পাঁচমিশালি খিচুড়ি
উপকরণঃ পোলাওয়ের চাল ১ কাপ,
মসুর ডাল এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ,
মুগ ডাল এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ (হালকা ভাজা),
আলু ১টি,
বরবটি টুকরা এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ,
গাজর লম্বা টুকরা আধা কাপ,
পটল ১টি,
লাল শাক আধা কাপ,
ঝিঙা ১টি,
টমেটো ১টি,
ধনেপাতা,
পুদিনা পাতা
(ফুলকপি ও মটরশুঁটি শীতের দিনে)
ও কাঁচামরিচ।
পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ,
পানি ৩ কাপ,
আদা বাটা ১ চা চামচ,
রসুন বাটা আধা চা চামচ,
আস্ত রসুন কোয়া ৫-৬টি,
হলুদ গুঁড়া এক চা চামচের চার ভাগের এক ভাগ,
লবণ ১ চা চামচ,
তেজপাতা ১টি,
তেল ৩ টেবিল চামচ।
নামানোর আগে ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, কাঁচামরিচ।
প্রণালীঃ তেল গরম হলে তেজপাতা ও পেঁয়াজ, আদা বাটা, হলুদ ও লবণ, চাল, ডাল ও সবজি দিয়ে ভুনে পানি দিয়ে বেশি করে জ্বাল দিতে হবে। ফুটে উঠলে অল্প আঁচে ঢাকনা দিয়ে রান্না করতে হবে। লাল শাক, টমেটো, ধনেপাতা, পুদিনা পাতা ও কাঁচামরিচ দিতে হবে। ২০ থেকে ২৫ মিনিট দমে রাখতে হবে। নতুন মায়েদের জন্য এই খিচুড়ি অনেক পুষ্টিকর।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ০৫, ২০০৯
ঘন ঘন খিদা যাতে না লাগে তাই খাবার দাবার ব্লেন্ড করে সেমি সলিড অবস্থায় বা ঘন স্যুপের মত করে খেতে হয়। পাকস্থলী হলো ছাঁকনির মত। ছাকনির মধ্যে আস্ত আস্ত ডাল দিয়ে পানি ঢাললে সুরুৎ করে চলে যাবে কিন্তু রান্না করা ঘন ডাল ঢেলে দিলে ছাকনির মধ্যে দিয়ে সহজে যেতে চায় না।
গরীবের পেট ভরা রাখতে চাইলে তাই ঢিলা খিচুড়ি বেস্ট।
সহজে পুষ্টিকর খাদ্য রান্না করতে হলে হালিম বেস্ট। হালিমে দামী দামী মাংসই দিতে হবে, এমন কোন কথা নেই। যে কোন মাছ বা মুরগী দিয়েও হালিম রান্না করা সম্ভব। এর সাথে চাল যোগ করে দিলে হয়ে গেলো পাঁচ মিশালী ঢিলা খিচুড়ি। অনুপাত -
হালিমে মাংসঃডাল=১ঃ১। মসল্লা দ্বিগুণ।
খিচুড়িতে চালঃডাল= ২ঃ১ অথবা ৩ঃ১। মাংস - যে কোন পরিমাণ। মসল্লা কম।
লাবড়া ? সবচেয়ে সহজ রেসিপি হলো মাংসকে মাংসের মত করে রান্না করুন। ( তেল, লবণ, হলুদ, মরিচ, পিয়াজ, আদা, রসুন, জিরা, ধনে, গরম মসল্লা) । আরেকটা হাড়িতে ৫-৬ রকমের ডাল সিদ্ধ করে ফেলুন। মিনিট ১৫-২০ মিনিট আগে চাল ও সবজি যোগ করুন। সিদ্ধ হয়ে এলে এবার মাছ/মুরগী/মাংসের হাড়িতে গরম মসল্লাসহ ডাল-চাল-সবজির মিশ্রণ ঢেলে দিন। ধনেপাতা ও কাঁচামরিচ কুচি দিয়ে দমে রাখুন। যেইটা হবে সেইটার নাম কি হবে জানি না , তবে খেতে খুবই মজা আর পুষ্টিকর। এইটাকে লাবড়া বলে কিনা জানি না।
শীতে রোগ প্রতিরোধঃ
শীতে কি ধরনের খাবার খেতে হবে? কোন ধরনের ভিটামিনযুক্ত খাবারকে প্রাধান্য দেবে? অতিরিক্ত শীত শিশুদের জন্য কি ধরনের হুমকি সৃষ্টি করে, তার থেকে পরিত্রাণের উপায় কি? অল্প টাকায় এমন কোন খাবারের ব্যবস্থা করা যায় কি না, যা শিশুদের শীত হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত বৃদ্ধরা কি করবে?
