somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রুম নাম্বার থারটিন (গল্প)

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাতে ঘুমানোর পূর্বেই রাফিকে ওর বাবা সব গুছিয়ে রাখার জন্য বলেছেন। খুব সকালে জেলা শহরের নামকরা একটি স্কুলে ভর্তি করাতে যাবেন। রাফি গ্রামের স্কুল থেকেই জেএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। বাবা আহমদ আলীর আশানুরূপ রেজাল্ট না করায় হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিলেন। রাফির কোনো মতামত নেই। গ্রামে ভর্তি করালও খুশি আর দূরেও ভর্তি হলেও আপত্তি নেই। রাফির মা মহসিনা বেগম স্বামীর মতের সম্পূর্ণ বিপরীত। একমাত্র ছেলেকে দূরে পাঠাবেন এটা কে মুহূর্তের জন্যও ভাবতে পারছেন না। এসব ভাবলেই বারবার রাফির মুখের কথা তার কানে বাজতে থাকে। রাফির হাসিভরা মুখের ছবিটাই সর্বণ ভাসতে থাকে। আহমদ আলী যতবারই তার সাথে এসব নিয়ে আলাপ করেছেন ততবারই দ্বিমত করে গ্রামের স্কুলেই ভর্তি করানোর কথা বলে তার নিজের যুক্তি তুলে ধরেছেন। আহমদ আলীর এক যুক্তিÑরাফি গ্রামে থাকলেও মানুষ হবে না। ভালো রেজাল্ট করতে পারবে না। মাঝে মাঝে রাফিও শুনেছে বাবা মায়ের তর্কের কথা। তবে নিজের পছন্দ অপছন্দ না থাকায় কখনোই কোনো কথা বলেনি।
রাফি বাবার কথানুযায়ী শোবার পূর্বে ব্যাগ গুছিয়েছে। জামা কাপড় যেগুলো নেয়ার মত সেগুলো সবই ব্যাগে ঢুকিয়েছে। চোখ বন্ধ করে নানা বিষয় নিয়ে ভেবে চলেছে। গ্রামের বাঁধভাঙা আনন্দ, স্কুলের মাঠে খেলা করা, বিকেলে দলবেঁধে বাড়ি ফেরা—আরও নানান বিষয় রাফির মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। শহরের স্কুলটাও কী অনেক বড় হবে? স্কুল মাঠে খেলা যাবে তো? কাদের সাথে থাকবে-এসব প্রশ্নও মাথায় জমা হচ্ছে। এসব ভাবতে ভাবতে রাফি যে কখন ঘুমিয়ে পরেছিল তা আর মনে নেই। সকালে ঘুম ভাঙ্গল মায়ের ডাকে। বিছানা থেকে উঠে সোজা টিউবওয়েলের কাছে। টিউবওয়েলের কাছেই দাঁড়িয়েছিল রাফির বাল্য বন্ধু আরমান। আরমানের দিকে তাকিয়ে রাফি মৃদুস্বরে বলল—
‘আরমান একটু পরে চলে যাচ্ছি। শহরের স্কুলে ভর্তি হবো।’
‘কোন্ স্কুলেভর্তি হবি?’ আরমানের পাল্টা প্রশ্ন।
‘বাবাই ভালো জানেন। স্কুলের হোস্টেলেই থাকতে হবে।’
আরমান যেন আকাশ থেকে পড়ে। অবাক হয়ে জানতে চায়—
‘কী বলছিস রাফি? তুই আর আমাদের স্কুলে পড়বি না?’
