somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তিরি!

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

থিকথিকে গাঢ় ঘন তরল। তিরি তাকিয়ে আছে। আগুনের ফুলকির মত। আকর্ষণীয় কিন্তু নিষিদ্ধ। তিরি মুখ নামিয়ে আনলো। ভারী ঠোঁটে লোমহীন বুকে একটা আলতো চুমু খেলো। স্পন্দনহীন বুকে তরলের মিশ্রণে কবিতা হল। তিরির ঠোঁটের চমৎকার কবিতা!

তিরি আধ খাওয়া সিগারেট হাতে নিল। প্রায় নিভে যাওয়া সিগারেটে একটানে ফুলকির মত আগুন লেগে গেল। তিরি ব্যাগ থেকে পেন আর ডায়েরি বের করলো। এলোমেলো চুলে হালকা ঝুকে লেখা শুরু করলো।
"পুরুষের লোমহীন বুকের তীব্র চাহনি, নারীর ওষ্ঠাগত অহেতুকী প্রেম... "

তিরি লিখে যাচ্ছে, ছন্নছাড়া , আবেগী ষোড়শী কিশোরীর মতো। সুদর্শন প্রেমিক পুরুষ, বাউন্ডুলে নগ্ন প্রেমিকা, নিষিদ্ধ প্রেম! পৃথিবীর আকর্ষণীয় দৃশ্য গুলির একটি হবার কথা! শুধু প্রেমিকের গলার ফিনকি লোহিত তরল সমস্ত দৃশ্যপট বদলে ফেলেছে! ঘোলাটে , নিষ্ঠুর, ভয়ানক তবুও আকর্ষণীয়!




-----------------------------------------------
প্রায় মাসখানেক হলো তিরি লিখছে না। বিষন্নতা আক্রান্ত। তিরি আয়নায় তাকালো। চোখে মুখে রাজ্যের ক্লান্তি। তবু প্রায় রাত অবধি জেগে ওয়ান্না বী সুন্দরীর কিছু ছবি নামালো ফেসবুক থেকে। সবথেকে সহজলভ্য। নতুন লেখার প্রস্তুতি।

কিছু নতুন সাইবার ক্যাফে, নতুন একটা প্রোফাইল, আর একজন র্সুদর্শন পুরুষ যে নিষিদ্ধ সম্পর্কে আগ্রহী।
ভাবতেই তিরির সমস্ত ক্লান্তি চলে গেল। বড় বড় চোখগুলোয় চকচকে হাসি। তিরি আবার আয়নায় তাকালো। পঁচিশ বছরের যুবতীর চোখে মুখে কিশোরীর বাউন্ডুলেপনা। তিরি খেলাটা সাজিয়ে নিলো। আবার, আরো একবার। একি আবেগ, একি অনুভূতি, একি ছলনা! প্রথমে পাত্তা না দেয়া, তারপর মুগ্ধ হওয়া, তারপর প্রেম প্রেম আবেগ! এবং তারপর খুব সচেতনভাবে একটা শরীরবৃত্তীয় অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ। ব্যস। কুপোকাত! ভাব , ভালবাসা, স্ত্রী কিংবা প্রেমিকা সব তুচ্ছ , তাচ্ছিল্য করে ছুটে আসা একজন আকর্ষণীয় সুদর্শন পুরুষ, এক আদিম বাসনায় আক্রান্ত, নিষিদ্ধ চ্যালেঞ্জ , ক্রেজ এবং একজন সুন্দরী নিষ্ঠুর যুবতী!
তিরি হেসে উঠলো। পঁচিশ বছরের সুন্দরী যুবতীর জন্য যথেষ্ঠ কুৎসিত হাসি।

