somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দৃষ্টি আকর্ষন - ডা ইমরান আশা করি জবাব দেবেন - আমার দেশ পত্রিকা একি বলে

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দৃষ্টি আকর্ষন - ডা ইমরান আশা করি জবাব দেবেন - আমার দেশ পত্রিকা একি বলে

শাহবাগিদের নেতা ব্লগার ইমরান এইচ সরকার হচ্ছেন রাজাকারের নাতি। তার দাদা খয়ের উদ্দিন ছিলেন কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর উপজেলার বালিয়ামারী বাজারপাড়া গ্রামের একজন চিহ্নিত রাজাকার। মুক্তিযোদ্ধারা একাত্তর সালেই রাজাকার খয়ের উদ্দিনকে বিএসএফের সহযোগিতায় হত্যা করে। স্বাধীনতা পূর্ব সময়ে খয়ের উদ্দিন পাকিস্তান মুসলিম লীগের সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পক্ষে অবস্থান নেন এবং তাদের সহযোগিতা করেন।
ব্লগার ডা. ইমরান সম্পর্কে তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজীবপুর এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে পাওয়া গেছে আরও অনেক চমকপ্রদ তথ্য। এলাকাবাসী জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মাঝামাঝি সময়ে একদিন এলাকার জিঞ্জিয়া নদী দিয়ে নৌকায় করে মুক্তিযোদ্ধারা যাচ্ছিলেন। আরেকটি নৌকায় করে নিকটবর্তী ভারতের কালাইয়েরচরের বাজারে যাচ্ছিলেন রাজাকার খয়ের উদ্দিন। তার নৌকায় আরও অনেক যাত্রী ছিল। পাশের নৌকায় যে মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন, তিনি জানতেন না। রাজাকার খয়ের উদ্দিন শেখ মুজিবকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে নানা কথা বলেছিলেন। একই সঙ্গে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কেও বিরূপ মন্তব্য করছিলেন। মুক্তিযোদ্ধারা তার সম্পর্কে খবর নিয়ে বিএসএফের সহযোগিতায় তাকে পাকড়াও করে। একদিন তাকে কৌশলে মাখনেরচর ও বল্লমগিরি বিল এলাকায় নিয়ে যায় এবং হাঁটুপানিতে নামিয়ে গুলি করে হত্যা করে। স্বাধীনতার পর ঢাকায় থাকা তার আত্মীয়স্বজন ডা. ইমরানের পরিবারকে শহীদ পরিবার হিসেবে বানিয়ে সরকার থেকে একটি বাড়ি বরাদ্দ নেয়। পরে জানাজানি হয়ে গেলে বাড়ির বরাদ্দ বাতিল হয় বলে জানা যায়।
খয়ের উদ্দিন সম্পর্কে রাজীবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবদুল হাই সরকার জানান, ইমরানের দাদা খয়ের উদ্দিন কোনোদিনই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি মুসলিম লীগ করতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাকে বিএসএফের সহযোগিতায় মুক্তিযোদ্ধারা হত্যা করে। ইমরানের বাবা মতিন সরকার সম্পর্কে তিনি বলেন, মতিন সরকার স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে সিপিবি করতেন। এখন আওয়ামী লীগ করেন। বর্তমানে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্র জানায়, ইমরানের বাবা আবদুল মতিন সরকারও ছিলেন তার দাদার অনুসারী অর্থাত্ মুসলিম লীগার। দেশ শত্রুমুক্ত হওয়ার পর জীবন বাঁচাতে মতিন সরকার প্রথমে সিপিবি এবং পরে সুযোগমত ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগে আশ্রয় নেন। এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
খয়ের উদ্দিন সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সঙ্গে যুক্ত এক মুক্তিযোদ্ধা জানান, বিএসএফের সহযোগিতায় তত্কালীন স্থানীয় চেয়ারম্যান সালিউদ্দিনসহ মুক্তি বাহিনীর নির্দেশে ১৯৭১ সালের ১৪ জুন শান্তি কমিটির নেতা খয়ের উদ্দিনকে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৪ সালে খয়ের উদ্দিনের স্ত্রী তার চাচা তদানীন্তন গাইবান্ধা পুলিশের দারোগাকে দিয়ে ঢাকায় যোগাযোগ করে ভাতিজি জামাইকে মুক্তি বার্তা সাপ্তাহিক পত্রিকায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তার নাম তোলেন। শহীদ পরিবার হিসেবে খয়ের উদ্দিনের মেয়ে ডাক্তার মাধবীর নামে সরকারি বাসা বরাদ্দ নেয়া হয়। তবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরোধিতার মুখে পড়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের যে তালিকা প্রণয়ন করা হয়, তাতে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ তার নাম রাখেনি। ওই সময় সংসদে এ নিয়ে যে মিটিং করা হয়েছে, সে রেজ্যুলেশনেও ওই বিষয়টির উল্লেখ আছে। এলাকাবাসী জানান, খয়ের উদ্দিনের আরেক ভাই আহমদ হাজীও রাজাকার ছিলেন। তিনিও মুসলিম লীগ করতেন।