‘নারে দোস্ত। বাবা রেডি হচ্ছেন নাস্তা খেতে যতণ।’
আরমান স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে। রাফির সাথে সেই ছোট্টবেলা থেকেই আরমানের সাথে ঘনিষ্টতা। কত যে হাজারো স্মৃতি দুজনার তা বলে শেষ করা যাবে না। দুজনই ‘এ’ গ্রেড পেয়ে জেএসসি উত্তীর্ণ হয়েছে। যদিও পড়ালেখা করলে আরো ভালো করতে পারত। পড়ার চেয়ে খেলার মনোযোগ থাকলে যা হয় তা-ই দুজনার বেলায় ঘটেছে। রাফি কয়েকটি কথা বলেই আরমানকে বিদায় জানায়।
সূর্যের আলোয় পুরো বাড়িটা ঝিকিমিকি করছে। ঘরের সামনে বড় পুকুরের ভেতর সূর্যের আলো পড়েছে। মহসিনা বেগম সকাল থেকে এক গ্লাস পানিও মুখে দেননি। আজ তার মন ভালো নেই। রাফিকে একটু পরেই বিদায় জানাতে হবেÑমন কে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষাও মহসিনা বেগম এখন হারিয়েছেন। কষ্ট হলেও সকালের খাবার তৈরি করেছেন।
রাফিকে মহসিনা বেগম বিদায় জানালেন। শুধু বললেন—
‘রাফি দুষ্টুমি করবি না। মন দিয়ে পড়ালেখা করিস।’ কথা দুটি বলে নিঃশব্দে হু হু করে কেঁদে উঠলেন।
ওাফি আর ওর বাবা আহমদ আলী যখন জেলা শহরের স্কুলে পৌঁছালেন তখনদুপুর পেরিয়েছে। স্কুলের সামনে থেকে দুপুরের খাবার খেলেন। আহমদ আলীর এক বন্ধু এই স্কুলের কার্ক। সেই সুবাদে ভর্তির বিষযে সহযোগিতা পেলেন। নবম শ্রেণির বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি করালেন। দূরের শিার্থীদের জন্য আবাসিক সুবিধা থাকায় সিটও পেল রাফি। রাফিকে সাথে নিয়েই প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র কিনলেন। বিকেলে যখন হোস্টেল সুপারের রুমে আসলেন তখনই জানতে পারলেন হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার ১৩ নং রমে রাফিকে সিট দেয়া হয়েছে। প্রতিটি রুমে চারজন করে ছাত্র থাকছে।
বাবা সব কিছু কেনাকাটা করে সন্ধ্যার পূর্বেই রাফির কাছ থেকে বিদায় নিলেন। আহমদ আলী যাবার সময় বলে গেলেন—
‘রাফি জানি তোর কষ্ট হবে। ভালো মানুষ হওয়ার জন্য এইটুকু কষ্ট সহ্য করতে হবে। শরীরের প্রতি খেয়াল রাখিস।’

রাফিই এই রুমের নবাগত বাসিন্দা। অপর তিনজনের থাকার বয়স অনেক। পরিচয় পর্ব বলতে যা বোঝায় সেরকম কিছু না। যখন যার সাথে পরিচয় হয়েছে তখনই কথা বলেছে। মামুন, মোস্তফা আর হাসান। হাসানের বয়স রাফির সমান হলেও শরীরের দিক থেকে কিছুটা পার্থক্য। রাফির যা ওজন তার দ্বিগুণ হবে হাসানের। এ হিসেব রাফির আন্দাজ নির্ভর।
