প্রথমে প্রশ্ন ঃ
আমার অ- অর্থনৈতিক মাথায় অনেক কিছুই পরিষ্কার হয় না । যেমন ঃ
ভি ও আই পি অবৈধ কেন?
আমি আমার সোজা চিন্তায় যা বুঝেছিলাম । কতগুলো সাধারণ মানুষ দোকান দিয়ে কম্পিউটার - টেলিফোন - ভিওয়াইপি ব্যবসা করে উপার্জন করছিলো । অনেকের কর্ম সংস্থান হয়েছিলো । বিশাল জায়ান্ট ব্যবসায়ীর বদলে এই সব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের পরিবারকে মৌল চাহিদা মেটাবার পথ করেছিলো । দেশ থেকে বাইরে, ও বাইরে থেকে দেশে ফোন করা সহজ ও সস্তা ছিলো । এখন অবৈধ ঘোষনার পরে তেলা মাথায় তেল ঢালা হচ্ছে । মানে অনেক অনেক কর্মজীবী দোকান ব্যবসায়ীর পেটে লাত্থি মেরে জায়ান্ট কর্পোরেটরা আগে যেইটা লাইসেন্স ছাড়া কামাইতো , সেইটা এখন লাইসেন্স নিয়ে কামায় ।
কথা হইলো , এই সব ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ীদের পেটে লাত্থি মেরে বেকার না বানায় লাইসেন্স দিলে কি সমস্যা ছিলো ? সরকারের ট্যাক্সের খায়েস থাকলে এই শত শত কর্মজীবী যুবকের উপর সামান্য ট্যাক্স বসায় নিজের আয় ও যুবকদের পরিবার ঠিক রাখলে সমস্যাটা কি? মানুষকে যতবেশি ও যত সহজে সস্তা টেকনোলজি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে , ততই ব্যবহার বাড়বে , যত কল বাড়বে তত বেশি আয় হবে , যত আয় বাড়বে তত সরকারের ট্যাক্স / আয় বাড়বে --- এইটা কি সহজ গণিত না ?
সাবমেরিন কেবলের সবটুকু ক্ষমতা ব্যবহার করা ঃ
আমরা নাকি ৮ গিগা ব্যবহার করছি আর ৪০ গিগা নষ্ট করছি । তো কেউ যদি দাম দিয়ে কিনতে নাই চায় , খালি খালি নষ্ট করার দরকার কি? এইটা বহুল প্রচলিত মার্কেটিং পদ্ধতি আগে ফ্রি দিয়ে অভ্যাস করো তারপর দাম বসায়ে বেচ। বৃটিশরা চা নামক পানীয়তে এই ধরনের ফ্রি মার্কেটিং এর সবচেয়ে বড় সাফল্য দেখিয়েছে ।
স্কুল , কলেজ , বিশ্ববিদ্যালয় , বিশেষ করে বাজার, মার্কেট , ব্যবসা ও অর্থনৈতিক লেন্দেন এর জায়গা গুলাতে ( শুধু শহরে নয়, জেলা উপজেলার বাজার পর্যন্ত ) ব্রড ব্যান্ডের কেবল টানতে সমস্যাটা কি? শুরুতে ফ্রি ইউজ করতে দিলে সমস্যা কি?
সরকারের কাজ তো ব্যবসা করে দেওয়া না । ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি করা, ইনফ্রা স্ট্রাকচার, লজিস্টিক আর পলিসি / আইন দিয়ে দেশের মানুষকে বিদেশীদের থেকে বেশি সুবিধা দেওয়া যাতে আমরা আয় উপার্জন করে বাকিটা নিজেরাই করে নিতে পারি। সেইটা না করে শ্রীযুক্ত কান্তি বোস নিজের পকেটে ৪০ গিগা নিয়ে আড়তদারের মতন আচরণ করছে কেন? ফ্রি দিলে কি ওর বাপের পকেট থেকে যাবে নাকি জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা জিনিস জনগণের কাছে দেওয়া হবে?
