আইনের খসড়াঃ খসড়া অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা - সমালোচনা
যে সমস্ত লোকজন মোবাইলের ফোনবুক থেকে নাম বের করে, একটা কল দিতে পারে না, এনড্রয়েড সিম্ভিয়ান পার্থক্য স্বপ্নেও বুঝবে না, যাদের সারা জীবনের কোথাও কখনও কম্পিউটার ইন্টারনেটের সাথে কোন সম্পর্ক পাওয়া যায় না, যারা ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষনার পরও গত চার বছরে নিজ হাতে ৪০ মিনিট ইন্টারনেট ব্যবহার করেনি, যাদের টেবিলে প্রতিদিন সরকারী টাকায় বারটা সংবাদপত্র পরে থাকে যেখানে গিফ্ট নেয়া কয়েকটা ল্যাপটপ মোডেম সহ তাঁদের অফিসেই পরে থাকে এমন সব অর্থব মধ্যবয়ষ্ক ও বৃদ্ধ তথ্যপ্রযুক্তিযোগাযোগের ত-য কিছুই বোঝেনা এমন লোকেরা করছে আজকের ৭০% তরুন সহ আগামীর ২০ কোটি নতুন প্রজন্মের ইউটিউব আর ফেইসবুক আর সোশ্যালমিডিয়ার সম্রাজ্যের অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা - যা ওপেন সোসাইটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ন একটি উপাদান।
কিছুই না বুঝে এরা যা করছে ও করবে, তা দেশ পরিচালনা জলমহাল ইজারা নেয়া মনে করে ইজারাদার সরকারী দলের জন্য কিছু মাছ ধরার ও মাছ বেচার ব্যবস্থা করবে আর ভবিষ্যৎ দেশের বারটা বাজানোর আইনি কাঠামো করে রেখে যাবে -এদের ধর।
খবর ও আলোচনাঃ অনলাইন গণমাধ্যমগুলোকে নীতিমালার আওতায় আনতে চায় সরকার। সেই লক্ষ্যে আগামী অক্টোবরের মধ্যে একটি খসড়া চূড়ান্ত করা হচ্ছে।তথ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন ১২/০৯/১২ (বুধবার) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনলাইন গণমাধ্যমের খসড়া নীতিমালা নিয়ে এক অফলাইন বৈঠকে জানিয়েছেন, আমরা নীতিমালার মাধ্যমে অনলাইন গণমাধ্যমের বিকাশ বাধাগ্রস্ত করতে চাই না, বরং বিকাশে সহায়তা করতে চাই।বোঝেন অবস্থা ! এই সচিব গত চার বছরে যদি ৪০ মিনিট সক্রিয় ইন্টারনেট ব্রাউজ করে থাকে তাহলে আপনার কান কেটে ফেলবো ! ভাববেন না, রিক্স নিলেও ভয় নাই।যে লোক ডিজিটাল বাংলাদেশের দ্বিতীয় অন্যতম মন্ত্রনালয়, তথ্য মন্ত্রনালয়ের ফাইল নথি আইন কানুন পাওয়ার গুরুত্ব সাকুল্যে কাঁডল পাতার বেশি কিছু মনে করতে না পারেনি।মন্ত্রনালয়ের ওয়েব সাইটটা দেখুন জুমলা দিয়ে একটা কুমলা ঝুলিয়ে রেখেছে- ওয়েবসাইট এদের কাছে ডিজিটাল ব্যানার।
সচিব বলেছেন আইনটি করা হয়েছে কমিউনিটি রেডিওর নীতিমালাকে ভিত্তি ধরে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের চাপে ২০০৮ সালে অক্টবর মাসে এফএম রেডিও তরঙ্গের উপর স্থানীয় জনগণের জন্মগত অধিকার অস্বীকার করে এনজিও সহায়ক কমিউনিটি রেডিও নীতিমালা করে আজ ২০১২ সালেও দেশে ১০ টা কমিউনিটি রেডিও অন এয়ার আনতে পারেনি - যেখানে ২০০৯ সালে বাংলাদেশের দেড়গুন অথচ ৭ কোটি জনগণের থ্যাইল্যান্ড সারাদেশে কোন প্রকার পারমিশন ছারা চলতে থাকা প্রায় ৫০০০ পাঁচ হাজার এফএম রেডিও স্টেশন রেজিস্টার্ভূক্ত করে নেয় কোন প্রকার লাইসেন্স ফি ছারা।অথচ আমরা আর কম আয়তনে ১৫ জনগণ- বিশাল এক ডেন্স লোকাল নিউজ মিডিয়া মার্কেট।গত শতাব্দীর ৭০ এর দশকেই বিশ্বে নিরব আলোড়ন সৃষ্টিকার এফএম রেডিওর সর্বনিৎকৃষ্ট নীতি অনুসরন করে অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে, বুঝুন অবস্থা!অনলাইন গণমাধ্যমের জুরিসডিকশন কি কি হবে সে সম্পর্কেই নূন্যতম ধারনা থাকলে কোন নীতি নির্ধারক দূরে থাক সাধারন পাবলিকও বলবে না কিমিউনিটি রেডিও নীতিমালাকে ভিত্তি করে হচ্ছে অনলাইন গণমাধ্যম আইন।