কয়েকদিনের মধ্যেই মামুন মোস্তফা আর হাসানের সাথে রাফির সখ্যতা হয়ে যায়। বাহির থেকে কেউ কিছু নিয়ে এলে চারজনে ভাগ করে খায়। হাসানের বাসা স্কুলের কাছাকাছি হওয়ায় মাঝে মাঝে রাতের খাবারটা ওর আম্মু কাজের লোকের মাধ্যমে হোস্টেলে পাঠায়। হাসান সবাইেিক নিয়ে খায়। গভীর রাত অবধি চলে ওদের খুনসুটি। কে কোথায় ছিল কীভাবে কাটাত দিনগুলি। হাসান শহরের ছেলে হওয়ায় অন্যদের অভিজ্ঞতা শুনেই মজা পাচ্ছে। সবার চেয়ে রাফির অভিজ্ঞতার ঝুঁলি বেশি। ডানপিঠে স্বভাবের রাফি আজ একরকম বন্দি। রাফি কখনো মন খারাপ করে চুপ থেকে সব
‘কিরে রাফি কথা বলিস না ক্যান?’জানতে চায় মামুন।
রাফি সবার দিকে চোখ বুলিয়ে বলে—
‘নারে এখানে আমার ভালো লাগছে না। আমি গ্রামের স্কুলেই ভর্তি হব।’
মোস্তফা রাফির পাশে এগিয়ে এসে বলে—
‘রাফি আমরা এখানকার পুরনো ছাত্র। আমরা জানি এ স্কুল আর হোস্টেলে থাকা কত আনন্দের।’
‘আনন্দের থাক আমার গ্রামটাই অনেক ভালো।’
এবার হাসানও রাফির ডান পাশে এসে বসল। হাসান কী বলবে বুঝতে পারে না। কারণ মাঝে মাঝে হাসানের কথায় হিতে বিপরীত ঘটে তাই পরামর্শ কাজে লাগে না। হাসান রাফির চোখের দিকে কিছুণ তাকিয়ে থেকে বলে—
‘মন খারাপ করিস না দোস্ত। শুক্রবার আমাদের বাসার নিয়ে যাবো।
‘আমাদের নিবি না হাসান।’ বলে মামুন।
‘আমরা সবাই যাবো।’ সমস্বরে সবাই হেসে ওঠে।
রাফিও না হেসে পারে না।
হোস্টেলের অদূরেই রাফির নতুন স্কুল। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে কাস। দুপুরে যতটুকু টিফিনের জন্য সময় পায় সেই সময়ে রাফির বন্ধুরা হোস্টেলের গিয়েই খেয়ে আসে। অনাবাসিক ছাত্ররা স্কুল ক্যান্টিন থেকে খেয়ে নেয়। রাফি নতুন নতুন সবার সাথে পরিচিত হচ্ছে। অনেক অপরিচিত মুখ এখন রাফির চেনা। কাসের সবার সাথেই কমবেশি পরিচিত হয়েছে। রাফিও বেশ ভালোভাবে মিশে গেছে সবার সাথে।
দিনের অধিকাংশ সময় রাফির কাটে স্কুলের আঙিনায়। কাসের পরেই কাস। শিকরা অনেক কড়া। নিয়মিত কাসের পড়া শিখতে হচ্ছে। না শিখে যে উপায় নেই। পড়া না শিখে গেলে কঠিন শাস্তি। এক একজন শিকের শাস্তির মাত্রা একেক এক রকম। রাফি কাসের সবার নাম মনে না রাখতে পারলেও যে নামগুলো খুব পরিচিত সেগুলো মনে রাখতে পেরেছে।
জেলা শহরের এই বয়েজ স্কুলটি এখন রাফির অনেক আপন। এর চেয়ে বেশি আপন এখানকার বন্ধুরা। রাফি ভাবতে পারেনি এত দ্রুত সবার প্রিয় হয়ে উঠবে। দিন পেরিয়ে রাত আসে রাফির আনন্দের সাথে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন আনন্দ। কাসের বন্ধুদের সাথে দিনভর কথা, গল্প, আড্ডা, কাসেও সুযোগ পেলেও শুরু হয় জম্পেশ আড্ডা। সুজন, নাহিদ, খায়ের আর সিংহ ভাই আসাদ আড্ডার আকর্ষণ।
কাসের আসাদকে সবাই সিংহ ভাই বলে ডাকে। সবার চেয়ে একটু বয়সে বড় হলেও দারুণ আড্ডাবাজ। আর সিংহ ওর নামের বাংলা অর্থ। আসাদ কে যে নামেই ডাকা হোক না কেন আসাদ খুশি। খুশি এই কারণে যে আসাদের বন্ধুদের আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। রাফিও মাঝে মাঝে সিংহ ভাইয়ের কাছে বসে। চোখ দুটো উঁচু করে আসাদের কাছে জানতে চায়—
