১৯৯২ সালে গণ আদালত সংগঠন, তারপর সেই গণ আদালত বিষয়ে আইনগত বৈধতা আর দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরী করনের সরকারী অভিযোগ আর তৎ পরবর্তী কালে তাগো মৌনতায় আমরা আসলে মনে করতাম এই দেশে একসময় সরকার বা রাষ্ট্রীয় সংগঠনরে যুদ্ধাপরাধীগো বিচার করনের পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করা যাইবো। জনস্রোত দেখাইয়া এইসব দুর্নীতি আর ধান্দাবাজীতে নিমগ্ন সরকার বা রাষ্ট্ররেও ভয় পাওয়াইয়া দেওন যায়...সেই আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হইতাম আমাগো কার্যক্রম নির্ধারণে। রাষ্ট্র বা সরকারের মৌনতারে আমরা ধইরা নিতাম দূর্বলতা হিসাবেই...সেই দূর্বলতার শিকড় আমরা উপড়াইয়া ফেলতে সক্ষম বইলাই ভাবতাম।
কিন্তু এই দূর্বলতার শিকড়ের সন্ধান আমরা এখনো করতেছি। তারা সকলেই যুদ্ধাপরাধীগো বিরুদ্ধে বক্তব্য দ্যায়...এই দেশের স্বাধীনতা আর মুক্তির যুদ্ধ নিয়া আহা-উহু করে...কিন্তু যুদ্ধাপরাধীগো বিচারের প্রশ্নে তারা মৌন থাকেন...কারনটা কি! মৌনতা এইখানে কিসের কৌশল...কৌশলটা খুব পুরানা আর সরল সেইটা উপলব্ধি করতে খুব বেশি পরিশ্রম লাগে না। আসলে যুদ্ধাপরাধীগো বিচারের বাসনা কখনোই তৈরী হয় না আমাগো শাসকগোষ্ঠীর...তারা এই সেন্টিমেন্ট দিয়া তাগো রাজনৈতিক ব্যবসার একটা পণ্য কনসেপ্ট তৈরী করে। সময়ে সময়ে যার বাজারজাত হয়।
ক্ষমতার বাইরে যেই মানুষগুলির প্রধান উপজীব্য হয় যুদ্ধ আর যুদ্ধাপরাধ, তারাই এই দেশে ক্ষমতায় আরোহনের পর মৌনবালক হয়। কারন তারা ঐটার সহযোগেই তাগো ক্ষমতার চর্চ্চা করে...যুদ্ধাপরাধীরা তাগো ক্ষমতার গুটি হিসেবে ভালোই দাঁড়ায়। আবার জনগণরেও সম্ভাবনায় রাখন যায়...তয় একটা পক্ষ আবার যুদ্ধাপরাধীগো খুব নিকটবর্তী হওনে একটু অন্য কৌশলে আগায়...তারা কয় ৩৬ বছর বছর পার হইয়া যাওনের পর ক্যান পুরান কাসুন্দি ঘাটনের প্রয়োজন পড়ে। আমরা সকলেই জানি এই বাক্যও আসলে প্রসঙ্গান্তরের বাক্য...এই বচনে আসলে কিছু বলা হয় না...যুদ্ধাপরাধীরা মাঝখান থেইকা ফায়দা লুটে...তারা এই ভিন্নধর্মী নীরবতার সুযোগ লইয়া নিজেরাই নিজেগো পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করে।
৩৬ বছরের এই তত্ত্ব দিয়া আসলে কখনোই নিজেগো যুদ্ধাপরাধীগো পক্ষের শক্তি প্রমাণ করতে চায় না এই গোষ্ঠী...তাগো এজেন্ডা বাস্তবিক মৌনতায়...তারা অপরপক্ষরে দুষে...যে এই পক্ষ আসলে মৌন থাকে, এই পক্ষ আসলে যুদ্ধাপরাধীগো বিচারে আগ্রহী ছিলো না কোন কালে...যেই ধোঁয়াটে বচন আমাগো মধ্যে মিথ্যা আশ্বাস জোগায় এরা বোধহয় যুদ্ধাপরাধ নিয়া অতোটা অনাগ্রহী না। কিন্তু বাস্তবতা নিহিত অনেক অন্তরালে...
এই অন্তরালে যাওনের আগ্রহ আমার তেমন নাই আজকাল...এই অন্তরালরে আমি চিনি মনে হয়। আমি জানি যুদ্ধাপরাধীগো বিচাররে যেমন এক অংশ পণ্য বানায়...এই অন্তরালও সেইরম পণ্য বানানের সম্ভাবনারে মুক্তপ্রান্ত রাখে। তারা যুদ্ধাপরাধীগো সাথে কোয়ালিশন কইরাও কইতে চায় আমরাও কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, আমাগো নেতাও মুক্তিযুদ্ধে বড় ভূমিকা রাখছিলেন...
জনগণ যুদ্ধাপরাধীগো বিচার চায় কি না সেইটা নিয়া আমি প্রশ্ন তুলনের অধিকার রাখি না...১৯৯২ সালে গণ-আদালতের সময়ে যখন সংশপ্তক বাহিনীতে নাম লেখাইছিলাম, তখন দেখছি-টের পাইছি মানুষের হৃদয় তন্ত্রীতে কিরম আবেগ জড়ায় এই প্রসঙ্গ। মানুষের মনে যুদ্ধাপরাধীগো নিয়া কোন সহানুভূতি নাই...তারা কেবল বিভ্রান্ত হয় ক্ষমতায় থাকা না থাকা রাজনৈতিক দলগুলির কৌশলের কারনে। জনগণ হাতের লাঠিরে কেরম আগ্নেয়াস্ত্র হিসাবে ভাবে সেইটা নিজচোখে দেখা আমার...এখনো নিজের পেশাগত কারনে অনেক নতুন প্রজন্মের সাথে দেখা হয় পরিচিতি হয়...খুব কমজনরেই দেখছি এই বিষয়ে নেতিবাচক ভাবনা আছে...দারিদ্রপিড়ীত মানুষ তার ভাতের অধিকারের লগে যুদ্ধাপরাধীগো বিরুদ্ধেও অবস্থান জানায়...যদিও দলবাজীর কারনে এইসব যুদ্ধাপরাধীরা পার পাইয়া যায় অনেক সময়...তারা ক্ষমতাকেন্দ্রীক দলগুলির সাথে গাটছড়া বাইন্ধা নিজেগো অস্তিত্বশীল রাখে। তারা বিভ্রান্তির আভরণ চড়ায় গায়ে...যাতে আমরা যারা ইগনোরান্ট জনগণ, তারা বিভ্রান্ত হই নিমেষে।
আর মৌন থাকেন ক্ষমতার মানুষেরা...মৌনতা মানে আসলে অস্থিরতা...আমরা অস্থিরতায় হতাশ হইয়া কোন এক সময় আর কোন দাবী রাখবোনা প্রকাশ্যে...ক্ষমতায় থাকা মানুষেরা, রাষ্ট্র আর সরকারে থাকা মানুষেরা পাকাপোক্ত রাখতে চায় পাটাতনরে...যেনো পাটাতন অটুট থাকে। পাটাতনে যেনো স্থিরতা থাকে...কেবল তারা নাড়াইলেই যা মেরুদন্ড সোজা কইরা দাঁড়াইবো...ব্যবসাটা খারাপ না...কি কন...