সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগেই বিরোধী দল হরতাল ডেকে দিয়ে মোটেই ঠিক কাজ করেনি। পূর্ণাঙ্গ রায় না দেখে তো সে সম্পর্কে কারও মন্তব্য করাই ঠিক নয়। তার ওপর হরতাল ডেকে দেওয়া!
সুপ্রিম কোর্ট রায়ের যে অংশটুকু ঘোষণা করেছেন, তার তিনটি অংশ। একটি হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিকে অবৈধ ঘোষণা করা। দুই, জাতীয় সংসদ সিদ্ধান্ত নিলে পরবর্তী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যাবে। তিন, সদ্য সাবেক প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ না করা প্রসঙ্গ।
এই তিনটি অংশের মধ্যে প্রথমটি নিয়ে লাফালাফি করা হচ্ছে। এর সঙ্গে যে অন্য দুটি অংশ জড়িত সেটা যেন কেউ খেয়ালই করছেন না। তা ছাড়া রায়ে পরিষ্কার বলা হয়েছে, এসব বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় অনুসরণ করতে হবে।
দেশের সংবিধানের মূল চারিত্র বিবেচনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার তো অবশ্যই অবৈধ। কিন্তু রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট কোনো রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করতে চাননি। সে জন্যই পরের অংশে বলা হয়েছে, আরও দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। সেই দায়িত্ব তো সুপ্রিম কোর্ট নিতে পারেন না। সেই দায়িত্ব তো নিতে হবে রাজনীতিকদের। সে জন্যই বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ সিদ্ধান্ত নিলে সেটা করা যাবে। এ কথা বলে তো রাজনীতিকদের জন্য পথ খোলা রাখা হয়েছে। এখন তাঁরা সংসদে বসে সিদ্ধান্ত নিন। কিন্তু তা না করে তাঁরা এটাকে একটা রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির দিকে নিয়ে যাচ্ছেন, যা দুঃখজনক।
সুপ্রিম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে সদ্য সাবেক প্রধান বিচারপতিকে না রাখার কথাও বলেছেন। এটাকে অবশ্যই সাধুবাদ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের যা করা উচিত, তা তাঁরা করেছেন। এখন রাজনীতিকেরা কী করবেন সেটা তো তাঁদের ব্যাপার। সে জন্য তাঁদের বসতে হবে। ভাবতে হবে। তাঁদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।