১। শীতের জন্য আলাদা করে কোন খাবারের প্রয়োজন নেই। পুষ্টিকর খাবার খেলেই হলো।
২। শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পর্যাপ্ত রাখতে সব ভিটামিনের ভূমিকাই এক। মানে শরীর চাই সুস্থ ও সবল। তবে, কেউ কেউ ভিটামিন এ ও ডি এর কথা বলেন। সার্বজনীন ভাবে, রোগ প্রতিরোধের সিস্টেম মানে ইমিউন সিস্টেম ভালো হইলেই হলো।
এর বাইরে বাংলাদেশের কবিরাজি ও হোমিও প্যাথি শীত প্রতিরোধে বেশ ভালো। যেমন, কাচা রসুন। সরিষার তেল। কালিজিরা ভর্তা। আদার রস। মধু। গরম দুধ। ইত্যাদি।
৩। অতিরিক্ত শীতে শিশু ও বৃদ্ধদের শ্বাস তন্ত্র আক্রান্ত হয়। ফ্লু, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি রোগে মারা যায়। বাংলাদেশে যত নবজাতক মারা যায় তার মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের রোগে মারা যায় সবচেয়ে বেশি। ঠান্ডা ও রোগ এড়াতে করনীয় নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের newborn care guideline পাবলিশ হয়েছে। ডাউনলোড করে নিতে,
Click This Link
৪। বৃদ্ধদের ঠান্ডা এড়ানোর উপায়ঃ
ক) যতটা সম্ভব একই তাপমাত্রায় থাকা
খ) নাক মুখ ঢেকে চলাচল করা, বিশেষ করে ভিড়ের মধ্যে
গ) বার বার হাত ও মুখমন্ডল ধুয়ে পরিষ্কার রাখা।
ঙ) হাঁচির সময় মুখ ঢেকে রাখা।
চ) প্রতিদিন ধোয়া রুমাল ব্যবহার
ছ) একটা মোটা কাপড় না পরে, দুই তিন স্তরে কাপড় পড়লে ঠান্ডা কম লাগবে
জ) ঘন ঘন গরম চা, পানীয়, দুধ, তরল পান
ঝ) ঠান্ডা লেগে গেলে গরম পানি খাওয়া ও গার্গল করা।
ঞ) দুই বেলা দাঁত মেজে মুখ পরিষ্কার রাখা ( মুখের জীবানু ফুসফুসে যায়)
৫। হার্টের রোগী ও এজমার রোগীদের অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন প্রয়োজন।
৬। অল্প টাকায় সবচেয়ে ভালো খাবার হলো সবজি খিচুড়ি। কয়েক রকমের ডাল আর সবজি দিয়ে ঢিলা খিচুড়ি খাওয়া ভালো। একটু ঘুটা দিয়ে সেমি সলিড করে নিলে ভালো। এই খাবার সুস্বাদু, পুষ্টিকর, পেটে থাকে বেশিক্ষণ ফলে খিদা লাগবে কম। আবাল বৃদ্ধবণিতা সকলের উপযোগী।
৭। পা মোজা, হাতের দস্তানা, মাথার টুপি ও নাক মুখের জন্য মাফলার - আবশ্যক।
৮। সদ্য ভূমিষ্ট বাচ্চাকে ৩ দিনের আগে গোসল করানো যাবে না এবং সাথে সাথে বুকের শাল দুধ খাওয়াতে হবে।
বিস্কুট বনামখিচুড়ি বিতর্ক
গওহার নঈম ওয়ারা
‘স্কুলে বিস্কুট! ও আমার ভালো খোদা! ‘Oh my good God’-এর সরল অনুবাদ ‘ও আমার ভালো খোদা’। এদেশে বিদেশীরা কাজ করতে এলে বাংলা শেখার চেষ্টা করেন। উদ্দেশ্য মহৎÑ এদেশের র-অনেস্বর (রং) ঢ-অনেস্বর (ঢং) বোঝা। স্থানীয় সংস্কৃতি জানা ও সেই মতো আচরণ করা। এদেরই কোনো একজন এদেশের শিশুদের পুষ্টিমান বাড়ানোর ওসিহত নিয়ে কাজ করতে এসেছিলেন বছরতিনেক আগে। ‘Oh my good God’-এর অনুবাদ এভাবে করেছিলেন তিনি। সভা সমিতিতে কোনো কারণে বিস্মিত হলে বেশ জোরে বলে উঠতেন, ‘ও আমার ভালো খোদা!’ তিনি এখনো আছেন। মনে হয় এদেশের শিশুদের পুষ্টি বাড়ানোর জন্য কোনো পাথর সরানোর কাজ তিনি বাদ রাখবেন না। সাধু! সাধু!! জোরে বলুন সাধু! সাধু!!