আমি তো বলি ভিত্তি না এ এক দল মূর্খের কমিউনিটি রেডিও নীতিমালা কাট কপি পেস্ট করে এক রচনা।সম্প্রচার ও পাবলিশের মত দুটো বেসিক শব্দকেই গুলিয়ে ফেলেছে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, অনলাইন গণমাধ্যমের লাইসেন্স নেওয়ার জন্য এককালীন পাঁচ লাখ টাকা তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।প্রতিবছর ৫০ হাজার টাকা ফি দিয়ে এই লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে।সরকার প্রয়োজনে লাইসেন্স ফি পুনর্নিধারণ করতে পারবে।অথচ দেশের মঙ্গল চাইলে এই ফি'টি কোন ভাবেই ৫ হাজার টাকা অতিক্রম করা উচিত না, তবে উপজেলা, জেলা, সিটিকর্পোরেশন এলাকা ভেদে এই ফি সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা হতে পারবে।তার সাথে অনলাইনে বিনা আমলাতান্ত্রীক জটিলতায় প্রতন্ত্য উপজেলা থেকেও যেন একটি অনলাইন পত্রিকা তথ্য মন্ত্রনালয়ে রেজিস্ট্রেশন ও ডিকলিয়ারেশন উভয়ই পেতে পারে সে ব্যবস্থা তথ্যমন্ত্রনালয়কে সবার আগে করতে হবে।
অনলাইন গণমাধ্যম স্থাপন ও পরিচালনায় তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে সভাপতি করে ১৪ সদস্যের ‘জাতীয় রেগুলেটরি কমিটি’ এবং মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবকে (সম্প্রচার) সভাপতি করে নয় সদস্যের আরো একটি তদারকি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে এতে। প্রশ্ন - এরা সকলের মিলে সারাজীবনে কত এমবি নেট কন্টেন্ট ব্রাউজ করেছে তার হিসাব চাই।এদের কয়জন মোবাইলের নম্বর সেইভ করতে পারে, মোবালের ফোনবুক থেকে নাম বের করে কল দিতে পারে না।জীবনে কয় মিনিট নেট ব্রাউজ করেছে ?
সচিব বলেন, সরকারি হিসাবে সারাদেশে ২ শতাধিক অনলাইন সংবাদপত্র রয়েছে। তবে অনলাইন সংবাদ মাধ্যম পরিচালনার জন্য এখন দেশে কোনো আইন, নীতিমালা বা অধ্যাদেশ নেই।তবে দৈনিক পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণের বিষয়ে ‘সিদ্ধান্ত’ নিতে আলাদাভাবে আলোচনা করা হবে বলে হেদায়েতুল্লাহ জানান। এইতো এই সিম্পল জায়গাটাতে এসেই একেবারে লেজেগোবরে করে ফেললেন- আসলেই ছাগল দিয়ে হাল চাষ করতে নাই, দেখতে খুবই ইডিয়ট লাগে -
দেশে এই মুহুর্তে উপজেলা, জেলা, অঞ্চল লেভেলে ২৫০০ এর উপর রেজিষ্টার্ড দৈনিক, সাপ্তাহীক, পাক্ষিক, মাসিক, ষানমাসিক, বাৎসরিক পত্রিকা ম্যাগাজিন ইত্যাদী আছে।এগুলোর অন্তত ৫০% নিয়মিত তাদের সংখ্যা হাতেগোনা কয়েক কপি থেকে কয়েক শত বা হাজার কপি পাবলিশ করে।অথচ এই ব্যপক খবর শিক্ষা অনর্থক যায় তাদের অনলাইন ভার্শন না থাকার কারনে।আর এগুলোর অনলাইন সংষ্করন না থাকার অন্যতম কারন ইন্টারনেট।কারন খবর সংগ্রহ ইডিট টাইপ পাবলিশ সব করলেও ইন্টারনেটের অভাবে আর এক টিপে নিউজটি অনলাইন করতে পারে না।তাই আগের পত্রিকা গুলো অনলাইন ভার্শনের জন্য কোন আলাদা কিছু তো চিন্তা করাই যাবে না বরং যত অনলাইপত্রিকা তত সচেতনতা/শিক্ষা/গণতন্ত্র/স্বচ্ছতা ইত্যদী মূলনীতি ধরে দেশে পাড়ায় মহল্লায় গ্রামে উপজেলায় জেলায় অনলাই পত্রিকায় সয়লাব করে দেয়ার লক্ষ্য সামনে রেখে একটা পত্রিকা ডেলি দশ হাজার হিট অর্জন করার পর তাকে সরকার থেকে কয়েকশ টাকা ভর্তুকি দিয়ে হলেও ২০ এমবি ব্যান্ডউইথ বিনা পয়সায়, যে লোকেশনে চায় সে লোকেশনে ট্রান্সপোর্ট করে ডেডিকেটেড দিয়ে আসতে হবে।
