো নাগরিক যদি বেআইনিভাবে নিজ নামে কিংবা বেনামে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন।
৩. ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী, সরকারি কর্মচারী এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মরত কর্মচারি যদি সরকারি অর্থ বা সম্পত্তি আত্মসাৎ কিংবা ক্ষতি সাধন করেন।
৪. সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যদি অনুমতি ছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করেন।
৫. সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি কোনো অপরাধীকে শাস্তি থেকে রক্ষার চেষ্টা করেন।
৬. দুর্নীতি ও ঘুষ থেকে উদ্ভূত অর্থ পাচারসংক্রান্ত অপরাধ।
৭. ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী, সরকারি কর্মচারী এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীর প্রতারণা জাল-জালিয়াতি ইত্যাদি কাজ।
থানায় অভিযোগ কিভাবে দায়ের করতে হয়ঃ
অন্যান্য মামলার অভিযোগের মতো লিখিত এজাহার আকারে এই অভিযোগ দায়ের করা যায়।
অভিযোগ পাওয়ার পর থানায় দায়িত্বঃ
দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা ২০০৭ (সংশোধনী) ৪ বিধি তে বলা হয়েছে , থানা এমন অভিযোগ পেলে তা সাধারণ ডায়েরী (জি.ডি) হিসাবে এন্ট্রি করে ব্যব্স্থা গ্রহণের জন্য তা দুদকের নিকটস্থ সমন্বিত জেলা অফিসে প্রেরণ করবে দুই কর্ম দিবসের মধ্যে।
অভিযোগ যদি স্বয়ং দুদকের কর্মকর্তা/কর্মচারীর বিরুদ্ধে হয় তখন করণীয়ঃ
থানা স্বয়ং দুদকের কর্মকর্তা/কর্মচারীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পেলে তা সাধারণ ডায়েরী (জি.ডি) হিসাবে এন্ট্রি করে ব্যব্স্থা গ্রহণের জন্য তা দুদকের প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করতে হবে।
অতএব, কোন দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তা থানায়ও দায়ের করা যায়। আইন না জানার কারণে এবং চর্চা না থাকার কারণে এমনটি করতে দেখা যায় না।
-মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
অ্যাডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
০১৭৩৩৫৯৪২৭০ ( কল করার পূর্বে হোয়াটস্অ্যাপে ম্যাসেজ দিন)
লেখক- আইন বিষয়ক উপন্যাস 'নিরু" এবং 'অসমাপ্ত জবানবন্দী', মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস 'মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ' এবং 'একাত্তরের অবুঝ বালক' ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৯