somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ভার্চুয়াল কবি
মৃত্যুক্ষুধা, শব্দক্ষুধা, ছন্দক্ষুধা, পতনক্ষুধা, জাগরনক্ষুধা, বিলাসিতারক্ষুধা, না-পাওয়ারক্ষুধা, হারানোরক্ষুধা, আকাঙ্ক্ষারক্ষুধা, খাদ্যক্ষুধা, প্রেমেরক্ষুধা, ভালবাসারক্ষুধা, আহ্লাদীক্ষুধা ------------ আমার জীবনটাই ক্ষুধাময় !

খুনীদের স্বর্গঃ বাংলাদেশ

০২ রা মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নতুন ফ্যাশন চালু হইছে !
চাপাতি নিয়া আসো, কাউকে এলোপাথারি কোপাও, মৃত্যু নিশ্চিত করে " আল্লাহ হু আকবর " স্লোগান দিতে দিতে চলে যাও । ব্যস, এবার তুমি নিশ্চিন্ত । তোমাকে কেউ আর কিচ্ছুটি বলবে না। না পাবলিক, না সরকার, না প্রশাসন !

চাপাতি নিয়া আসো, কাউকে এলোপাথারি কোপাও, মৃত্যু নিশ্চিত করে, পালিয়ে যাও । এবং তারপর রটিয়ে দাও যাকে মারা হইছে সে নাস্তিক ছিল । ব্যস , আর কোন চিন্তা নাই । এবার নাকে সরিষার তেল দিয়া ঘুমাও ।

চাপাতি নিয়া আসো, কাউকে এলোপাথারি কোপাও, মৃত্যু নিশ্চিত করে, পালিয়ে যাও । তারপর রটিয়ে দাও, ঐ লোক নবী ও ইসলাম কে নিয়া কটুক্তি করছিল, তাই কতল করা হইছে । ব্যস, তুমি নিশ্চিত ।

আর এরপর আবার এখন যোগ হইছে, আইসিস । রটে যাক, এটা আইসিসের কাজ কিংবা দায় স্বীকার করে নিক আইসিস । তাহলেই ষোল কলা পূর্ণ । আর কোন টেনশন লইয়ো না। নিশ্চিন্তে খাও-দাও-ঘুমাও। বাকীটা পেপারালারা , টেলিভিশনালারা, নিউজ এডিটররা, সাংবাদিকরা করে দিবে ।

আর এইরকম চিন্তার পিছনে বাকী হাওয়াটুকু আমাদের দায়িত্বশীল মিডিয়া দিয়ে থাকে । তাদের নিউজ কাভার দেখলেই মনে হবে, না এই কথাই ঠিক বাকী সব ধইঞ্চ্যা ! যেমন নিউজ হেডলাইনঃ
১। ধর্মীয় অবমাননা মামলার আসামী খুন ।
২। নবী ও ইসলাম কে নিয়া কটুক্তি করায় টাঙ্গাইলের দর্জি খুন।
৩। নবী মোহাম্মদ (সাঃ) কে বাজে কথা বলায় খুন হল টাঙ্গাইলের পঞ্চাশোর্ধ দর্জি ।
এখানে পত্রিকাগুলো ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে ধর্মীয় সুড়সুড়ি দিয়ে দেয় ।তারা আর এই খুনের কোনরকম বিরোধীতা করে না, বরং মনে মনে খুশী হয়। তার মানে এইরকম হেডলাইন লিখে/বলে পত্রিকাগুলো/নিউজ চ্যানেলগুলো মূলত খুনীদের আরও বেশি বেশি খুন করতে উদ্ভুদ্ধ করে ! কিন্তু সাংবাদিকদের কাছ থেকে আমরা একটা সত্যিকারের খবর আশা করি । তাদের উচিৎ ঘটনার যথার্থ সত্যতা অনুসন্ধান করে উপস্থাপন করা। যেমন, টাঙ্গাইলের ঘটনা।

মূল ঘটনায় আসিঃ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে নিখিল চন্দ্র ডুবাইল বাজারে বাড়ির সামনে নিজের দোকানে কাজ করছিলেন। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে তিনজন যুবক এসে তাঁকে দোকান থেকে টেনে বের করে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। মাথা ও গলায় কুপিয়ে নিখিলের মৃত্যু নিশ্চিত করে হামলাকারীরা সুতী কালিবাড়ী সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় তারা ঘটনাস্থলে একটি ব্যাগ ফেলে যায়। ব্যাগের ভেতর ককটেলের মতো কয়েকটি বস্তু ছিল।

খুন হয়ে যাওয়া নিখিলের মেয়ের ভাষ্যমতে তার বাবার নামে ২০১২ সালে এক গুজবের ভিত্তিতে হেফাজত, জামায়াত ইসলামী নিখিলের বাড়িঘর ও দোকানপাঠ ভাংচুর করছিল। তখন নবীকে নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে থানায় মামলা হইছিল । পরে পুলিশি তদন্তে ঐ অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমান আদালত তাকে তিন মাসের কারাদন্ড দেয়, ২ মাস ২৪ দিন পর সে জামিনে মুক্ত হয়ে কিছুদিন পলাতক ছিল জীবনের ভয়ে, জীবন বাঁচানোর তাগিদে । কিন্তু চার বছর পর হইলেও সেই জীবন আর বাঁচাতে পারেনি নিখিল ।
তার এলাকার বিভিন্ন মানুষের(বিভিন্ন ধর্মের) মতামত অনুযায়ী নিখিল খুব ভালো লোক ছিল, ২০১২ সালের একটা গুজব ছাড়া তার জীবনে আর কোন দোষ নাই । এমনকি সে উচ্চস্বরে কোনদিন কারও সাথে কথাও বলে নাই ।

তাহলে তাকে খুন করা হল কেন ??????

এরকম প্রত্যেকটা খুন হয়ে যায় নীরবে। হোম-মিনিস্টার সহ প্রশাসনের লোকজন আবাল মার্কা কথাবার্তা বলে দায়িত্ব এড়িয়ে যায় । শান্তি প্রতিষ্ঠার দোহাই দিয়ে চাপাতিবাজি চলতে থাকে। ধর্মীয় অনুশাসন, কমন দুই একটা ধর্মীয় স্লোগান দিয়ে পার পেয়ে যায় খুনীরা । পুলিশ প্রশাসন প্রায় প্রত্যেকবার একই নাটক মঞ্চায়ন করে যায় । এই যেমনঃ একটা দুইটা আসামী ধরবে. চিন্তিত মুখে পত্রিকায় ইন্টারভিউ দিবে। হয়ে গেল দায়িত্ব পালন । খুনীদের সাজা তো দুরের কথা, কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর ও প্রয়োজন হয় না ! শুধু বিচার হয়, বঙ্গবন্ধুর খুনীর, প্রধানমন্ত্রী পুত্রের সাথে ঘটিত ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত লোকদের । অথচ রাজাকারের কিংবা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে সাধারন মানুষের আন্দোলন করার প্রয়োজন হয়। এমনি এমনি বিচার হয় না। প্রধানমন্ত্রী আপনার ছেলেই ছেলে, বাকী বাংলার কোটি কোটি মায়ের ছেলেরা কি ছেলে নয় ? খুনের ষড়যন্ত্রের বিচার হয় আপনার ছেলের বেলায়, বাকি মায়েদের বুক খালি হয়ে যায় কিন্তু সর্বনাশা বিচার আর হয় না ।
খুনীদের যদি বিচার না হয়, ধৃত না হয়, তবে বাংলাদেশ খুনীদের স্বর্গ নয়তো কি ?
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০১৬ দুপুর ১:০৩
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×