somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোনো রাজনীতিবিদ যদি এভারেস্ট জয় করতেন. . . ;) ;) ;) ;) ;)

০৪ ঠা জুন, ২০১২ সকাল ১০:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সম্প্রতি এভারেস্ট জয় করেছেন বাংলাদেশের দুই নারী। এই দুজনের বদলে যদি বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের যেকোনো দুই রাজনীতিবিদ এভারেস্ট জয় করতেন, কী ঘটত তখন?


সরকারি দলঃ

এভারেস্ট জয় করায় সারা দেশে আনন্দ মিছিল করত ছাত্রলীগ। পাড়ায় পাড়ায় মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা যেত নেতাদের। বিভিন্ন জায়গায় করা হতো সভা-সমাবেশ। সেসব সমাবেশকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হতো। পত্রিকায় খবর আসত—এভারেস্টকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ। নিহত ৫, আহত ৫০। :P :P
এভারেস্টজয়ীকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাতেন বিরোধীদলীয় মহাসচিব। তিনি বলতেন, ‘আসলে সরকারি দল এভারেস্ট জয় করতে পেরেছে তার মূল কারণ হলো আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম তখন এভারেস্টে ওঠার রাস্তাটি পাকা করে দিয়েছিলাম।’ ;) ;)
ঠিক পরের দিন সংবাদ সম্মেলন করে আগে দেওয়া ধন্যবাদ ফিরিয়ে নিতেন বিরোধীদলীয় মহাসচিব। ‘আসলে প্রথম দিন বুঝিনি মূল ব্যাপারটা। আমি আরও ভেবেছিলাম বাসার ছাদকে এভারেস্ট বলা হয়। আজ আমার বুদ্ধি বেড়েছে। বুদ্ধি বাড়ার পর এখন দেখি ঘটনা অন্য রকম। এভারেস্ট উঁচু একটা জিনিস। এটার ওপরে তিনি উঠবেন কীভাবে? এত বড় মই তিনি পেলেন কোথায়? যে দেশে কোনো উন্নয়নই নেই, সে দেশে এত বড় মই তৈরি হতে পারে না। তাই এভারেস্ট জয় পুরো ফাউল একটা ব্যাপার!’ এই মর্মে বিবৃতি দিতেন তিনি। B:-) B:-) B:-)
এদিকে এভারেস্টজয়ীকে অভিনন্দন জানিয়ে বিশাল সমাবেশ করত ছাত্রলীগ। সেখানে জয়ীকে ‘এভারেস্ট মানব, এভারেস্ট মানবী’ ইত্যাদি উপাধিতে ভূষিত করা হতো।
সঙ্গে সরকারের তরফ থেকে জানানো হতো, এই সরকারই আসলে এভারেস্টের মূল প্রতিষ্ঠাতা। এর আগে এভারেস্ট নামক কোনো কিছুর অস্তিত্ব ছিল না। এই সরকার এসে এভারেস্ট তৈরি করেছে এবং জয় করেছে। এখন বিরোধী দল ষড়যন্ত্র করে এভারেস্ট ধ্বংস করতে চায়। তাদের ষড়যন্ত্র সফল হবে না। :) :) :)
চলমান এভারেস্ট জটিলতা নিরসনে দুই নেত্রীকে সংলাপে বসার আহ্বান জানাতেন জ্ঞানী লোকজন। ‘উক্ত সংলাপে’ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের হস্তক্ষেপও কামনা করতেন অনেকে। সংলাপে বসার ব্যাপারে শত শত শর্ত জুড়ে দিত দুই দলই।
দেশে এত পাহাড় থাকতে সরকারি দল কেন বিদেশের এভারেস্টে উঠতে গেল। এর প্রতিবাদে সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকত বিরোধী দল। সরকারকে বিদেশিদের দালাল বলে আখ্যা দিত তারা। তথাকথিত এভারেস্ট জয়ের অপরাধে এই তাঁবেদার সরকারের এখনই পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করতেন বিরোধী দলের নেতারা। B-)) B-))
এভারেস্ট জয়ের প্রতিবাদে সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলত। গাড়ি পুড়িয়ে মানুষ মারত বিরোধী দল। অন্যদিকে পুলিশ ভাইয়েরা বিরোধীদলীয় নেতাদের মেরে তাদের হাড্ডিগুড্ডি ভেঙে দিত। :#) :#)
পরিশেষে সন্ধ্যাবেলা হরতাল সফল হয়েছে এবং সরকারের এভারেস্ট জয় জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে—এই মর্মে বিবৃতি দিত বিরোধী দল। জবাবে বিরোধী দলের হরতাল জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে, এটা জানাত সরকারি দল। B:-) B:-)


