somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনিবার্য সংঘাতঃ বিপর্যস্ত বাংলাদেশ

২৩ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


২৩ নভেম্বর খুলনা মহানগর জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয় ও রেটিনা কোচিং সেন্টারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়

বিস্তারিত এখানে
এক.
প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলে জ্বলে অঙ্গার হচ্ছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে বিপরীত রাজনৈতিক আদর্শের প্রতি হিংসাত্মক মনোভাবই এই সংঘাতের মূল কারণ। বর্তমান সরকারের মেয়াদ কাল আর মাত্র এক বছর। এখনো সংঘাতহীন কোন পথে আগামী নির্বাচনের কোন লক্ষনই দেখা যাচ্ছে না। নব্বই সালে সকল রাজনৈতিক দলের সমঝোতায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা গঠন করা হলেও বর্তমান সরকার আসার পরই পঞ্চম সংশোধনী বাতিল এবং ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের ভেতর দিয়ে রক্তপাতহীন ক্ষমতা হস্তান্তরের সকল পথই রুদ্ধ করা হয়েছে। সরকার বলছেন, এটা আইন অনুযায়ী করা হয়েছে। আচ্ছা আইন কি? এই বিষয় আমরা আরো আলোচনা করবো। মোট কথা হচ্ছে সরকারের একরোখা এবং একনায়ক সুলভ চিন্তার কারণে বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশে বিভীষিকাময় দিন ঘনিয়ে আসছে

দুই.

যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জামাত শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেপ্তারের পর থেকেই জামাতের উপর চলছে দমন নিপীড়ন আর হামলা-মামলা। সম্ভবত বিরোধী রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে এত বেশী মামলা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বাধীনতা পরবর্তী সময় হয়নি। যুদ্ধাপরাধ বিচারের প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু থেকে জামাত সহ আন্তর্জাতিক মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। সেই সব প্রশ্নের কোন মিমাংসা না করেই সম্পূর্ণ গায়ের জোর খাটিয়ে সত্য কে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বানিয়ে সরকার এই বিচার কার্যক্রম করছেন। কিন্তু মিথ্যাকে সত্য কিছু সময়ের জন্য বানিয়ে রাখা যায়, সব সময়ের জন্য নয়। যুদ্ধাপরাধ বিচারের অন্যমত ত্রুটি হচ্ছে, দেশের প্রচলিত স্বাক্ষ্য আইন প্রযোজ্য না হওয়া। ফলে যে কেউই ট্রাইবুনালে এসে মনের মাধুরী মিশিয়ে মিথ্যা বললেও সেটা আদালতের কাছে মহান সত্য কথা। এছাড়াও আরো যেসব ত্রুটি রয়েছে, তা নিয়ে জামাত সহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা থেকে বারবার সরকারের কাছে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলেও সরকার তা গ্রাহ্য করেননি।
আর শীর্ষ নেতাদের মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সহ বিভিন্ন দাবীতে জামাত যখন নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করছে, তখন পুলিশ এসে তাদের উপর হামলে পড়ছে। গ্রেপ্তার এবং নির্যাতন চালাচ্ছে। এতে চরম মানবাধিকার লংঘন হলেও অত্যন্ত বিস্ময়করভাবে সাম্প্রদায়িক বুদ্ধিজীবী শ্রেনী এবং মিডিয়া উল্টো জামাতের ঘাড়েই সব দোষ চাপিয়ে দিচ্ছে।

সরকার বলছে এটা আইন অনুযায়ী করা হচ্ছে। প্রখ্যাত আইনবীদের মতামত হচ্ছে-
Austin defined the law as “the command of the sovereign"
অর্থ্যাৎ আইন হচ্ছে সার্বভৌমের নির্দেশ। তথা আইন হচ্ছে শাসক শ্রেনীর নির্যাতনের হাতিয়ার। আইন সব সময় ক্ষমতাবানের পক্ষে। আর ফ্যাসীবাদী শাসক শ্রেনী যখন আইনের অপব্যবহার করে, তখন নির্যাতিত জনতা রাজপথেই তার মিমাংসা করে থাকেন। ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে বাঙালী অন্যায় এবং ফ্যাসীবাদ একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। এবং সত্যেরই বিজয় হয়েছে। ইতিহাসের এক নায়করা আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে যে ফ্যাসীবাদের বিকাশ দেখা যাচ্ছে, তাতে করে আগামী দিনগুলোতে সংঘাত এবং রক্তপাতের এক ধুসর মেঘ আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। আজকে যারা ক্ষমতার মোহে পড়ে, জামাত শিবিরের উপর এই নির্যাতন এবং জ্বালাও পোড়াও রাজনীতিকে সমর্থন করছেন, ইতিহাস স্বাক্ষী তাদের পরিনতি খুব নির্মম এবং দৃষ্টান্ত মূলক হয়েছে। কিন্তু ইতিহাসের চরম শিক্ষা হচ্ছে ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৩
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৃদ্ধাশ্রম।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৬



আগে ভিডিওটি দেখে নিন।

মনে করেন, এক দেশে এক মহিলা ছিলো। একটি সন্তান জন্ম দেবার পর তার স্বামী মারা যায়। পরে সেই মহিলা পরের বাসায় কাজ করে সন্তান কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

টের পেলে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৭

টের পেলে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

টের পেলে গুটিয়ে যায় লজ্জাবতী/ পরিপূর্ণ যৌবনে যুবতীর নিখুঁত অনুভূতি। আমার চাওয়া, ইচ্ছে, স্বপ্ন! আমার পছন্দ বুঝদার, সুন্দর হৃদয়ের রূপ! সৌন্দর্য সুন্দর যা চিরন্তন সত্য। কিন্তু সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×