সত্যিই সেলুকাস যে ওই রাজাকার দাদা আর বাবার সন্তান হলেন তথাকথিত দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ব্লগার ইমরান। ১৯৮৩ সালে তিনি কুড়িগ্রামের বালিয়ামারী বাজারপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ৪ ভাইবোনের মধ্যে ইমরান সবার ছোট। ১৯৯৯ সালে এসএসসি ও ২০০১ সালে এইচএসসি পাস করেন। স্থানীয় পর্যায়ে লেখাপড়া শেষে ২০০২ সালে রংপুর মেডিকেলে ৩১তম ব্যাচে ভর্তি হন তিনি। সেখানে তিনি প্রথমে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক, আহ্বায়ক ও ইন্টার্ন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তার সময় একাধিক সহপাঠী নামপ্রকাশ না করে জানান, কলেজে তিনি ইভটিজার, বেয়াড়া, বেয়াদব ও নেশাখোর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পাস করার পর ২০০৯ সালে চলে আসেন ঢাকায়। আওয়ামীপন্থী পেশাজীবী সংগঠন ‘স্বাধীনতা চিকিত্সক পরিষদ’-এর (স্বাচিপ) জোরে বিশেষ বিবেচনায় অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ পান কুড়িগ্রামের উলিপুরে। তবে সেখানে সে কোনোদিন দায়িত্ব পালন করেননি। এরপর ঢাকা মেডিকেলে ইমরান অ্যানসথেশিয়া বিভাগে যোগ দেন। কিন্তু সেখান কাজ ছাড়াই বেতন তুলে নিতেন। শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (এমএমইউ) ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হলেও তা শেষ করতে পারেননি তিনি। অভিযোগ রয়েছে, স্বাচিপ নেতা ইকবাল আর্সালানের লোক পরিচয় দিয়ে ইমরান বিপুল পরিমাণ টাকা ঘুষ ও চাঁদাবাজি করে দুইটি মাইক্রোবাসের মালিক হন। সাবেক ছাত্রনেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এমপি যেদিন পিজির ভেতরে আক্রান্ত হন, সেদিন অগ্রভাগে ছিলেন এই ইমরান। ছাত্রজীবনে ছাত্রশিবিরের সঙ্গেও ইমরান জড়িত ছিল বলে জানা গেছে।
সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার নির্দেশনা কে কে দিতে পারবেন, কে ‘প্রিয় দেশবাসী’ সম্বোধন করতে পারবেন, তা বলা থাকলেও এখন ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান পরিচয় দেয়া শাহবাগি নেতা ইমরান বিকল্প সরকারই দিয়ে যাচ্ছেন অহরহ নানা নির্দেশনা; যা অনিচ্ছা সত্ত্বেও ডরে-ভয়ে পালন করেন অনেকে। অনেক স্কুল না চাইলেও ওই শাহবাগি নেতার নির্দেশনা মেনে যাচ্ছে।
গোয়েন্দা, ব্লগার সূত্র জানায়, আন্দোলন শুরুর পর জামায়াতি প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্ত করার নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদাবাজি, চাঁদার টাকায় ধানমন্ডি এলাকায় ফ্ল্যাট কেনা, রাতে সহযোদ্ধাসহ উত্সুক সাধারণ মানুষ শাহবাগে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করলেও ইমরানের শাহবাগের পার্শ্ববর্তী একটি পাঁচ তারকা হোটেলে রাত যাপন, ডিস্কোতে নাচানাচি, এয়ারপোর্ট এলাকার আরেকটি বিলাসবহুল হোটেলে ছাত্রলীগেরই আরেক প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে ফুর্তি করা, তথাকথিত ‘অগ্নিকন্যা’ লাকীর আন্দোলনবিমুখ হওয়া, শত শত ছাত্রী ও নারীর রাতে শাহবাগে অবস্থান থেকে বিমুখ হওয়াসহ নানা তথ্য জানা যায়। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান দাবি, তার রাজাকার দাদা ও শাহাবাগে তার নির্দেশনাসহ নানা অভিযোগের বিষয়ে ইমরানের বক্তব্য জানতে আমার দেশ একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে বেসরকারি টেলিভিশনের একটি টকশোতে বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান দুদুর দেয়া তথ্যের জবাবে ইমরান তার দাদা রাজাকার ছিলেন না বলে জানান।
২৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতী এখন পুরোপুরিভাবে নেতৃত্বহীন ও বিশৃংখল।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩



শেরে বাংলার নিজস্ব দল ছিলো, কৃষক প্রজা পার্টি; তিনি সেই দলের নেতা ছিলেন। একই সময়ে, তিনি পুরো বাংগালী জাতির নেতা ছিলেন, সব দলের মানুষ উনাকে সন্মান করতেন। মওলানাও জাতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন বিপ্লবী নেতা হাদী

লিখেছেন আরোগ্য, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৬



ওসমান হাদী অন্যতম জুলাই যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র, স্পষ্টবাদী কণ্ঠ, প্রতিবাদী চেতনা লালনকারী, ঢাকা ৮ নং আসনের নির্বাচন প্রার্থী আজ জুমুআর নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর গুলিবিদ্ধ হয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×