‘আসাদ ভাই তোমাদেরকে পেয়ে আমার অনেক ভালো লাগছে।’
‘তোমাকেও পেয়ে আমরা খুশি।’ আসাদ হেসে উত্তর দেয়।
সন্ধ্যার পরে রাফিদের চলে পড়ালেখা। ঠিক কাটায় কাটায় রাতের খাবারের জন্য খাবার রুমে যেতে পারে। হোস্টেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিকরা রুমে রুমে গিয়ে খোঁজ নেন। মামুন আর মোস্তফার সখ্যতা বেশ পুরনো। ওরা কয়েকবছর থেকেই একসাথে আছে। রুমের ভেতরও ওদের আন্তরিকতার কমতি নেই। হাসান পড়তে পড়তে চেয়ারে বসেই কখনো ঘুমিয়ে যায়। আজও ব্যতিক্রম হলো না। রাফি ডাক দিয়ে ওর ঘুম ভাঙ্গায়। হাসান ওদের দিকে তাকিয়ে পুনরায় বইয়ে মন দিয়ে মুখে শব্দ করে পড়ার চেষ্টা করে। চোখে ঘুম আসলে কী পড়ায় মন বসে। পুনরায় টেবিলের উপর মাথা রেখে ঘুমানোর চেষ্টা হাসানের।
‘এই রুমে কারা থাকো?’ হোস্টেলের দায়িত্বে থাকা মাহবুব স্যার রুমে ঢুকে জানতে চাইলেন।
চেয়ার ছেড়ে সবাই দাঁড়িয়ে গেলেও হাসান অন্য জগতে। রাফির কাছে গিয়ে ডাকল। হাসান থতমত খেয়ে চোখ মুছতে মুছতে দাঁড়াল। মাহবুব স্যার সবাই দেখলেন।
‘স্যার, স্যার। হাসান কি যেন বলতে চেয়েছিল। মাহবুব স্যার বলার সুযোগ না দিয়েই বললেন—
‘এই সন্ধ্যে বেলায় ঘুমালে চলবে না। আজ কিছু বললাম না।’
মাহবুব স্যার কিছুণ দাঁড়িয়ে অন্য রুমের দিকে গেলেন।
সবাই এবার আওয়াজ করে পড়া শুরু করল। হাসানও সবার সাথে তাল মিলাল।
ঠিক নয়টায় প্লেট নিয়ে ডাইনিং রুমের দিকে ছুটল সবাই। রাফি কয়েকদিনের মধ্যে সব আয়ত্তে নিয়ে এল। রুটিন মাফিক সব কিছুই করতে পারে রাফি। মামুন, মোস্তফা আর হাসান ছাড়া রাফিরও ভালো লাগে না। তাই এক সঙ্গে খেতে যাওয়া।
দিন যতই যাচ্ছে ততই রাফিদের সাথে অন্যদের সখ্যতা বেড়েই চলেছে। রাফি গ্রামের কথা অনেকটাই ভুলে গেছে। ভুলে গেছে ওর বন্ধুদেরও। কখনো কখনো বাবা মায়ের কথা মনে পড়লেও ণিক কষ্ট অনুভব করলেও বন্ধুদের হাসি তামাশায় সব ভুলে যায়।
মামুন, মোস্তফা আর হাসানের ছাড়াও পাশের কয়েকটি রুমের ছাত্রদের সাথে রাফির আসা যাওয়া। রুমে গিয়ে ল্প করার সুযোগ কম থাকলেও যা হয় তা বেশ মনে রাখার। শান্ত, সাকিব, আর সোহাগের সাথে রাফির বেশ ভাব।
