ব্রাত্য রাইসুকে আমি কখনো সরাসরি দেখি নাই বা কোন মাধ্যমে কথাও হয় নাই কিন্তু দীর্ঘদিন অনলাইনে থাকার কারনে কোন বা কোনভাবে তার লেখা বা চিন্তা গুলো আমার কাছে আসে এবং পড়ি, যেমনি আরো অনেকের লেখাও পড়ি এবং সেই সব চিন্তাজীবি মানুষের সাথেও নিজকে জড়িয়ে রাখি। আর একথা সত্য যে, তার উপর চোখ আছে গত ৩০ বছর ধরেই। আমি মনে করি, বেহমিয়ান একটা জীবনযাপন করেন এই লেখক (লেখকেরা সেরা চিন্তাবিদ) এবং চিন্তার জন্য যে জীবন দরকার, তিনি এমনি একটা জীবন পার করছেন (হিংসা করার মত)। এমন জীবন যাপন, এটা ভাল বা সুষ্টু চিন্তা করার জন্য খুব দরকারী কারন এই জীবন যাপন করলে কারো কাছে হাত পাতা লেখা লিখতে হয় না বা ফরমায়েশি লেখা বা চিন্তার দরকার পড়ে না!
অন্যদিকে আমি দেখেছি তার কথা বলার বিষয় বেশ স্পষ্ট এবং লেখার গুন গত মান স্পষ্ট। যে কথাটা আমি লিখি সেটা হয়ত সাহিত্যিক চিন্তা মান ভাল হবে না কিন্তু একই বিষয়ে তিনি যখন লিখেন সেটা এত স্পষ্ট এবং সাহিত্যিক ভাব এত থাকে যে আপনি সেটা পড়ে ভাবতে বসবেনই! এটাই মুলত একজন লেখকের কাজ! অনেক লেখক এই কথাটা বুঝেন না, বইয়ের পর বই বের করলেই যে লেখক নন, এটা হয়ত তার মাথায় থাকে না! ব্রাত্য রাইসু কম লিখেছেন তবে লেখার পুরাই ফয়দা লুটেছেন বলে আমি মনে করি। বিশেষ করে ব্রাত্য রাইসু অনলাইনের মজাটা একটু ভালই নিয়েছেন, তিনি স্পষ্ট বলে বলে তার চিন্তার পাঠকে টেনে নিতে পেরেছেন। কোয়ালিটি চিন্তা করে বেশ এগিয়ে আছেন তিনি।
ব্রাত্য রাইসু নিয়ে অনেক বড় কিছু লেখা বা বলা যায়, এবং সেটা পরবর্তি প্রজন্ম করবে বলে আমি মনে করি। তাকে নিয়ে এক সময়ে অনেক গবেষণা হবে নিশ্চয়। আমি দেখছি বা অনুমান করছি ব্রাত্য রাইসুর কাছে এখনো এমন সুযোগ আছে যে, একটু কোন দলে ভীড়ে গেলেই বা তাদের একটু তেল দিলেই, ব্রাত্য রাইসু তার জীবনের একটা হিল্লা করে ফেলতে পারেন, কিন্তু এত বছরে ধরে দেখলাম, তার সেই চেষ্টা নেই! তবে শিল্পের বা অভিজ্ঞতার খোঁজে তার পদচারনা আবার কোথায় নেই! যাই হোক, তাকে আরো দেখি, যদি কোনদিন তাকে নিয়ে আরো ভাবতে পারি তবে আবারো লিখবো। সঠিক বা উন্নত চিন্তা করার যে জীবন দরকার, সেটা আমার এখনো নেই। আমি নিজেও সেই মুক্তির অপেক্ষা করছি! ব্রাত্য রাইসুর লেখা গুলো পড়ে দেখতে পারেন, আনন্দ পাবেন বা নুতন চিন্তার চেষ্টা করতে পারবেন।
আমি এখানে একটা নমুনা পেশ করছি! কয়েকদিন আগে তার অনলাইনে লেখা ছোট একটা লেখা আপনাদের জন্য তুলে দিচ্ছি। পড়ে দেখতে পারেন, এমন চিন্তাটাই মুলত তাকে সামনের সারিতে রেখেছে!
বই ও অতীতের আবর্জনা ~
বেশির ভাগ লেখক নানা ভাবে সমাধা হইয়া গেছে এমন সব একটু বেশি অতীত সমস্যার সমাধান আবিষ্কার ও প্রচার কইরা থাকেন তাদের বইগুলিতে।
নিকট অতীত লইয়া আলাপ খুব কম বইয়ে পাইবেন।
এর এক কারণ, মানুষের শৈশব।
শৈশবে যেই সব জিনিসরে প্রবলেম মনে হইতো, সেগুলি আসলে সেই শৈশবেরও অতীতের প্রবলেম। তখনও সলভ হইছিল না, এমন সব প্রবলেম।
মানুষ এগুলি লইয়া বড় হয়। একটা সময় বোধবুদ্ধি বাড়ে। তারপরে লেখকেরা, প্রধানত সাবজেক্টের অভাবে, অতীতের এইসব সমস্যা লইয়া ঝাপাইয়া পড়ে।
অনেক ক্ষেত্রে জানেও না এগুলি আর প্রবলেম আকারে নাই, সামজিক ভাবে বা বিশেষজ্ঞদের বরাতে সমাধান হইয়া গেছে এইসবের, বা বোঝা গেছে সমাধানের অতীত এইসব প্রবলেম।
তো বিগ হইয়া লেখকেরা শৈশবকালীন অতীতের সমাধান করতে বসে। নানান ধরনের সমাধান দেয় লেখার মধ্য দিয়া। বই আকারে সেগুলি বাইর করে।
বইগুলি গল্প, উপন্যাস, কবিতা বলেন আর নন ফিকশন ইত্যাদি যাই বলেন এইসব আকারে আমাদের সমসাময়িক টাইমে প্রকাশ হইতে থাকে। আমরা এগুলি পড়ি!
ভালো বই হয় না তা বলতেছি না, বা সমসাময়িক প্রবলেম নিয়া সমাধান হাজির করতেছে না কেউ, তাও বলতেছি না।
বলতেছি বেশির ভাগ বইই এইসব দূর অতীতের না-সমস্যা ধরনের সমস্যার আবর্জনায় ভর্তি থাকে।
— ব্রাত্য #রাইসু, ২৫/৫/২০২০
আমি তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন কামনা করি। আগামী দিন গুলোতে তিনি আরো উজ্জ্বল হয়ে আমাদের কাছে ধরা পড়ুক। ভুল চিন্তায় তিনি যেন তার সন্মান না হারান!
(ছবি নেট থেকে, অন্তরকথন সাইট থেকে নেয়া)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:৪৩