somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসার একটি বিশেষ দিনে....

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভোর ৫.০০ ঘটিকা...
আজ আমার ভোর হয়েছিল কাক ডাকা ভোরেরও আগে। রোজ যেখানে সূর্যি মামা তার অত্যাশ্চর্য প্রখর কিরণ দিয়েও আমার ঘুম ভাংাতে পারে না আজ সেখানে চুপিসারে আমার ঘুম দু'চোখের পারদ ত্যাগ করলো আবছা আলোর ভোরে। মুখে কিছু পুরে না পুরেই বেরিয়ে পরলাম।
আজকে দিনের ফর্দটা আমার বেশ লম্বা। পুরো এক বছর ধরে এই ফর্দটা করেছি। বার বার ঘষে মেজে ফর্দের কোণাতে হালকা হয়তো ছিড়েও গেছে।।

ঘণ্টা দুই পর......

আমি দাড়িয়ে আছি বেইলী রোডের মাথায়। আমার আশা ছিল তোমার জন্য খুব খুঁজে ভেবে একটা ফুলের তোড়া নেব। শহরের সেরা গোলাপটা হবে আমার তরফ থেকে শুধুমাত্র তোমার জন্য। তোমার লাল রংের শাড়ির সাথে আমার টকটকে লাল গোলাপ!!!
কিন্তু সব আশায় গুড়ে-বালি। আজ বোধহয় শহরের কোন শড়কেও এত ভীড় নেই যতটা এই বেইলী রোডের প্রান্তরে রয়েছে। শহরের সকল ভালোবাসার সাপ্লাই বোধহয় এখান থেকেই হয়!!
যাহোক খুব খুঁজে-ফিরে রফিক মামার দোকানটার এক কোণাতে জায়গা করে নিলাম। রফিক মামার কথা মনে আছে তোমার?
আমাদের সম্পর্কের প্রতিটা অন্তিম মুহূর্তে তো তার দোকানের সাজানো ফুলের গোছা দিয়েই তোমাকে আবার নিজের করে ফিরে পেয়েছি।।
তার হাতে কি যেন এক যাদু আছে; তার হাতের সাজানো ফুলগুলো পেয়ে তোমার সকল রাগ কোথায় যেন উবে যায়। রাগের বদলে তখন তোমার মুখের কোণে জমতে শুরু করে আলতো হাসির আস্তরণ।।।

আধা ঘণ্টা পর....

বেইলী রোডের শেষ প্রান্তের গিফট শপটায় দাড়িয়ে আমি। সত্যি তোমায় ভালোবাসি বলার পর বোধহয় এই প্রথম কোন কাজ এত কঠিন লাগছে।
নাহ।। সত্যিই বেশ কঠিন একটা কাজ....

বেলা ১:২৫ ঘটিকা...

আমি বসে আছি রিকশায়। গন্তব্য ধানমন্ডি লেক। এখনো অবশ্য একা। হাতে একগোছা ফুল। বেশ সাজানো। রফিক মামা'স স্পেশাল বলে কথা।।
সাথে একটা বিশেষ গোলাপ। রফিক মামা মুচকি হেসে শত ব্যস্ততার মাঝেও আমার জন্য সেরা গোলাপটাই রেখেছে। এবং সবার অলক্ষ্যে পকেটে তোমায় দেবার জন্য আমার ছোট্ট কিন্তু বিশেষ এক উপহার।।।

তোমার জন্য ফুল কিনতে বেশ সময় চলে গেল। বেশ কষ্টও।
কিন্তু এর বিনিময়ে তোমার মুখের মিস্টি হাসির কথা অনুভব করে আমার হৃদস্পন্দন বেশ জোরালো হয়ে উঠলো। গোলাপটির দিকে তাকিয়ে তোমায় দেখার আকুলতা আমার আরো বেড়ে গেলো।। দেহের কোথাও হরমোনের প্রভাব বেড়ে গেলো আমি স্পষ্ট টের পেলাম।।

আচ্ছা, রিকশাটায় বোধহয় কোন সমস্যা আছে!! দ্রুত চলছেনা কেন!!!

বেলা ২:৪০......

আমি বসে আমি লেকের ক্যান্টিনের সামনের টেবিলটায়। আমার সত্যি ভাগ্য ভালো যে খালি পেয়েছি। কতক্ষণ খালি রাখতে পারবো তা নিয়ে আশনকায় আছি। আশে পাশে যে পরিমাণ মানুষ।
সবাই শান্তিতে ভালোবাসতে একটু বসার জায়গার জন্য যে কোন বিনিময় দিতেও প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে।।।

বিকেল ৪:৩০ ঘটকা.....

আমি বসে আছি। আগের জায়গাটা হাতছাড়া হয়ে গেছে অনেক আগেই।
এখন বসে আছি ক্যান্টিনের বেশ খানিকটা দূরে একটা বেঞ্চের উপর। অবশ্য এখান থেকেও ক্যান্টিনটা স্পষ্ট দেখা যায়। যেখানে তোমার আশার কথা।।
আমার কোলের উপর ফুলের গোছা। হাতে লাল গোলাপখানা।

পড়ন্ত বিকেল....

ঠিক কয়টা বাজছে দেখতে ইচ্ছে করছে না। পড়ন্ত বিকেলের চুইয়ে পড়া রোদ রেইন্ট্রির ফোকড় দিয়ে আমার মুখের উপড় পড়ছে।।

আমার সতেজ গোলাপটা কেমন যেন চুপসে যাচ্ছে। নিজেকে খুব অসহায় লাগছে। তুমি যখন আসবে তখন এই চুপসানো গোলাপটা কি করে দেবো এই ভেবে!!!

এখন অবশ্য আমি ঠিক বসে নেই। দাড়িয়ে আছি। নিজেকে কেমন যেন অপরাধী মনে হচ্ছিলো। আমার জন্য হয়তো দু'জন মানুষ তাদের ভালোবাসা বাটতে পারছেনা। তাই নিজ থেকে দাড়িয়ে পড়েছি।
আজ ভালোবাসার দিন। সবাই ভালোবাসুক।।।

ঠিক কয়টা বাজে বুঝতে পারছিনা। তবে সূর্য রক্তিম আভা ছড়াতে ছড়াতে অস্ত যাচ্ছে। আমি ঠায় দাড়িয়ে আছি। পাছে তুমি এসে ফিরে যাও এই ভেবে.....
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×