বিরোধী দলঃ
তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানাতেন বিরোধীদলীয় নেত্রী। তাঁর আশপাশে বসা থাকতেন ১৮ দলের নেতারা। ‘আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল সরকার। তাতে কী হয়েছে? আমার দল বাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা এভারেস্টের চূড়ায় উঠে গিয়েছে। তাই আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না। জনগণ আমাদের সাথে আছে।’ এই মর্মে বিবৃতি দিতেন তিনি। ;) ;)
বিরোধী দলের অন্য নেতারা জানাতেন, তাঁদের দল ক্ষমতায় এলে ঘরে ঘরে এভারেস্ট গড়ে তোলা হবে। ‘একটি বাড়ি একটি এভারেস্ট’ প্রকল্প চালু করা হবে। তখন আর কেউ একা এভারেস্টে উঠবে না। দেশের ১৫ কোটি মানুষকে নিয়ে তাঁদের সরকার এভারেস্ট জয় করবে।
আস্তে আস্তে মুখ খুলতে শুরু করত সরকারি দল। মন্ত্রীরা বলতেন, এভারেস্ট জয় এমন কোনো জরুরি ঘটনা নয়। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এক সভায় জানাতেন, তিনি তিন বেলা খাওয়ার আগে ও পরে এভারেস্ট জয় করেন। তা ছাড়া বিদেশিদের ‘শক্ত তরল’ খাইয়ে, ফোন করে এভারেস্ট জয় করার মূল্য নেই। B-))

আরেক কাঠি বাড়িয়ে পরের দিন বক্তৃতা দিতেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলতেন, ‘এভারেস্ট বলে কিছু নেই। এভারেস্ট বিরোধী দলের কল্পনা মাত্র। যে জিনিসের অস্তিত্বই নেই, সেই জিনিস কীভাবে জয় করা যায়? তাই বিরোধী দলের এই দাবি অত্যন্ত ফালতু।’ ;) ;)
‘এভারেস্ট জয় কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না’—এই মর্মে রুল জারি করা হতো। তিন দিনের ভেতরে সেই রুলের জবাব দিতে বলা হতো।
সরকারের এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠত বিরোধী দল। সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণের প্রতিবাদে এভারেস্ট অভিমুখে লংমার্চ ডাকত তারা। লংমার্চে হানা দিত পুলিশ ও ছাত্রলীগ। পিটিয়ে পিঠের ছাল তুলে ফেলা হতো বিরোধী দলের নেতাদের। লংমার্চ থেকে গ্রেপ্তার করে নেওয়া হতো ৩৩ জন নেতা-কর্মীকে। :P :P :P
বাতিল করে দেওয়া হতো এভারেস্ট জয়। গ্রেপ্তার করা হতো এভারেস্টজয়ীকে। তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হতো তাকে। পত্রিকায় খবর আসত, ‘এভারেস্ট নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন সেই এভারেস্টজয়ী।’ কী সেই চাঞ্চল্যকর তথ্য তা আর জানার সুযোগ হতো না কারও। B-) B-) B-) B-)

From : প্রথম আলো।
১৫টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×