সাম্প্রতিক সময়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রধান আলোচ্য বিষয় হলো জামাত নিষিদ্ধ করণ প্রসঙ্গ। রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র তথা বাংলাদেশের প্রাণকেন্দ্র জাতীয় সংসদে এমপি মন্ত্রীরা তুমল সমালোচনার ঝড় তুলছেন, আজই জামাতকে নিষিদ্ধ করা হোক। খুব ভালো কথা। নিষিদ্ধ করতে হলে করুন। কিন্তু দাবীটা কার কাছে জানাচ্ছেন সেটাই চিন্তার বিষয়। কারণ ক্ষমতার চাবিকাঠি এখন আপনাদের হাতে। সেই সাথে আরো লক্ষনীয় যে, দু'জন জামানত হারানো হেভিওয়েট সংসদ সদস্য এই দাবী আদায়ে সর্বদা সোচ্চার ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। শুধুমাত্র নৌকার লাইফ সাপোর্ট নিয়ে ওনারা নামের আগে জীবনে অন্ততঃ একবার সংসদ সদস্য উপাধি লাগাতে পেরেছেন এটাইবা কম কিসে?

বাংলাদেশের গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান এমপি বলেছেন- "জামায়াত নামক কীট কখনো মানুষ হইতে পারে না" খুব ইন্টারেষ্টিং! মানুষের নতুন এই সংজ্ঞা আমাদের জাতীয় পাঠ্যসূচীতে অন্তর্ভূক্ত করা হোক।

এবার আসি মিডিয়া প্রসঙ্গে। বাংলাদেশের বহুল প্রচলিত কমদাম পত্রিকা বাংলাদেশ প্রতিদিন, আমাদের সময় প্রতিদিনই জামাত-শিবির নিয়ে আলাদা সম্পাদকীয় এবং কলাম লিখছেন। এই সব রিপোর্টের মূল বিষয় বস্তু জামাত-শিবিরকে কিভাবে নিষিদ্ধ করা যায়, তার প্রাঞ্জল বয়ান আমরা জানতে পেরেছি। দেশের ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে পরিচিত অপরিচিত বুদ্ধিজীবীগণ এই বয়ান হাজির করছেন, বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা জামাত শিবির। তাই এদের নিষিদ্ধ করলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

সাংবাদিক বুদ্ধিজীবীগণ জাতির বিবেক। তাই ওনাদের কথায় কিছুটা আশান্বিত হলাম। কারণ এ জাতির প্রধান সমস্যা ওনারা এতদিনে উদ্ধার করতে পেরেছেন। স্রষ্টার অশেষ শুকরিয়া আমরা এতদিনে জাতির প্রধান সমস্যা উদ্ধার করতে পেরেছি।

বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদে, একজন নাগরিকের পাঁচটি মৌলিক চাহিদা পুরণ রাষ্ট্রের দায়িত্ব বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু তাই নয় সামাজিক আভ্যন্তরিন নিরাপত্তার দায়িত্বও রাষ্ট্রের বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পর বাংলাদেশ সংবিধানের এই বিধান কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে তা চিন্তা করার জন্য রাষ্ট্রের নাগরিকদের হাতে ছেড়ে দিলাম।

ক্ষমতায় গিয়ে জনগণের সম্পদ লুটপাট, হত্যা,ধর্ষন (সেঞ্চুরীরও ইতিহাস আছে), উগ্র সাম্প্রদায়িকতা (তথা রাজপথে মানুষ মেরে জঙ্গি নৃত্য প্রদর্শন) এসব কি জামাত শিবিরের ক্যাডাররা করেছেন, নাকি চোর ডাকাত বদমাশরা জনগণের প্রতিনিধি সেজে এসব অন্যায় করেছেন সেটাও বিবেচার ভার সচেতন নাগরিকদের হাতে ছেড়ে দিলাম।

এখন আমাদের দেশের প্রধান সমস্যা জামাত ইসলামী। এদের নিষিদ্ধ করতে পারলেই আমরা ক্ষুধা দারিদ্র সহ সকল সমস্যার সমাধান করতে পারব বলে বুদ্ধিজীবী এবং এমপি মন্ত্রীদের মারফতে জানতে পেরেছি।

তাই জামাত নিষিদ্ধ করলে সব সমস্যার সমাধান যেহেতু হয়ে যায়, তাই আসুন আমরা সবাই মিলে দাবী করি"জামাত-শিবির নিষিদ্ধ করা হোক"

কিন্তু তার মুরদ যে আওয়ামী সরকারের নাই। একথা ছোট্ট শিশুটিও জানে। তাই যে লাউ সে কদু।