পাঠক জানেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসা শিশুদের মুখে বিস্কুট পুরে দিয়ে পুষ্টিমান বাড়ানোর ঝামেলহীন কার্যক্রম অনেকদিন থেকে চলে এলেও পরপর কতগুলো জেলায় বিস্কুট খেয়ে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়লে (মতান্তরে একজনের মৃত্যু ঘটলে) প্রতিবাদের মুখে এই কর্মসূচিতে সাময়িক বিরতি দেয়া হয়। তবে এই বিরতি এখন টিভি সিরিয়ালের কমার্শিয়াল ব্রেকে পরিণত হয়েছে। বিস্কুট পক্ষেও স্বার্থরক্ষার সকল বিজ্ঞাপন শেষে আবার বিস্কুট বিতরণ শুরু হতে যাচ্ছে। বিস্কুট উকিলরা (!) তাদের পক্ষে যে যুক্তিগুলো দেখিয়েছেন সেগুলো হচ্ছে (পাঠক হাসবেন না প্লিজ)-
১। বিস্কুটে ময়েশ্চার কনটেন্ট (আর্দ্রতা) প্রায় থাকেই না। ময়েশ্চার কনটেন্ট বেশি হলে বাংলাদেশের উষ্ণ জলবায়ুতে যে কোনো খাবারের জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে (এখানে অবশ্য প্রায় থাকেই না বলতে কি বোঝানো হয়েছে তা জানা যায় না, তবে এটা বোঝা যায় যে একেবারেই যে থকে না তা কেউ বলছেন না।)
২। খিচুড়ি স্থানীয় পর্যায়ে রান্না করতে হবে বিধায় অধিক জনবল ও উপকরণের প্রয়োজন হবে, যার সংস্থান করা সরকারের পক্ষে বেশি কঠিন ও জটিল। (আমরা কি শপথ নিয়েছি যে শুধু সহজ আর সরল কাজগুলো করব)
৩। যেহেতু স্কুল ফিডিং কর্মসূচি মূলত গ্রামীণ স্কুলগুলোয় পরিচালিত হয়, সেহেতু স্থানীয় পর্যায়ে এর মান নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে সকলে মনে করেন (ডি, এল রায়ের নন্দলাল একদা বলেছিলেন, ‘আমি না দেখিলে কে দেখিবে...।’ ঢাকাস্থ কর্মকর্তা ছাড়া খিচুড়ির মান নিয়ন্ত্রণ কেউ করতে পারবে নাÑ এটা শুধু নন্দলালরা ভাবতে পারেন। সে জন্যই হয়ত তাদের ‘তাই শুয়ে শুয়ে কষ্টে বাঁচিয়া’ থাকতে হবে।)
৪। বিস্কুটে যে পুষ্টিমানের নিয়শ্চতা থাকে, তা খিচুড়িতে দেয়া সম্ভব নয়। (কেন? কীসের ভিত্তিতে এই উপসংহার)
৫। গ্রামীণ পরিবেশে বাচ্চারা খিচুড়ি প্রায়ই তাদের বাড়িতে খেয়ে থাকে বরং বিস্কুটের প্রতি তাদের একটা আকর্ষণ থাকে (প্রায়ই খিচুড়ি খেয়ে যদি তার প্রতি আকর্ষণ হারায় তা হলে রোজ বিস্কুট খেলে বিস্কুটের প্রতি আকর্ষণ থাকবে কি?)