হোস্টেলের ভেতর বন্দি মনে হলেও রাফির কাছে বেশ আনন্দের। রাতে বিছানায় শুয়ে পুরনো অভিজ্ঞতার কম শুনতে আর বলতে সবারই ভালো লাগে। গ্রামের বাড়িতে কে কি করেছে তারা ফিরিস্তি বেশ লম্বা। ক্রমান্বয়ে একেকজন তার জীবনের গল্প বলে শোনায়। কত মজার মজার স্মৃতিই না সবার। মনে মনে ভাবে রাফি। মোস্তফার দুষ্টুমি ঢের বেশি। গাছে উঠার ওস্তাদ মোস্তফা সেটি ওর বলার মধ্য দিয়েই প্রমাণ করতে পেরেছে। আর হবেই না কেন? এস্কুলে মোস্তফার তিন বছর পূর্ণ হয়েছে। হোস্টেলের পেছনে হরেক রকম ফলের গাছ থেকে ফলগুলো চুরি করে খাবার সৌভাগ্য মোস্তফার চেয়ে কারো বেশি হয়নি। মামুন, হাসান, শান্ত মাঝে মাঝে ভাগ বসালেও মোস্তফা কত দিন যে একা একা খেয়েছে তার হিসেব একমাত্র মোস্তফাই দিতে পারবে।
রাতে যখন এসব নিয়ে কথা হচ্ছিল তখন মামুন বলল—
‘মোস্তফা এবার আমাদের নতুন সঙ্গী রাফি।’
‘নারে ভাই আমি এসব চুরি টুরির মধ্য নেই। বাবা জানলে রা নেই।’ রাফি কথাটি বলেই চুপ হয়ে যায়।
‘আরে ভয় নেই নাইট গার্ড মকবুল চাচা আমাদের কিচ্ছু বলে না। তোরও ভয় নেই।
‘মোস্তফা রাফিকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে।’ রাফি এবার কোনো কথা বলে না।
প্রতিরাতে ঘুমানোর আগে গল্প চলে। রাতে ঘুমের পূর্বে বেশ কয়েকদিনই মোস্তফার রাতের অভিযান সম্পর্কে রাফি কেবল শুনেছে।
বৃহস্পতিবার রাত। আজ রাফি একটু আগেই ঘুমিয়েছিল। যখন ঘুম ভাঙ্গল তখন ডাইনিং রুমে তালা দেওয়া হয়েছে। রাফির ুধাও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। কী খাবে এখন রাফি। মনে মনে ভেবে চলেছে। হঠাৎ রুমের বাইরে মোস্তফার কণ্ঠ—
‘হাসান দরজা খোল।’
রাফি বাইরের জানালার অস্পষ্ট আলোতে দেখল হাসান দরজা খুলে দিল।
মোস্তফা শব্দ করে কি যেন মেঝেতে রাখল। হাসান দরজা বন্ধ করে দিয়েই টিউবলাইটের সুইচ টিপল।
রাফি এসব কী দেখছে। চার পাঁচটা নারিকেল। রাফি অবাক চোখে মোস্তফার দিকে তাকাল।
‘কিরে রাফি অবাক হচ্ছিস না?’ জিজ্ঞেস করে মোস্তফা।
রাফি এতণ বালিশের উপর মাথা রেখে শুয়ে শুয়ে দেখছিল এবার না বসে আর পারে না।
ছোট একটি চাকু দিয়ে মোস্তফা কীভাবে যে একটা নারিকেল ছিড়ে ফেলল রাফি টেরই পেল না। দেয়ালের সাথে আঘাত করে মোস্তফা নারিকেলের পানি খেল।
‘রাফি নারিকেল খা। খুবই সুস্বাদু।’ মোস্তফা অর্ধেক নারিকেল রাফির কাছে ছুড়ে মেরে বলল।
হাসানের মুড়ি আর নারিকেল খেতে ভালোই লেগেছে রাফির। অন্তত এখন আর খিদে নেই। মোস্তফার এমন নানা কারণে ওদের রুম আর রুমের অধিবাসীদের আলাদা নজরে রাখেন শিকরা। শিক আর নাইট গার্ড এর চোখে ফাঁকি দিয়ে মোস্তফাদের চলে নারিকেল খাবার অভিযান। ধরা যে খেতে হয় না তা নয়। যখনই ধরা খায় তখনই নতুন করে বন্ড সই দিতে হয়। শেষবার যখন বন্ডে সই করে তখনও বলা হয়েছিল এসএসসি পরীার কারণে সাধারণ মা করা। কে শোনে কার কথা। রুম নাম্বার থারটিন স্কুল হোস্টেলের সবার কাছে এক গল্পের নাম। এখানে আসলেই নাকি সবাই রাজা হয়ে যায়। রাতের আধারের এসব কাহিনি যখন সবাই অন্যদের মুখে শোনে তখন শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যায়।
