somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যেটা ছিল না, ছিল না, সেটা না পাওয়ায় থাক। সব পেলে নষ্ট জীবন.......

২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-শ্রুতি, তুমি কি বের হতে পারবা এখন?

-কি! মাথা খারাপ হইছে তোমার!!!

-মাথা ঠিক ছিল কবে? বিয়েতে মত দেওয়াটা কি খুবই জরুরী?

-দ্যাখো, ক্লাসের নিয়ম ভাঙা মেয়েটি কখনোই ছিলাম না আমি। তুমি জানো এটা।

-তাহলে ভালোবেসেছিলে কেন?

-তুমি শিওর, যে আমিই তোমাকে ভালোবেসেছিলাম!

-প্লিজ, পুরানো কথা রাখো। সারাজীবনের ব্যাপার এটা। তোমার সুখ তোমার বাবা-মায়ের উপর ডিপেন্ড করে না। করে তোমার উপর।

-তো! তুমি বলতে চাচ্ছ তোমার মত ভ্যাগাবন্ড আমাকে সুখী করবে!!!

-হুম, করব কথা দিচ্ছি।

-কোন যোগ্যতায়?

-অভিমান করে থাকার সময় নেয় এখন, প্লিজ। তোমার বাড়ির সামনে সাদা মাইক্রোবাস রাখা আছে। তুমি আসো। দয়া করো একটু। তুমি ছাড়া আমার আমিত্ব অসহায়। হাতজোড় করছি।

-বাজে কথা রাখো। বাড়ি ভর্তি লোকজন। বের হওয়া ইমপসিবল। ইচ্ছা এবং সুযোগ দুইই অনুপস্থিত। সরি। আমাকে মাফ করো। পরের জনমে ঈশ্বর তোমার সাথে আমার মিলিয়ে দিবেন। ভালো থেকো।

-কিন্ত…আমি তো পুনঃর্জন্মে বিশ্বাসী না। হ্যালো…হ্যালো…


অভিমান, কখনো শূণ্য থেকে আসে না। অজস্র রাগ আর ক্ষোভের জটিল সংমিশ্রণ এটা। আজ বৃষ্টি নেই, জ্যোৎস্না নেই; কিন্তু রাতের স্নিগ্ধসরল মাদকতা ঠিকই আছে। ‘নো আনসার’ এর বিপটোনে রাতের নিস্তব্ধতা অসীম শূণ্যতায় গভীর থেকে গভীরতরে ধাবিত হচ্ছে নক্ষত্রবেগে। এই শূণ্যতাকে তাহলে শেষমেষ নিঃশেষে রুপান্তরিত করায় বাকি এখন।


-হ্যালো, কই তুই?

-এই তো দাদা, আমি…

-বাবা স্ট্রোক করেছে। এক্ষুণি হসপিটাল নিতে হবে। এ্যাম্বুলেন্স অথবা গাড়ি যা পাস নিয়ে আয় শীঘ্রই।


নিয়তির নির্মম পরিহাস বোধহয় একেই বলে। আজকের দিনটাতেই এমন হতে হলো! সাদা মাইক্রোবাসটি নিঃসন্দেহে এক জীবনের ছোট্ট ইতিহাস হতে চলেছে। এখনো জ্ঞান ফেরেনি বাবার। রাত ২.৩০ মিনিট। শ্রুতি বিয়ের পিঁড়িতে, আর বাবা হসপিটালে। খারাপ লাগার একটা সীমা থাকে। বর্তমান পরিস্থিতি সেই সীমাকে অতিক্রম করেছে।

চোখের জল কখনো কখনো নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে। আজকের চোখের জল আমাকে নিরুত্তর করেছে। নিরুপায় করেছে। বুকের ভিতর হাতুড়ির তীব্র আঘাতে পাঁজরগুলো এখনো কিভাবে অক্ষত আছে কে জানে! কি অসম্ভব যন্ত্রণা। মানুষের এই চরম সংকটাপন্ন সময় বোধহয় কাউকে পাশে না পাওয়ার জন্যই। একা ভেঙে পড়ার জন্যই।

১১৩ তম বার। ফোন দিতে যেয়েও হাত কেঁপে উঠলো। নাহ, অনেক হয়েছে আর না। যে যেতে চায় তাকে যেতে দেওয়ায় শ্রেয়। ১১২ তম বারের ফোনকলই হোক তোমার অস্তিত্বে আমার শেষ স্পর্শ। ভালো থাকো তুমি আর তোমার সাজানো স্বপ্ন।

একটা গল্প মনে পড়ছে এই মূহুর্তে এক বালক চাল চুরি করে ক্ষুধার্ত পাখিদেরকে খাওয়াতো। চুরি করা পাপ অন্যথায় ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো পুণ্য। পাপ-পুণ্যে কাটাকাটি। এজন্যই বোধহয় তোমাকে হারিয়ে বাবাকে পেয়েছি। হয়তবা তোমাকে পেতে গেলে হারাতে হতো অন্য কোনো সুখকে। স্বপ্ন তো মরেছে সেই কবেই।

নতুন অধ্যায়ের সূচনায়, ঈশ্বরের কাছে একটাই প্রার্থনা তিনি যেন কখনোই আমাকে তোমার সামনাসামনি না করেন। আমি সহ্য করতে পারব না, বিশ্বাস করো। তবুও তোমাকে দেখার ইচ্ছাটা আমার আকুতি আর না দেখতে চাওয়াটা প্রার্থনা। আকুতি মনের, প্রার্থনা ঈশ্বরের। ঈশ্বর সহায় হোন।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৩১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×