৬। সর্বোপরি এমন কোনো জরিপ নেই, যাতে করে সরকার বুঝতে পারেÑ বিস্কুটের চেয়ে বরং খিচুড়ি বাচ্চারা অধিক পছন্দ করে এবং তা বেশি পরিমাণ পুষ্টির যোগান দিতে সক্ষম। (জরিপ নেই, জরিপ করুন কে বাধা দিয়েছে? সোজা কথায় শিশুদের জিজ্ঞাসা করুন তারা কি চায়)।
এসব বিতর্কিত বিষয়টি চাপা পড়ে যাচ্ছে সেটা হলো- বিস্কুট খেয়ে কেন শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়েছিল? তদন্ত কি বলে? কে তদন্ত করেছিলেন? তিনি কি আক্রান্ত শিশুদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তাদের বাবা মা বা যাদের দায়িত্বে তারা আছে তাদের ‘‘শুধায়ছিলেন’’ ঘটনা কি? শিক্ষকরাই বা কি বলেন? ইত্যাদি নানা প্রশ্নের জট না খুলে আবার বিস্কুটে ফিরে যাওয়া কতটা বিবেক প্রসূত হবে? এর জবাব কে দেবে? আম মিষ্টি হয় পাকলে আর আমলাদের বিবেক খোলে অবসরের সর খেতে খেতে। অতএব যারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাদের বিবেকের কাছে আবেদন-নিবেদন করে কোনো লাভ নেই। তাদের মতেই সব কিছু হবে।
এই ‘মত’-এর সংজ্ঞা দিয়েছেন উপমহাদেশের বিখ্যাত শিক্ষাবিদ কবি মেঘনাপুত্র চাঁদপুরের সন্তান শঙ্খ ঘোষ :
‘...এতো দিন কি শিখেছি একে একে বলি শুনে নাও
মত কাকে বলে, শোনো। মত তা-ই যা আমার মত
সেও যদি সায় দেয় সেই মত তবে সে মহৎ,
জ্ঞানীও সে, এমনকি আপনলোক, প্রিয়। তার চাই
দু’-পাঁচটি পালক লাগানে টুপি, ছড়ি, কেন না সে
আমার পাশেই থাকে আমার মতের পাশে পাশে...’
এই যখন অবস্থা তখন বিস্কুটের বিরুদ্ধে মত দেয়ার ঝুঁকি কে নেবে? আমাদের বাঙ্গাল ভাষায় :
‘ব’সে কইচে তাই
আর কোন যুক্তি নাই...’
কিন্তু যুক্তি আছে বিস্কুটের বিপক্ষে। এটা শুনতে হবে। ‘ও আমার ভালো খোদা’ বলে পাশ কাটানো যাবে না। পাঠকরা জানেন এই বিস্কুট যক্ষ্মা রোগীকে ওষুধ খাওয়ানোর মতো শিক্ষকের সামনে খেতে হয়। যখন শিক্ষক বলবেন আর যখন তার দেখার সময় হবে তখন। খিদে পাক বা না পাক। খাবার ইচ্ছা হোক বা না হোক । ওষুধ বানানো হয়েছে এই বিস্কুট সমাধানকে। আপনাদের হয়ত মনে আছে একবার এক শিশু তার বাড়িতে থাকা ছোট ভাইয়ের জন্য বিস্কুট না খেয়ে লুকিয়ে রেখেছিল পকেটে। জানা জানি হয়ে যাওয়ার পর প্রধান শিক্ষক তাকে এমন প্যাদানি দিয়েছিলেন যে শিশুটিকে হাসপাতালে নিতে হয়। শিশুটি আর হাসপাতাল থেকে ফেরেনি। কেন ফেরেনি সে বিতর্ক নাই বা করলাম। কারণ ইতোমধ্যেই ‘মত’ দেয়া হয়ে গিয়েছে। শঙ্খ ঘোষ বলেছেন, ‘মত তা-ই যা আমার মত....’। এ রকম নির্যাতনের ঘটনা আরো আছে। খবরে সব আসে না।