নবম শ্রেণির একঝাঁক তরুণ শিার্থীদের পদচারণায় প্রতিদিন মুখতির হয় স্কুলের মাঠ। দুপুরে দলবেধে পুকুরে গোসলও যেন সবার প্রিয়। সাঁতার কেটে পুকুরে এক পাশে থেকে অন্য পাশে যাওয়ার প্রতিযোগিতাও নতুন নয়। এখানেও মোস্তফা, মামুন, হাসান আর রাফি সেরা। রাফি এখন বুঝতে পারে এ স্কুলে ভর্তি না হলে কী যে হারাত। জীবনের অনেক কিছু অপূর্ণ থেকে যেত। মনে মনে সব বন্ধুদের ধন্যবাদ জানায়।
মাস পেরিয়ে যায়। নানা বিচারের সম্মুখীন রাফির বন্ধুরা। রাফির দুএকবার বিচারের মুখোমুখি হয়েছে। আর হবেই না কেন? রাফি যে স্বার্থপরের মত পালাতে পারে না। যেমনটি করেছে পলাশ আর সোহাগ। ডাব চুরি করে পালিয়ে রা পেয়েছে ওরা।
হোস্টেলের সুপার স্যার গত রাতে এসে ওদের সবাইকে শেষ বারের মত শাসিয়ে গেলেন। এরপর ১৩ নাম্বার রুমের কেউ কোনো অপরাধের সাথে জড়িত থাকলে এই রুমের সবাইকে হল থেকে সিট বাতিল করা হবে এবং সেই সঙ্গে এই রুমটিও বন্ধ করে দেয়া হবে। হল সুপার স্যারের কড়া শাসনে কিছুটা পাল্টালো ওদের রাতের অভিযানের চিত্র। রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে ডাব খাবার স্বাদ জাগলেও মনের ভুলেও রুম থেকে বের হয় না। হলের পেছনে যে ডজন দুয়েক নারিকেল গাছ আছে এখন প্রতিটি গাছেই নারিকেল দেখা যাচ্ছে। নাইট গার্ড মকবুলও এখন অনেকটা অবাক দৃষ্টিতে গাছের দিকে তাকায়। মনে মনে ভাবেÑ‘দুষ্টু ছেলের দল এবার খা-হল থেকে বিদায় নিয়ে যা।’ কথাটি ভেবেই সামনে পেছনে তাকায় মকবুল। না কেউ শোনেনি। হলের পেছনে অন্যান্য ফল গাছেরও ফল থাকে না। দুষ্ট ছেলেরা ফল পাঁকলেই খেয়ে ফেলে। গার্ড আর কয়জনকে সামলাবে। রাতের আধারে কাদেরই বা ধরবে।
কীভাবে যে মাস পেরিয়ে যাচ্ছে রাফির বোঝার উপায় নেই। পড়ার ফাঁকে মাসের খবর রাখা হয়নি রাফির। বৈশাখ মাসের শেষের দিকে। রাফি রাতে ঘুমিয়েছে অনেক আগে। ভ্যাপসা গরমের কারণে রাফির যখন ঘুম ভাঙ্গল তখন রাত তিনটা। অনেকণ চেষ্টা করেও ঘুম আনতে পারেনি। খিদেও পেয়েছে বেশ। মোস্তফাকে আস্তে আস্তে ডাকল।
‘মোস্ত। মোস্তফা আমার খিদে পেয়েছে।’
‘খিদে পেয়েছে তো আমি কী করব? আমার কাছে কোনো খাবার নেই।’ ঘুম ঘুম চোখে মোস্তফার উত্তর।
‘আরে না। নারিকেল গাছে উঠতে হবে না।’
মোস্তফা এবার না উঠে পারে না। মামুন আর হাসানকে না ডেকে রাফির সাথে যুক্তি করে কাঁঠাল বিচি রান্না শুরু করল। স্টোভে রান্না করতে ওস্তাদও মোস্তফা সেটা জানা ছিল রাফির। আধাঘণ্টার মধ্যেই রান্না করে ফেলল মোস্তফা।
‘এবার হাসানকে ডাক রাফি। হাসানের মুড়ি দিয়ে খেতে হবে।’
রাফি এবার হাসানের বেডের কাছে গিয়ে ডাকল। হাসানের ঘুম একটু বেশিই দু’চারটা ডাকে কিচ্ছু হয় না। মোস্তফা শরীরে ধাক্কা দিয়ে ডাকল এবার হাসানকে। একটু জোরে ডাকায় মামুনও উঠল ঘুম থেকে।
