somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম ক্রাশ, কিছু জ্ঞানদান, একটা ম্যাসেজ ও কিছু আবুলতাবুল- নাথিং সিরিয়াস :P

১০ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মোটেও সিরিয়াস পোস্ট না, যাদের টাইম নাই, যারা গুরুগম্ভীর কিছু পছন্দ করেন, আসবেন না। ট্যাঁকের টাকা খরচ করে এমন আবালিও পোস্ট না পড়লেও ক্ষতি নেই।


জীবনে প্রথম করে ক্রাশ খেয়েছিলাম জানি না। আমি আসলে প্রতিদিন খাই। এতো সুন্দর সুন্দর মেয়ে চারিদিকে, আমি তো আর চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি না!
তবে আমার জানা মতে প্রথম ক্রাশ খেয়েছিলাম ক্লাস সিক্সের ভর্তি পরীক্ষায়। সমাপনি পরীক্ষা দিয়ে হরলিক্স খেয়ে আল্লাহর নাম নিয়ে সবাই চোখ বন্ধ করে যখন প্রিপারেশান নিচ্ছিল, তখন আমি সাইকেল চালানো শিখছিলাম। হলে তাই যা হওয়ার তাই হলো, কমন নাই। কী আর করার, অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়ছিলাম। (ভাগ্য ভালো ঢিলগুলো সব লেগে গেছে!)
সেইদিনই খেয়েছিলাম প্রথম ক্রাশ। তাও টুম্মা ম্যাডামের উপর! আমি চিন্তা করছিলাম, পরীক্ষার হলে বসে, “এতো সুন্দর সুন্দর মেয়েরা টিচার হয় কেন?” (আশা করি, ম্যাম এই পোস্ট পড়বেন না) :P
পরে ক্লাসে এসে যখন তিনি “dear students, I’m M**** Tumpa, your English teacher…. We all know u r chosen ……” বলে ইংরেজিতে বোঝানো শুরু করলেন যে আমরা এতদিন গরু ছিলাম, আমাদের গা থেকে এখনো প্রাইমারির গন্ধ যায়নি, এখন আমাদের সময় হয়েছে গরু থেকে মানুষে বিবর্তনের (ডারউইনের থিয়োরি আমাদের বেলা খাটে না!), তখন আমার ক্রাশ ছুটল। তার কথা বলার স্পিড, স্মার্টনেস, উচ্চারণের স্টাইল ইত্যাদি দেখে আমার সত্যিই মনে হয়েছিলো, আমি আসলেই গরু!
হ্যাপিনেজ ইজ, আমি তার খুব প্রিয় ছাত্র হয়ে গিয়েছিলাম কিছুদিনের মধ্যেই।
কিছুদিন আগে কি একটা ওয়েবসাইটে স্ক্রল করতে করতে একটা মেয়ের পিক দেখে চোখ আটকে গেল! সাডেন ক্রাশ! শাহরুখ খানের নতুন সিনেমা ফ্যানের গানটার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে- “তোর চোখেরই গরমে/ মাথা থেকে পা/ আমার ট্যান হো গেয়া!” কিন্তু ক্যাপশান পড়েই মনটা খারাপ হয়ে গেল। এ যে বিল গেটসের মেয়ে। নাম জেনিফার ক্যাথরিন গেটস!


ওকে দেখে এফবিতে এটা স্ট্যাটাসও দিয়েছিলাম। লিখেছিলাম, “ক্রাশ খেয়েছি। কীভাবে পটানো যায় ভাবছি!” কিন্তু আফসোস, ভাবতে ভাবতে বুদ্ধিজীবী হয়ে গেলাম কিন্তু তাকে পটানোর কোন রাস্তা খুঁজে পেলাম না। কিন্তু গুরু বলেছেন, “তোর কাছে পৌঁছতে/ পারি পাহাড় টপকাতে/ থামবে না এ গাড়ি পথে বাঁধা পেলে”!
তাছাড়া আমি বাংলা সিনেমা দেখে বড় হয়েছি। সেখানে কতো কোটিপতির মেয়ে সামান্য ভ্যান চালকের সাথে নেচে গেয়ে প্রেম করেছে। শুধু প্রেমই করেনি, “আমি ওর জন্য জীবন দিতে পারি” বলে বাবার বিষয় সম্পত্তি ছেড়ে, আরাম আয়েশের জীবন ছেড়ে “গরীবের ঘরে” এসে রাত কাটিয়েছে! সুতরাং আশা ছাড়িনি।



কিছুদিন আগের কাহিনী। লাফিং কালারস নামে একটা এফবি পেজে একটা পোস্ট পড়লাম। পোস্টটা প্রপোজের একটা নতুন স্টাইল নিয়ে। আমি পোস্টটা বাংলায় ট্রান্সলেট করে আমার ‘হতে পারে’ ‘ওকে’ পাঠালাম। তারপরের কাহিনী মোটামুটি এমন-

