আপনি কোন একটা সম্পত্তি বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়ার পর কিংবা আপনি কারো গ্যারান্টার হওয়ার প্রেক্ষিতে দেখছেন আপনার সম্পত্তিটি নিলামের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে পত্রিকায়। অথচ আপনি তেমন কিছুিই হয়তো জানেন না। এক্ষেত্রে মূল্যবান সম্পত্তি রক্ষায় আপনার করণীয় কী?
অনেকে এমন নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেখে গুরুত্ব দেন না। আবার ব্যাংকও বিষয়টি বুঝিয়ে বলা না। যার ফলে ঘটে বিপত্তি। যেমন, আপনার কাছ থেকে ব্যাংক ঋণ বাবদ পাবে ২০ লক্ষ টাকা। অপরদিকে আপনার বন্ধক রাখা সম্পত্তির মূল্য ১ কোটি টাকা। কিন্তু আপনার এই মূল্যবান সম্পত্তিটি আপনার অবহেলার কারণে ১০ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়ে গেলেও করণীয় তেমন কিছু থাকে না। ভয়ংকর বিষয় হলো অবশিষ্ট দশ লাখ টাকার জন্য ব্যাংক আপনি এবং আপনার জিম্মাদারের বিরুদ্ধে মামলণা করতে পারবে। আর সবসময় বন্ধকী সম্পত্তি কম দামেই বিক্রি হয় অজ্ঞাত কারণে! এমনকি আপনার বসত ভিটাও নিলামে উঠে যেতে পারে।
আবার ব্যাংক মামলা না করেই সম্পত্তি নিলামে উঠানোর আইনগত অধিকার রয়েছে। আইনে বলা হয়েছে আগে নিলাম দিয়ে ঋণ সমন্বয় করার চেষ্ঠা করো তারপর মামলা। মানে ঋণের বন্ধকী জামানত নিলাম তোলা ব্যাতিত মামলা করা যাবে না। যদি নিলামে কেউ না কিনে তখল মামলা করা যাবে এবং মামলা করার পর রায় হলে আবার নিলামে উঠেবে।
মূল্যবান সম্পত্তি কম দামে নিলামে বিক্রি হয়ে অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে কিছু কিছু অসাধু চক্র এমন সুযোগ নিয়ে কম দামে সম্পত্তিটি হাতিয়ে নেয়। বািঋণের টাকা পরিশোধের ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও যেক্ষেত্রে ব্যাংক আপনাকে সহযোগিতা করছে না বা সুযোগ দিচ্ছে না সেক্ষেত্রে আপনার করণীয় কী হতে পারে?
ব্যাংক মামলা করার আগেই সম্পত্তি নিলামের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিলে করণীয়
প্রথমে এমন বিজ্ঞপ্তি দেখলে ব্যাংকের সহিত যোগাযোগ করে পুনঃতফসিল করার জন্য আবেদন করুন। বা যোগাযোগ করে ব্যাংকের মোটিভ জানার চেষ্টা করুন। ব্যাংক সহযোগিতা না করলে হাইকোর্টে রীট দায়ের করে ক্ষেত্রভেদে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব। যেমন, বন্ধকী সম্পত্তিটি যদি আপনার বসত বাড়ী হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনার মৌলিক অধিকার সুরক্ষায় রীট চলতে পারে। আবার আপনি যদি টাকা প্রদানে আগ্রহী হন তাতে মহামান্য হাইকোর্ট আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশনা দিতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রীট দায়েরের পূর্বে বা শুনানীর পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে (১/২ মাস) ২০/৩০/৪০% টাকা জমা দিলে নিলাম স্থগিত করতে পারেন মহামান্য হাইকোর্ট। সেজন্য এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি দেখার সাথে সাথে আইনজীবীর শরণাপন্ন হওয়াই উত্তম প্রন্থা।
- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
অ্যাডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
০১৭৩৩৫৯৪২৭০ ( কল করার পূর্বে হোয়াটস্অ্যাপে ম্যাসেজ দিন)
লেখক- আইন বিষয়ক উপন্যাস 'নিরু" এবং 'অসমাপ্ত জবানবন্দী', মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস 'মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ' এবং 'একাত্তরের অবুঝ বালক' ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৫৬