চারবন্ধু কাঁঠাল বিচি দিয়ে মুড়ি খেল অনেক মজা করে। খাবার শেষে অতৃপ্তি থাকল সবার। মোস্তফার আশ্বাস সুযোগ পেলে আবার একদিন খাবে।
বলতে বলতে নবম শ্রেণি শেষ করে দশম শ্রেণিতে উঠল ওরা। স্কুলের সবচেয়ে বড় ভাই ওরা। কাস শেষে ফেরার পথে ওদের হাঁটার ধরন দেখেই বোঝা যায় ওরা এখন এ স্কুলের বড়। মোস্তফা, মামুন আর রাফির চলাফেরা পরিবর্তন হয়েছে। হাসান শরীরের ওজন না কমে বরং বেড়েছে। খাবারের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসান যখন রুমে বসে একের পর অনেক খাবার খেয়ে রাফিকে বলে—
‘নারে দোস্ত আগের মত খেতে পারি না।’ তখন রাফি না হেসে পারে না। রাফি মনে মনে ভাবে এত বেশি খেয়েও যখন বলিস আগের মত খেতে পারিস না—তাহলে আগে কী পরিমাণ খেয়েছিস এটাতো বুঝতে কষ্ট হয় না।
‘দোস্ত একটু কম খা। শরীরটাকে কমা। পরে দেখবি হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে।’
রাফি হাসানের পিঠে ডান হাত রেখে বলে।
‘হুম। কম খেয়ে আমি মরে যাই তুই তো সেটাই চাইছিস নারে?’
হাসান মন গম্ভীর করে কথাটি বলেই রাফির দিকে তাকিয়ে থাকে।
‘রাগ করিস না দোস্ত। তোর ভালোর জন্যই আমি বলেছি। কষ্ট নিস না।’ রাফির কথায় এবার হাসান চুপ থাকে। কিছুণ পর চারটা বাজতেই ঘুমিয়ে পড়ে হাসান। প্রতি শুক্রবার বিকেলে হাসানের না ঘুমালে ওর মোটা শরীরটা ভালো থাকে না!
দশম শ্রেণিতেও ছিল ওদের নানা ঘটনা আর অঘটনায় ভরপুর। বছরের প্রথম দিকে মামুনের কাছে আসা একটা চিঠি নিয়ে বেশ মজা করেছে ওর বন্ধুরা। মামুনের এক খালাতো বোন আর এক খালাতো ভাই চিঠি লিখেছিল। কার যেন জন্মদিনের নিমন্ত্রণও ছিল ওই চিঠিতে। চিঠির খবরটা হোস্টেলে সবার কানে পৌঁছে আর তারপরই মামুনকে নিয়ে শুরু হল নতুন নতুন কেচ্ছা কাহিনি। কত্ত হাসাহাসি হল চিঠি নিয়ে তার হিসেব নেই। মামুন অবশ্য রাগ না করে আনন্দই পেয়েছে।
রাফি প্রতিটি পরীায় অনেক ভালো রেজাল্ট করেছে। ওর কাছের বন্ধুদের নানা প্রশ্ন ওর ভালো রেজাল্ট নিয়ে। এত কম পড়েও কীভাবে রাফির ভালো রেজাল্ট করে? রাফির সোজা সাপটা উত্তর—
‘নিয়মিত পড়ালেখা করলে কম পড়েও ভালো রেজাল্ট করা যায়।’ কাছের বন্ধুরা রাফিকে আলাদা করে ভাবার চেষ্টা করে কথা বলে। রাফির কাছে এসবেরও উত্তর আছে।
‘আমি তোদের মতই পড়ালেখা করি। অবশ্য যতটুকু পড়ি ততটুকুই মনে রাখি। আমার ভালো রেজাল্টের পেছনে এর চেয়ে বেশি রহস্য আর নেই।’ রাফির যুক্তি সবার ভালো লাগে। সবারই ভালো রেজাল্ট করার জন্য পাঠে মনোযোগ দেয়। যাদের হাতে লেখা খারাপ তারাও হাতের লেখা ভালো করার চেষ্টা করে।
