ছাত্রশিবির পরিচালিত রাজধানীর ফার্মগেট এলাকার দুটি কোচিং সেন্টারে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।
আমাদের সামাজিক ন্যায় অন্যায় এর রীতি নীতি ছাড়াও আইন আদালত এর পরিসীমার মাঝেই আমাদের জীবন যাপন। এই জীবন যাপনের মাঝে আমরা কাউকে অন্ধ আবার কাউকে মুক্ত চিন্তার অধিকারী বলে দাবী করে থাকি। মুক্ত চিন্তা মানেই সাম্প্রদায়িক চিন্তা চেতনা থেকে মুক্ত।
সাম্প্রদায়িকতা মানে কি? সাম্প্রদায়িকতা মানে হচ্ছে কোন সম্প্রদায়ের প্রতি অন্ধ হয়ে ন্যায় অন্যায়ের বোধ অবলুপ্ত হয়ে যাওয়া। সাম্প্রদায়িকতা মানেই হচ্ছে উগ্রবাদ এর মাঝে বসবাস করা। প্রশ্ন হচ্ছে যদি আমরা বিশ্বাস করি আমরা উদার নৈতিক চেতনার অধিকারী মানুষ? তাহলে সেই গোষ্ঠী কারা? তাদের পরিচয় কি? তাদের অস্তিত্ত্ব কি বাংলাদেশে বর্তমান আছে?
আমাদের দেশের বৃহৎ মিডিয়ার এক শ্রেনীর বুদ্ধিজীবি আছেন যারা বুদ্ধি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে সেই সাথে চিন্তা চেতনা এবং স্বাধীন সত্ত্বাকে তারা বিক্রি করে ফেলেন। ফলে তাদের অধিকাংশেরই চিন্তা সাম্প্রদায়িকার দোষে পরিদুষ্ট।
আর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যদি চিন্তা করি তাহলে একটু বিশ্লেষন করা প্রয়োজন। যারা মনে করেন ধর্ম নিরপেক্ষ চেতনা মানে মুক্ত চিন্তা এবং সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত চিন্তা। কিন্তু কথাটা কতটা বাস্তব সম্মত? নিজেদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই তাকে হত্যা করতে উদ্যত হওয়ার চেয়ে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আর কারা হতে পারে? প্রকাশ্যে রাজপথে মানুষ মেরে তার উপর নৃত্য যারা করে, তাদের চেয়ে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আর কে হতে পারে?
আমাদের দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা এমন যে, জামাত-শিবির যে কোন ন্যায় সঙ্গত দাবী করলেই সেটা আইন শৃংখলার অবনতি। অন্যদিকে গত চার বছর ধরে ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা একের পর এক হত্যা, ধর্ষন, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী লুটপাট করলেও তারা হচ্ছে মহান এবং পাক পবিত্র চেতনার অধিকারী। তাই সকল আইন আদালতের উর্ধ্বে ছাত্রলীগের অবস্থান।
অন্যদিকে ইসলামী ছাত্র শিবির কোন অন্যায় না করলেও মিডিয়া এবং বুদ্ধিজীবীদের কাছে তারা হলো জঙ্গি এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক! ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতার হাত পায়ের রগ কারা কেটেছে, তার কোন আইনী অনুসন্ধান ব্যতিরেকে সংবাদ মাধ্যম এবং আওয়ামীলীগ প্রচার করে যাচ্ছে এটা জামাত শিবিরের কর্ম। তাই তাদের ধরো মারো। পুড়িয়ে দাও। তোমার কোন বিচার হবে না। কারণ স্বয়ং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বাংলাদেশের আইন আদালত এবং সংবিধানের তোয়াক্কা না করে জামাত শিবিরকে প্রতিরোধের গুরু দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীদের হাতে।
আর তাই ছাত্রলীগের তান্ডবলীলায় পুড়ে যাচ্ছে গোটা বাংলাদেশ। মারখাচ্ছে ইউনিভার্সিটির সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ। ভংচুর হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ধ্বংস করা হচ্ছে জামাত শিবির পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এর শেষ কোথায়? উগ্র সাম্প্রদায়িক চেতনার ধারক বাহক ছাত্রলীগকে কোন আইনের বলে এই ধ্বংস যজ্ঞ চালালোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তা জাতিকে আজ জানতে হবে। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী! কোন আইনের বলে ছাত্রলীগকে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে, তা আমাদের একটু জানান প্লিজ....
মনে পড়ছে ওয়ারফেইজের অসামাজিক গানটি-
জানালার বাইরে দেখি
কত রঙ কত উৎসব
পর্দার আড়ালে থেকে
দেখি আমি সব
আসতে চাই না আমি
বাইরে মাঝে সবার
নিজেকে ভাবি না আমি
তোমাদের আরেক জন
বিক্ষোভে ভাষা হারিয়ে
উন্মাদ আমার মন
সবই মিছে তোমার তামাশা
নিয়মের মুখোশে
হে সমাজ আমি চাইনা তোমার আশ্রয়
হে সমাজ আমি হয়েছি আজ নির্ভয়...
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১:৫৫