গ্রামের অনেক স্কুলে এখন শিশু শ্রেণী খোলা হয়েছে। এইসব শিশুর ঠাঁই হয়েছে স্কুলের দাওয়াই বা বারান্দায়। এ সব ভবিষ্যত ছাত্র-ছাত্রীরা উঁকি দিয়ে দেখে ঘরের ভেতর বড় ভাই-বোনরা বিস্কুট খায়। তাকিয়ে থাকে নতুন শিশুর দল। চোখের সামনে দেখে বুক ফাটা বৈষম্যের ছবি। কি শেখাচ্ছি আমরা? সবশিশুকে বিস্কুট দেয়ার বিষয়ে কয়েকবার দেনদরবার করার কথা শুনেছি। দাতা সংস্থা একই উত্তর দিয়েছেন বার বার নানা ভাবে। ‘‘করার কিছু নেই, সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছে, শিশু শ্রেণীর শিশুরা মূল স্কুলের অংশ নয়। আমরা পারব না।’’ কে বোঝাবে কাকে? ইংরেজিতে একেই বলেÑ ‘‘If I am not interested then nobody can make me interested.’’। সাধু! সাধু!!
খিচুড়ি রান্নার উপকরণ, জনবল, মাননিয়ন্ত্রণ, পুষ্টিমান ইত্যাদি নিয়ে যেসব যুক্তি এখন দেখানো হচ্ছে তার কোনোটাই কিন্তু খিচুড়ির পক্ষে বাধা হতে পারে না। পাশের রাষ্ট্র (আমি ভারতের দালাল নই) ভারতে ‘‘অঙ্গন বাড়ি’’ নামে একটা প্রাক স্কুল কর্মসূচি আছে। স্থানীয় মায়েদের সম্পৃক্ত করে সারা ভারতে শিশুদের পুষ্টি বৃদ্ধির এই কর্মসূচি খুবই সফলভাবে চলছে। খিচুড়ি রান্নার জনবল এমনকি হাঁড়ি-পাতিল এবং কাঠখড়িও গ্রামের মানুষ পালা করে যোগায়। মায়েরা দল বেধে দিন ভাগ করে নিয়েছেন। কে কবে এসে শিশুদের খাওয়াবে। শিখিয়ে দেয়া হয়েছে; কেমন করে স্থানীয় উপাদান দিয়ে বিভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন ভিন্ন তরিকায় সুস্বাদু আর পুষ্টিকর খিচুড়ি বানানো যায়। কোনো কোনো মায়ের হাত যশ ভালো, তাঁরা রাঁধেন ভালো। শিশুদের আনন্দ বাড়ে তাদের দেখে। তবে আস্তে আস্তে সব মায়ই শিশুদের পছন্দ বুঝতে শিখেছেন। খিচুড়ি একমাত্র খাবার যার পুষ্টিমান বজায় রেখে নানা স্বাদে নানা রঙ এ রান্না করা যায়। একঘেয়েমির আশঙ্কা থেকে শিশুকে দূরে রাখা যায়।
ও আমার ভালো খোদা- আমি এসব কাকে বলছি। শঙ্খ ঘোষের বাণী বাজে কানেঃ
‘‘আর যা ঘটবার তা ঘটতে থাকে
আর আমাদের প্রতিবাদগুলো খেলা করে
আমরা গুমরাই, গান গাই
আমরা কথা বলি, পিঁপড়া হয়ে এগোই
যা ঘটবার তা ঘটতে থাকে
আমরা প্রতিবাদ করি
করতে করতে ঘুমাই
ঘুমুতে ঘুমুতে কথা বলি
যা ঘটবার ঘটতে থাকে
ঘটতে থাকে...’’
আহা আমার পিছনে বা পাশে যদি দু’একটা সর খাওয়া অবসরপ্রাপ্ত আমলা থাকতেন তাদের সদ্যমুক্তিপ্রাপ্ত বিবেক নিয়ে তা হলে হয়ত কোনো একটা টকশো’ এই বিস্কুটের বিষয়টি তোলা যেত।
[email protected]
সূত্রঃ Click This Link