বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে সাম্প্রদায়িক এবং উগ্রবাদী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তারা মনে করে মহান মুক্তিযুদ্ধ তাদের দলীয় সম্পত্তি। তাই মুক্তিযুদ্ধের সুফল একমাত্র আওয়ামী লীগই ভোগ করবে, ১৬ কোটি মানুষের জন্য স্বাধীনতা নয়। স্বাধীনতা পরবর্তী আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইতিহাসের দিকে তাকালেই বিষয়টা সুস্পষ্ট হয়।
আমরা ইতিহাসের দিকে না গিয়ে বর্তমান সময়কে একটু বিশ্লেষণ করতে চাই। বিরোধী ১৮ দলীয় জোটের গত রোববারের রাজপথ অবরোধ কর্মসূচির সময় রাজধানীর পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে একদল ছাত্রলীগকর্মী বিশ্বজিৎ দাসকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও লাঠি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। দেশের সমগ্র মিডিয়াতে মানুষ এই মর্মান্তিক এবং হত্যাকান্ডের দৃশ্য অবলকন করে। চারিদিকে ধিক্কার পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগ মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার করে, যাতে এই বিভৎষ হত্যাকান্ড থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ফিরিয়ে নেয়া যায়।
কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এই হত্যাকান্ডের কার্যকর কোন আইনগত পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান হয়নি। আজ ছাত্রলীগ নামের দানবদের অত্যাচারে দেশের মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত। খুন-ধর্ষন, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী সহ এমন কোন অপকর্ম নেই, যার সাথে ছাত্রলীগ নামের পাষান্ডদের উপস্থিতি নেই।
একটু ভিন্নভাবে যদি চিন্তা করি-
আজ যদি এই হত্যাকান্ড জামাত-শিবির করতো-
=> সারা দেশে পুলিশ র্যাবের বিশেষ অভিযান চলতো এবং হাজার হাজার নেতাকর্মীকে বিনা অপরাধে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয়া হত।
=> জামাত-শিবির অফিস এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে আগুন দেয়া হত।
=> স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ে নাশকতার আশংকায় জরুরী বৈঠক বসত।
=> প্রথম আলো সহ দেশের বৃহৎ মিডিয়াগুলো এর সাথে জঙ্গি কানেকশন খুঁজে পেত।
=> জাফর ইকবাল নতুন আর্টিকেল লিখতেন।
=> সুশীল বুদ্ধিজীবীরা এর সাথে ৭১ এ স্বাধীনতা বিরোধীতার সম্পর্ক খুঁজে পেতেন।
সুশীল বুদ্ধিজীবীরা সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি খুঁজে পেতেন, সেটা হলো-----
"সাম্প্রদায়িক ধর্মান্ধ রাজনীতির কুফল এবং সংখ্যালঘু নির্যাতন"
কিন্তু এই বিভৎষ হত্যাকান্ড দেশের সোনার ছেলেরা করেছে। তাই গণমাধ্যমে কিছু দায়সারা মিউ মিউ টাইপের রিপোর্ট করা ছাড়া আর কিছুই প্রকাশিত হয়নি। সবাই শান্ত নীরব। যেন কিছুই ঘটেনি।
কারণ এরচেয়ে বড় হত্যাকান্ড ২৮ শে অক্টোবর সাম্প্রদায়িক আওয়ামী লীগ রাজপথে ঘটিয়েছে। এবং সেই হত্যাকান্ড সমগ্র জাতির সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটানো হয়েছে। আজও সেই হত্যাকান্ডের কোন বিচার হয়নি।
সম্প্রদায়িকতা মানে কি?
সাম্প্রদায়িকতা মানে হচ্ছে, কোন মতাদর্শের প্রতি অন্ধ হয়ে, বিপরীত মতামতকে সহ্য করতে না পারা। এবং উগ্রবাদী আক্রোশে বিপরীত মতাদর্শের প্রতি ঝাঁপিয়ে পড়া। অসহিষ্ণু এবং উগ্রবাদী চেতনাকে লালন করার নাম সাম্প্রদায়িকতা। আর এই দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের প্রধান সাম্প্রদায়িক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং তাদের সোনার অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা।
সামু ব্লগ প্রসঙ্গঃ
বাংলাদেশের বৃহৎ ব্লগ সামহয়্যার ইনব্লগ। এখানে অনেক চিন্তাশীল এবং প্রতিভাবান ব্লগারের সম্মিলন। এখান থেকে জন্ম নিবে আগামীর সমাজ সংস্কারক এবং বিপ্লবী। কিন্তু এখানে গত কয়দিন ধরে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির চেঁচামেচি অসাম্প্রদায়িক চেতনার ব্লগারদের আশাহত এবং চিন্তিত করেছে। সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর দাবী, এখানে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যকোন চেতনার ব্লগাররা এখানে লিখতে পারবে না। এই দাবীতে অনেক পোষ্ট লেখা হয়েছে।
তাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই- সাম্প্রদায়িক আওয়ামী লীগের অপতৎপরতার কাছে দেশের সমস্ত সম্ভাবনাই কি হারিয়ে যাবে? বিশ্ব জিতের মত এভাবে কি বিপরীত চেতনাকেও হত্যা করা হবে? আর আমরা আড়ালে দাঁড়িয়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনার গান গাইব?
সত্যি সেকুলাসের বাংলাদেশ! সত্যি অদ্ভুত বাংলাদেশ!
যদি অপর মতামতকে সহ্য করতে না পারেন, তাহলে কিসের অসাম্প্রদায়িকতা?
জনগন আজ সাম্প্রদায়িক আওয়ামী লীগের অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি চায়
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৩২