দেশে অনলাই পত্রিকার ব্যাপক বৃদ্ধি লক্ষ্য রেখে একটা জেলা/উপজেলা/মহল্লা আর কোনদিন কারেন্ট যাবে না ঘোষনা দিতে হবে, সেখানে এসকল পত্রিকার সার্ভার স্পেইস থাকবে।এতে ইন্টারনেশনাল ব্যান্ডউইথও বাঁচবে দরিদ্র পত্রিকাগুলোও টিকে থাকবে। একটা জেলা/উপজেলা/মহল্লা "আর কোনদিন বিদ্যুৎ যাবে না" এইরকম ঘোষনা দিতে হবে, যে সেখানে এ সকল পত্রিকার সার্ভার স্পেইস কম পয়সায় ভাড়া নিতে পারে- এতে ইন্টারনেশনাল ব্যান্ডউইথও বাঁচবে, যে না আমাদের ব্যান্ডউইথের অবস্থা !
অথচ ছাগলেরা কিরকম আইন করছে দেখুন - প্রস্তাবিত খসড়ায় বলা হয়েছে, অনলাইন গণমাধ্যমের লাইসেন্স নেওয়ার জন্য এককালীন ৫ লাখ টাকা তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।তিবছর ৫০ হাজার টাকা ফি দিয়ে এই লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। সরকার প্রয়োজনে লাইসেন্স ফি পুনর্নিধারণ করতে পারবে। মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩০ দিন আগে লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করতে হবে। কোনো কারণে নির্দিষ্ট সময়ে লাইসেন্স নবায়নে ব্যর্থ হলে ৫ হাজার টাকা সারচার্জ জমা দিয়ে সর্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন করা যাবে।আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত ফরমে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে ৫ হাজার টাকার অফেরতযোগ্য ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার জমা দিয়ে আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। আবেদনের সঙ্গে ‘আর্নেস্টমানি’ বাবদ অফেরতযোগ্য ২ লাখ টাকা ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার জমা দিতে হবে। লাইসেন্স পাওয়ার পর এ আর্নেস্টমানি জামানত হিসেবে গণ্য হবে। খসড়ায় বলা হয়, কোনো অনলাইন গণমাধ্যমের মালিক বা পরিচালক সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে একাধিক অনলাইন গণমাধ্যমের মালিক বা পরিচালক হতে পারবেন। সরকারের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে, বিটিআরটির দেওয়া শর্ত ভাঙলে, নীতিমালার শর্ত ভাঙলে এবং সরকারের নির্দেশ না মানলে লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল করা হবে।এছাড়া অনলাইনে সমপ্রচারিত বিষয় (কনটেন্ট) ৯০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে।
আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি- ছাগল আর কাঁডল পাতার দেশের কথা বলছি না!!! দাবি তুলুন অনলাইন গণমাধ্যম (সংবাদপত্র) নীতিমালা অনলাইনে ইন্টারএ্যাক্টিভ পেইজে জনগণের অংশগ্রহন নিশ্চিত করে ওপেন ইডিট করে সৃষ্টি করুন।
শালা ছাগলের দল অনলাইন পত্রিকাকে কাডল পাতা মনে করছে।যে যেসমস্ত লোক সারা জীবনে ১ঘন্টা ইন্টারনেট ব্যবহার করেনি তারা করবে বর্তমানের ২০ বছরের নিচের ৭ কোটি নাগরীকের আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন একটি উপাদানের নীতিমালা ? এ প্রহসন - ওদের আকে জিজ্ঞেস কর কোন "কে" বড়, ছোট না বড় ? কোনটাকে কি উচ্চারন করে ? কোনটা কত ?
দ্রব্যঃ সভায় খসড়া নীতিমালার অনুলিপি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সরবরাহ করা হয় এবং আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে লিখিত মতামত চাওয়া হয়।বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের স্যোশাল অ্যাফেয়ার্স এডিটর বেবী মওদুদ, বাংলানিউজ টোয়েন্টফোর ডট কমের প্রধান সম্পাদক আলমগীর হোসেন, প্রাইম খবর ডটকমের প্রধান সম্পাদক এস এম মেজবাহ উদ্দিনসহ বিভিন্ন অনলাইন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা এ সভায় অংশ নেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৮:২৮