ন্যাশনাল ডাটা বেস
প্রায় ৫ থেকে ৬ কোটি ভোটারের নাম, পরিচয়, ঠিকানা , শিক্ষাগত যোগ্যতা , ছবি ইত্যাদি অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এখন সংরক্ষিত আছে । এই তথ্যকে একটা ডিজিটাল কার্ডে / মেশিন রিডেবল কার্ডে সংরক্ষিত করে জাতীয় আই ডি কার্ড বানানো যায় । এই একই কার্ড পাসপোর্ট হিসেবে কাজ করতে পারে। ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে ও যে কোন অর্থনৈতিক লেন দেন এ ব্যবহৃত হতে পারে। বিশেষ করে জমি ও বাড়ি কেনা বেচা জাতীয় বিশাল অংকের লেন দেন এ। এই কার্ড দিয়ে বাংলাদেশের সমস্ত পাবলিক পরীক্ষা ও ইন্টারভিউ নেওয়া যেতে পারে।
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান গুলো - যেমন ব্যাংক, চাকুরীদাতা , শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শপিং মল , হাসপাতাল ইত্যাদি , যে কোন জায়গায় দরকার মত পরিচয় ও তথ্য যাচাই করে নিতে পারে একটা ক্লিক ও নির্দিষ্ট ফি এর বিনিময়ে ( ফি এর ব্যাপারটা আলোচনার যোগ্য) । এই ব্যক্তিগত তথ্য ও পরিচয় কোন সাইটে উন্মুক্ত করে দিলে যদি সমস্যা হয় তাহলে অন্তত সিকিউরড লাইন দিয়ে একটা সেন্ট্রাল ডাটা ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করে কারো সম্পর্কে যাচাই করার ব্যবস্থা রাখা যায় ।
প্রতিটা নাগরিকের ন্যাশনাল আই ডি নম্বরের বিপরীতে যদি তার আয় ও ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য এই কার্ডের মাধ্যমে রেকর্ড হতে থাকে তাহলে আমরা ট্যাক্স নিয়ে যন্ত্রনার হাত থেকে মুক্তি পাই। বাড়ি , গাড়ি , কিংবা যে কোন বড় কেনাকাটা , বিদেশ ভ্রমণ ইত্যাদির জন্য যদি একটাই কার্ড দিয়ে টাকা পয়সা লেন্দেন ও লাইসেন্স / নিবন্ধন করতে হয় , তাহলে সম্পত্তি সংক্রান্ত জটিলতামুক্ত থাকা যায়।
একই কার্ড দিয়ে যদি কেনাকাটা, পরীক্ষা , চিকিৎসা , চাকুরী , ইনকাম ট্যাক্স ইত্যাদি করা যায় তাহলে মানুষের ঝামেলাও কমে , আর দুর্নীতি করার উপায় থাকে না ।
এইটা করা হচ্ছে না কেন? ( এইটার উত্তর অবশ্য জানা)
প্রস্তাবনা ও বিতর্কের কিছু পয়েন্ট ঃ
উপরের প্রশ্ন ও প্রস্তাবনা নিয়ে বিতর্ক থাকবেই । আপনারা সমস্যা গুলো তুলে ধরতে পারেন। দয়া করে কোন নেতা নেত্রী কত বড় বদমাশ ও মূর্খ - এই আলাপ শুরু করবেন না । আবার বাঙ্গালী দিয়ে কি কি হবে না ধরনের আলাপও শুরু করবেন না । এইগুলা বহুল চর্চিত ভাঙ্গা রেকর্ড । নতুন কিছু বলেন। টেকনোলজিকাল ও পলিসি / ইনফ্রা স্ট্রাকচার জনিত সমস্যা ও তার সমাধান আলোচনা করেন।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী যেমন প্রথমেই বলবে তার আয় কমে যাচ্ছে বা যাবে । কিন্তু আমার কথা হলো সস্তায় টেলিফোন করতে দিলে বা ফ্রি দিলে যেইটা হয়, ব্যবসায়ীরা বেশি বেশি করে যোগাযোগ করতে পারে। যোগাযোগ মাধ্যমের উপর নির্ভরশীল ব্যবসা ও শিল্প গড়ে উঠে । ফলে , মানুষের কর্মসংস্থান হয় । ইনকাম ট্যাক্স ও ব্যবসার ট্যাক্স থেকে তখন বেশি আয় হয়। আজকে যেইটা লস বলে মনে হচ্ছে , সেইটাই ৫ থেকে ১০ বছর পরে বিশাল আয়ের ক্ষেত্র হয়ে উঠবে। এইটা টেলিফোন , ভি ও আই পি, ইন্টারনেট ইত্যাদি সংক্রান্ত ।
ফ্রি ইন্টার নেট দিলে কারো কোন ক্ষতি নাই। কারণ না দিলে এইটা আলু, পটল না যে জমায় রাখা যায় । স্রেফ নষ্ট হচ্ছে । সুতরাং বেচতে না পারলে ফ্রি দেওয়াই ভালো। ইন্টারনেট ফ্রি হয়ে গেলে এই ইন্টারনেটকে বেজ করে অন্যান্য অনেক ব্যবসা ও সেবা তখন বিভিন্ন মানুষ নিজ উদ্যোগেই তৈরী করে নেবে । ন্যাশনাল ডাটা বেজ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা গুলো বাস্তবায়ন করতে হলে একলা সরকারের পক্ষে কোনদিনই সম্ভব না । সুতরাং, সরকারের এইখানে ভূমিকা হলো সুযোগ করে দেওয়া । বাকিটা আমরাই করে নেব।
কি ভাবে?
এইখানেই আপনার ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে মন্তব্য করুন।