বাম কি ডান, যে কেউ স্বীকার করবেন, মানব বন্ধনের চেয়ে নিরিহ প্রতিবাদের ভাষা আর কিছু হতে পারেনা। কিন্তু দেশের কোথাও হাতে হাত ধরে রাস্তার পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে নিরব প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করতে দেয়া হয়নি বিরোধী দলকে। যেন, প্রতিবাদ শব্দটিকে বাংলাদেশের মানুষের মন থেকে মুছে দিতে হবে, বরং গনতন্ত্র নামক অপাংক্তেয় শব্দটির কারণেই যেন বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল হতে পারছেনা।
শেখ মুজিবের শাসনকাল দেখিনি। আজ একটু একটু করে বুঝতে পারি, কেন মাত্র তিন বছরে তিনি হিরো থেকে জিরোতে পরিণত হয়েছিলেন। জলদ গম্ভীর কণ্ঠে দৃপ্ত প্রতিবাদ করে করে যিনি নেতায় পরিণত হয়েছিলেন, ক্ষমতায় আসার সাথে সাথে সেই তিনিই চেপে ধরেছিলেন প্রতিবাদের কণ্ঠ। প্রতিবাদ, বিক্ষোভ- এ যেন এক অসহ্য বিষ যন্ত্রণা, শল্য চিকিৎসা করে যতক্ষণ না তা দেশ থেকে অপসারিত করা যায়। এর ফলাফল স্বরূপ বাংলাদেশের বুকে নেমে এসছিল 'বা ক শা ল'।
রক্তের সাথে মিশে থাকা দোষ কি আর মুছে ফেলা যায়? হোক ডিজিটাল কি এনালগ, সে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায়, আবারও ধেয়ে আসছে বাকশাল। নিরিহ প্রতিবাদও আজ তাদের নিকট এক অসহ্য যন্ত্রণা।
শেখ মুজিবের ঘাড়ে সওয়ার হয়েছিল সমাজতন্ত্র। যারা রাশিয়ার বিশাল ভূখন্ড থেকে প্রতিবাদ বিক্ষোভ কে মুছে দিয়েছিল সমাজতন্ত্রের সেই স্বর্ণ যুগে। 'কিসের প্রতিবাদ, তুমিই তো রাষ্ট্রের মালিক। মালিক কি করে প্রতিবাদ করে?'- এ অদ্ভুত এক ট্যাবলেট গিলিয়ে লৌহশাসন গেড়ে বসেছিল বিশাল সোভিয়েত ইউনিয়নে। তাদের মানসপুত্ররা শেখ মুজিবকেও বাকশাল গিলিয়েছিল, আজকের আওয়ামীলীগকেও আবার টেনে নিয়ে যাচ্ছে সেই বাকশালের দিকে।
কিন্তু . . .
কিন্তু. . . এদেশের মানুষ সামজতন্ত্রকে যেমন চিরবিদায় দিয়েছে, বাকশালকেও তেমনি চির বিদায় দেবে এবার। সমুদ্রের ঝড় ঝঞ্ঝা মোকাবেলা করে যারা জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যায়, প্রতিবাদের ভাষা কেড়ে নেবার অপচেষ্টাকে তারা বেশিদিন বরদাশত করতে প্রস্তুত নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১০ রাত ১১:১৬