somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্পঃ '""মধ্যবিত্ত ভালোবাসা"'"

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মধ্যবিত্ত একটি ছেলে ও একটি মেয়ের ভালোবাসার সম্পর্কগুলো ক্যালেন্ডারের পাতার মত ।
প্রতিটি প্রচ্ছদই সুন্দর ।
এই সম্পর্কগুলোতে কল্পনার থেকে বাস্তবের মিশেল থাকে ।
হয়তো এজন্যই সম্পর্কটায় নির্ভরতার মাত্রা একটু বেশিই...

সম্পর্কের শুরুটা রংরঙা প্রপোজাল দিয়ে শুরু হয়না । বিকেল কোচিং এ যাওয়ার সময় মাথানিচু করে হাটা মেয়েটা ভুল করে হয়তো একদিন পিছনে তাকিয়ে ফেলে ।
রোজ পিছু করে আসা ছেলেটা থমকে যায় ।

কোন কথা হয়না, হালকা দৃষ্টিবিনিময় ।
ছেলেটা হয়তো উল্টো ঘুরে দৌড় দেয় অথবা বিহবল হয়ে এদিক ওদিক তাকায় ।
সে রাতে হয়তো মেয়েটা ঘুমোতে যাওয়ার আগে মশারি টাঙানোর একফাকে, আনমনে ছেলেটার কথা একটু ভেবেও ফেলে ।
ওদিকে ছেলে দেখা হয়ে যাওয়ার প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে নিজেকে বুঝ দেয় , আগামী এক সপ্তাহ আর যাবেনা সে !

একদিন পার হয়, দুইদিন পার হয়, তিনদিনের দিন একরকম অবুঝের মতই রাস্তার পিলারের আড়ালে দাড়িয়ে যায় ।

এভাবেই চলতে চলতে হয়তো একদিন ছেলেটা শততমবারের মত কেটে রাখা কসম রাখতে পথ আগলে দাড়িয়েই যায় ।
ছোট্ট করে নিজের পরিচয় দিয়ে, সারারাত রিহার্সেল দেয়া প্রেমনিবেদনের পর্বটুকু একনিঃশ্বাসে সেরে ফেলে ।
মেয়ে একটু হেসে চলে যায় ।
এভাবে একদিন কন্টাক্ট নাম্বারটাও দেয়া নেয়া
হয়ে যায় ।
নাহ্ অন্যান্য কাপলদের মত, রাতজেগে তারা কথা বলতে পারেনা সেলফোনে ।
হাতখরচার টাকাট বাচিয়ে হয়তো ৩০ টাকা ফ্ল্যাক্সি করে ছেলেটা একদিন কল্ দেয় ।
ওদিকে মেয়ে দৌড়ে চলে যায় রুমের শেষ কর্নারে অথবা বারান্দায় ।
হালকা কথা বলার একপর্যায়ে, সীমকোম্পানির বদৌলতে টুক করে কেটে যায় মাঝপথে আটকা রাখা কথার সুতোগুলো ।
অপর্যাপ্ত ব্যালেন্সের দোহাই দিয়ে হয়তো বহুবার, "ভালো থাকবা , আই লাভ য়্যু , বাই.." শোনা হয়না তাদের ।
তারা রাগ করেনা এতে ।
"call ended" লেখা ওঠা স্ক্রীনের দিকে চেয়ে, নীরবে প্রকাশ করে তাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা...

মাসে একবার করে বাধ্যতামূলক ডেটিং এ যাওয়ার আওতায় তারা পরেনা ।
পহেলা বৈশাখ, অথবা বান্ধবীর বার্থডে পার্টির নামে একদিন বাসা থেকে বের হয়ে দেখা করে তারা ।
KFC,Pizza hut অথবা নামকরা রেস্টুরেন্টে তারা যায়নি কখনো ।
মার্কেটের নিচে ছোট ফুচকার দোকানেই তাদের সময়টা কেঁটে যায় ।

জন্মদিনের গীফট হিসেবে ছেলেটা রাতজেগে লেখা এক ডায়রি কবিতা, অথবা অনেক ভেবে কিছু খুজে না পেয়ে মেয়েটা একটা হাতঘড়ি উপহার দেয় ।

তাদের মধ্যে থাকেনা ব্রেকআপ নামক কোন ভীতি, অথবা বিট্রে নামক কোন অশুভ ছায়া ।
অদ্ভুত কিছু স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা থাকে তাদের সম্পর্ক ।

বিয়ে করতেই হবে এমন বাধ্যবাধকতা কেউ তৈরি করেনা ।
বরং তারা নিজেদের সেভাবে তৈরি করায় সাহায্য করে যাতে, ভবিষ্যৎটা তাদের আওতায় থাকে ।
না থাকলেও অসুবিধা নেই ।
ফ্যামিলির দিকে চেয়ে মেয়েটা অন্য একট বিয়ে করে, সেখানে সুখি হওয়ার চেষ্টা চালায় ।
ছেলেটাও হয়তো একটা চাকরি খুজে নিয়ে
নিজ পরিবারটাকে কাঁধে তুলে নেয় ।

কেউ কাউকে দোষারোপ করেনা ।
বরং তাদের ভিতর তৈরি হয় এক প্রবল শ্রদ্ধাবোধ !
... ... ...

কখনো আহামরি কোন কিছু ভাবিনা আমি ।
তবু কোন এক জোৎস্নারাতে চাদের দিকে তাকিয়ে জেগে জেগে এদের কথা ভাবি, বিনম্রভাবে রেস্পেক্ট করি তাদের ।
কে জানে, হয়তো এদের জন্যই আজোও ভালোবাসা শব্দটা কলুষতায় সম্পূর্ণ ডুব দেয়না ।
কর্পোরেট রিলেশনগুলো যখন সস্তায় দেহগুলোকে ক্যামেরায় বন্দি করতে ব্যস্ত, তখন রাত শেষে কাঁথাটা মুড়ি দিতে দিতে এদের কথাই ভাবি...স্বপ্ন দেখি একটি মধ্যবিত্ত ভালোবাসার
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×