“মেয়েদের প্রপোজ করার নতুন স্টাইল-
“তোমার একটা ছবি তুলি?”
“কেন?”
“আসলে, আমার ছেলেমেয়েদের দেখাতে চাই ইয়াং এজে তাদের মা দেখতে কেমন ছিল””
ম্যাসেজটা পাঠিয়ে দেখলাম ন’টা ঊনপঞ্চাশ বাজে। দশটায় ক্লাস আছে, এটা ভেবে আমার খুব তাড়াহুড়া করা উচিৎ। কিন্তু মনের ভেতর ক্লাস করার কোন তাগিদ অনুভব করলাম না। টেকো একটা স্যার, নামটাও মনে নেই, ক্লাস নেবেন। তাকে দেখলেই মনে হয়, ব্যাটার দাম্পত্য জীবন সুখের না। সারাক্ষণ মুখটা আর্টফিল্মের ভাবধরা কোন সুশীলের মতো হাড়ি করে রাখেন। ক্লাস করলে মনে হয়, কোন আর্টফিল্ম দেখছি। কী বোঝালেন, আমি কী বুঝলাম, কী বোঝা উচিৎ, কিছুই বুঝতে পারি না!
আমরা ঠিক করে রেখেছি, কলিকাতা হারবালের একটা ফাইল কিনে দেব স্যারকে কলেজ থেকে বিদায় নেয়ার দিন!
সুতরাং আরেকটু শুয়ে থাকা যায় চোখ বন্ধ করে। গান শুনতে ইচ্ছে করছে। ইয়ারফোন কানে লাগিতে প্লেলিস্ট তৈরি করবো, তখনই ***র ম্যাসেজটা এলো।
“আজকালকার মেয়েদের জন্য পার্ফেক্ট প্রপোজিং স্টাইল”
“তুমি আজকালকার মেয়ে না?”
“কি জানি। মনে হয় না”
“তাইলে, এই স্টাইলটা বাদ”
“মানে?”

****
এই মানে মানে শুনে সেদিন মেজাজটাই গরম হয়ে গিয়েছিলো। যে মেয়ে ম্যাথের, ফিজিক্সের এতো জটিল জটিল ইকুয়েশান বোঝে, সে এটা বুঝতে পারে না!!!
আমার জন্য এক মিনিট নীরবতা! :||


একমিনিট শেষ, এবারে নীরবতা ভাঙুন।
কয়েকদিন থেকে ইউরোপের চিত্রকলা নিয়ে একটা বই পড়ছি। পড়ে মনে হচ্ছিল আমি জ্ঞানী হয়ে গেলাম। এই জ্ঞানটা আপনাদের দিতে না পারলে, আজ রাতে আমার ঘুম হবে না। জ্ঞান বড়ই আজব জিনিস, খালি মানুষকে দিতে ইচ্ছে করে। আমার আশপাশের মানুষগুলা, মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী। এরা জ্ঞান দেয়ার কাউকে খুঁজে না পেয়ে আমার উপর নিক্ষেপ করে। আর আমি সেই জ্ঞান বাণে নিহত হয়ে জ্ঞানবান হই!
বাজে কথা বাদ দিয়ে আসল কথায় আসি। সেটা হইল, পিকাসো আছে না, আরে ঐ যে, চিত্রকর, ওর নামটা বিশাল। একেবারে তেইশ শব্দের। সেটা আপনাদের জানা উচিৎ। ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় আসতে পারে।
Pablo Diego José Francisco de Paula Juan Nepomuceno María de los Remedios Cipriano de la Santísima Trinidad Martyr Patricio Clito Ruíz y Picasso

খুব ইম্পরট্যান্ট। বানান সহ মুখস্থ করে ফেলুন একেবারে। উচ্চারণ জানার দরকার নেই। উচ্চারণ পরীক্ষায় আসে না।



নতুন বাংলা ব্যান্ড অ্যাশেজের গান শুনেছেন? শোনেননি? কি শুনলেন তাইলে? X((
জীবনে প্রথমবার ছ্যাকা খেয়ে যখন পারফেক্ট ছ্যাকাখাওয়া গান খুঁজছিলাম, তখন এই অ্যাশেজ এর দেখা পাই। চরম।
প্রিয় একটা গানের লিরিক শেয়ার করছি-
“অনেক বছর আগের এটা বৃষ্টির দাগ ছিল
পুরনো ক্যালেন্ডারে তুমি খোঁজ নিয়ে দেখো।
অনেক বছর আগের একটা শীতে
কাঁপনের ভেতর আমারে কি ট্যার পেয়েছিলে?
অনেক বছর আগের একটা কফির টেবিলে
মদের বদলে আমারে কী নেশা করেছিলে?
অনেক বছর আগের একটা পুরনো ছবির ফ্রেমে
ধুলাবালি ধুলাবালি মুছতে মুছতে আমারে মুছেই দিলে!”

এই ব্যান্ডটা নিয়ে অনেক কিছু লেখার ইচ্ছে ছিল কিন্তু আপাতত পারছি না। কারণ ল্যাপুতে আর মাত্র চার্জ বাকি আছে ১৩%। পোস্ট করার আগেই না আবার বন্ধ হয়ে যায়!
শুভরাত্রি
০৯/০৩/২০১৬

কিছুক্ষণ আগে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অসাধারণ একটা ইবুক পেলাম। ডাউনলোড করে নিন- লাইফ ম্যাগাজিনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ
ই- বুকটি আমার ব্লগ থেকে প্রকাশিত
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:০৩
৫৪টি মন্তব্য ৫৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×