----------------------------------------
তিরি অপেক্ষা করছে। ছিমছাম, নিরিবিলি রেস্তোরাঁয়। নীল শাড়ি, নীল টিপ, গাঢ় কাজল। যে কোন পুরুষের বুকে ধক করে ওঠার মত আকর্ষণীয়। তিরি ঘড়ি দেখছে, ছয়টা বাজছে। আর কিছুক্ষণের মধ্যে রয়ের চলে আসার কথা। ওকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে ফোন রেখে আসতে বলেছে তিরি। প্রতিবার তাই হয়, তবু একটু চিন্তিত বোধ করলো তিরি। একটা নিখুঁত সমাপ্তি একটা পারফেক্ট গল্পের জন্য ভীষণ জরুরী। রয় রেস্তোরাঁয় ঢুকলো। নীল সার্ট, কালো জিন্স, এবং হাতে টকটকে গোলাপ। তিরি মনে মনে এক চিলতে হেঁসে নিল। রয় রেস্তোরাঁয় ঢুকে বোকার মত নিহিকাকে খুঁজছে। আবছা আলোতে লাল শাড়ি পড়া কোন মেয়ে! এদিক , ওদিক খুঁজে কোনায় একটা টেবিল দেখে বসে পড়লো। তিরি আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলো। তারপর উঠে রয়ের টেবিলের দিকে গেল।
- রয়?
- জী। আপনি?
- নিহিকা।
- কিন্তু নিহিকা তো...
- কেন আমি সুন্দরী নই? আর লাল শাড়ি কি বাধ্যতামূলক?
- যথেষ্ট, কিন্তু!
তিরি চেয়ার টেনে বসে পড়লো। রয়ের পাশ ঘেঁষে। কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল আসল আমিকে দেখার পর যদি তোমার আকর্ষণ এতটুকুন কমে গিয়ে থাকে তবে এক্ষুনি তুমি চলে যেতে পারো রয়। তবে এটা জেনো, ছবিটা মিথ্যা হতে পারে, তবে পুরো আমিটা জলজ্যান্ত।

রয় তিরির দিকে ঝুঁকে বলল, নিহিকার ছবির প্রেমে পড়েছিলাম সত্যি, কিন্তু এই রহস্যে ঘেরা নিহিকা ছবির থেকেও বেশী আকর্ষণীয়। চলে যাবার প্রশ্ন আসেনা। আমি আছি নিহিকা।
রয়ের স্বর কেপে গেল। তিরি হাসছে। এই স্বরটা তিরি চেনে। খুব ভালো করে চেনে। দুশো সাত নাম্বার হাড়ের উৎপত্তিগত স্বর।
-------------------------------------


একটা নির্জন, পরিত্যক্ত ঘর। আবছা অন্ধকার। রয় ঘুমাচ্ছে। সুখ মেশানো ক্লান্তির ঘুম। তিরি রয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। পিলপিলে ঠোঁট। চিবুকে অগোছালো দাড়ি। গলার দিকে চোখ পড়তেই তিরির গা গুলিয়ে গেল। কিছুক্ষণ আগেও তিরি এই মানুষটার প্রতি তীব্র আকর্ষণ বোধ করছিল! তিরি ব্যাগ থেকে ধারালো ছুরি বের করলো। গলার উচু হয়ে থাকা অংশে বসিয়ে দিল, তীক্ষ্ণ স্পর্শ।


আবার, থিকথিকে গাঢ় ঘন তরল। তিরি তাকিয়ে আছে । আগুনের ফুলকির মত! আকর্ষণীয় কিন্তু নিষিদ্ধ! তিরি মুখ নামিয়ে আনলো । ভারী ঠোঁটে চিবুকের অগোছালো দাড়িতে একটা আলতো চুমু খেলো। শক্ত চিবুকে নরম কবিতা। তিরির ঠোঁটের চমৎকার কবিতা!



উৎসর্গঃ পৃথিবীর সবথেকে আকর্ষণীয় ছেলেটিকে, যার প্রেমে ভয়ানক ভাবে পড়ে আছি। যাকে দেখে কাউকে খুন না করেও দিব্যি একের পর গল্প, কবিতা লিখে ফেলা যায়। টিং। :)
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪০
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×