বলতে বলতে রাফির এসএসসি পরীার রুটিন দিয়ে দিয়েছে। রাফির অজান্তে সময়টি কীভাবে কেটে গেল রাফি নিজেও বলতে পারছে না। এর মাঝে কয়েকবার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে বেড়িয়ে এসেছে। মায়ের আশা ভালো রেজাল্ট করে গ্রামে ফিরবে রাফি।। রাফি দুষ্টুমিতে যেমন সেরা থেকেছে তেমনি ভালো রেজাল্ট করেও সেরা হতে চায়। ওর বন্ধুদের প্রতিও রাফির এমন প্রত্যাশা।
ঠিক সময়ই এসএসসি পরীা শুরু হল। মোস্তফা, মামুন আর রাফির একটাই সিদ্ধান্ত শেষ পরীার রাতে হোস্টেলের পেছনের কচি ডাবসহ অনেক ডাব ফতুর করতে হবে। এ সিদ্ধান্ত শুধু একান্তই ওদের। অন্য বন্ধুরাও বুঝতে পারেনি। প্রতিটি পরীায় ভালোভাবে শেষ করেছে। শেষ পরীাটা ঐচ্ছিক বিষয় থাকা সত্ত্বেও কম গুরুত্ব পায়নি। দুপুর একটায় পরীা শেষ হল। রাফিসহ সব বন্ধুরা ব্যাগ গুছাতে ব্যস্ত। এ স্কুল ছাড়তে হবে কাল। বন্ধুদের ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ভাবলেই মনটা কেমন বিষণœ হয়ে যায়। কষ্ট অনুভব করে সবাই। হোস্টেলে কতই না আনন্দে ছিল। এমনটি আর ফিরে আসবে ওদের জীবনে? কেউ কেউ মনে মনে প্রশ্ন করে নিজের অজান্তেই চোখের পানি ফেলে। কাল শুক্রবার হওয়ায় কারো কারো বাবা এসে নিয়ে যাবে।
রাত এগারটার দিকে একে এক করে হলের পেছনে চলে আসল চারজন। মোটাসোটা হওয়ায় হাসান হাঁটলে শব্দ হয়। অনেকবার সাবধান করেও হাসানকে থামানো যায়নি। যদিও আজ অনেক ধীরে ধীরে শব্দ না করে বেরিয়েছে হাসান।
মোস্তফা আর মামুন দুজন দু’ গাছের মাথায়। নারিকেল গাছ ছোট হওয়ায় ডাব পাড়তে কষ্ট হল না। হাসান বসে ধারালে দা দিয়ে কেটে রাফিকে দিচ্ছে। কত পানি খাবে রাফি।
‘এই মামুন সব পারিস না। স্যাররা জানলে খুব রাগ করবে।’
রাফি মৃদুস্বরে মামুনকে বলে। রাত হওয়ায় মোস্তফাও শুনতে পেলে রাফির কণ্ঠ।
কথামত চারজনের চাহিদা অনুযায়ী ডাব পাড়া হল। সব খেয়ে যখন হলে ঢুকবে তখনই হাসানকে ধরে ফেলল নাইট গার্ড মকবুল। হাসান আর সামনে এগুতে পারল না। অনেক অনুনয়-বিনয়ের পরে ছাড়া পেল হাসান। পরের দিন খুব সকালেই ব্যাপারটা স্কুলের সবার কানে পৌঁছে গেল। কিন্তু বিদায়বেলা হওয়ায় কেউই তেমন গুরুত্ব দিল না। রাফিরা সকাল সকাল রুমের ভেতর সব গুছিয়ে প্রস্তুত হয়ে আছে। নিচতলায় সুপার স্যার বসে আছেন। সুপার স্যার সব জেনেও না জানার মতো আজ নীরব থাকলেন। ধীরে ধীরে অন্যান্য রুম তালাবদ্ধ করে চাবিগুলো সুপার স্যারের কাছে পৌঁছানো হল। কিছুণ পরে রাফি আর মামুন স্যারের হাতে ওদের রুমের চাবি দিয়ে বলল— ‘স্যার রুম নাম্বার থারটিন।’
সুপার স্যার চাবি হাতে নিলেন। এবার রাফিরা বের হয়ে হাঁটতে লাগল হোস্টেলের প্রধান ফটকের দিকে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×