সমাজ নষ্ট হয়ে গেছে ।ও বলে, সে বলে এবং আমিও বলি...
আসলেই কি সমাজ নষ্ট হয়ে গেছে? এক কথায় উত্তরঃ হাঁ
কিভাবে বুঝলাম?
খুবই সহজ
বেশীরভাগ খেত্রেই বিক্রেতা ক্রেতাকে ঠকাচ্ছে বা ঠকানোর চেষ্টা করছে, আমানতকারি আমানত দাতাকে ঠকাচ্ছে, নারীরা উলঙ্গপনাকে আধুনিকতা ভাবছে এবং পুরুষ দ্বারা লাঞ্ছিত ও খতিগ্রস্থ হচ্ছে, পুরুষ সমাজ নারী ও মাদকে নিমজ্জিত, ছোটরা বড়দের সম্মানহানি করছে আর বড়রা ছোটদের প্রতি স্নেহের পরিবর্তে ক্রোধান্বিত হচ্ছে, সুশিক্ষা দানকারী শিক্ষকরা লাঞ্ছিত হচ্ছে আর কুশিক্ষা দানকারী শিক্ষকরা বুকচিতিয়ে পদার্পণ করে যাচ্ছে, আমরা সত্য কে গোপন করে মিথ্যাকে প্রস্রয় দিয়ে যাচ্ছি, একের অধিক লোকের মিলনায়তনে নিজের পাণ্ডিত্য জাহির করার জন্য সমানে মিথ্যা বলে যাচ্ছি ইত্যাদি ইত্যাদি......
পরিশেষে সমাজের কর্তৃত্ব দানকারী নেতা আমাদের মধ্য থেকে আমাদেরি মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচিত হয়ে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালিত করে যাচ্ছে।
তাহলে আমাদের নেতা কেমন হল?
একটা উদাহরনের ভেতরেই উত্তরটা খুঁজে নেই,
ধরুন ১০ জনের একটা দল কোথাও ভ্রমনে যাবে। ভ্রমনের কিছু শর্ত আছে, এর মধ্যে একটা হল পুরু দলকে একজনের নেত্রিত্তে চলতে হবে, সকলের সমস্ত অর্থ তার কাছে গচ্ছিত থাকবে এবং সে যে সিদ্ধান্ত নিবে তা মেনে নিতে হবে। পরিশেষে ২ জন কে মনোনয়ন করা হল যে, এদের থেকে একজন কে নেতা বানানো হবে। ২ জনের একজন সিগারেট টানতে খুব ভালবাসে আর আরেকজন সিগারেটের ঘোর বিরোধী এবং সে সিগারেটের পেছনে অহেতুক খরচ করতে মটেই আগ্রহি নয়। দলের ৮ জনই সিগারেট খুব ভালবাসে এবং তাদের এইটা পেতে হলে দলের নেতার সম্মতি লাকবে। যদিও সবার মতেই সিগারেট টেনে অর্থ নষ্ট করা পুরাই অনর্থক। তার পরও তারা নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিগারেট পছন্দ করা বেক্তিকেই মনোনয়ন দিবে এবং তাকে নেতা বানাবে সিগারেট পাওয়ার আসায়।
ঠিক এমনি ভাবে আমরা আমাদের মতই নেতা নির্বাচিত করছি এবং তারা আমারই চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে।
এখন দেখা যাক আমার চিন্তাভাবনা কেমন?
১। কারো সাথে ঝগড়া বিবাদ হলে নিজেথেকে সব কিছু সমাধান করে ফেলি, নাকি দেখে নেবার হুমকি দিয়ে ক্ষমতাবান কারো কাছে ছুটে বেড়াই
২। পাবলিক রিলেশন এর কোন কাজে গেলে নিয়ম বা সিরিয়াল মান্টেন করি কিনা
৩। পাবলিক বাসে উঠার সময় ধাক্কাধাক্কি করি কিনা
৪। চাকুরি পেতে বড়মামা বা খালুর পেছনে ছুটি কিনা
৫। কারো কোন কাজ করে দিয়ে তার প্রতিদান আশাকরি কিনা
৬। বন্ধুর বিপদে নিজেথেকে এগিয়ে না গিয়ে সরে থাকি কিনা
৭। লোকদের বিবাদে মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি কিনা
৮। একজন ক্ষুধার্ত কে দেখলে খাবার দিতে মনচায় কিনা
ইত্যাদি ইত্যাদি......
তো দেখা যাচ্ছে যে এইসবের বেশীরভাগই আমার ভেতর নেতিবাচক কাজ করে এবং আমিও এই সমাজ নষ্ট হওয়ার জন্য কম-বেশি দায়ী।
এখন আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কি এবং আমরা কিভাবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর সমাজ বেবস্থা রেখে যাব?
গতানুগতিক উত্তরে আমরা বলি নিজেকে বদলিয়ে ফেল তো সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু আমার কাছে এই কথাটা খুব বেশি গ্রহণযোগ্য মনেহয়না। আমি নিজেকে বদলাবো কিন্তু কিভাবে এবং সেটা কতদিন টিকে থাকবে সেটা একটা চিন্তার বিষয়। আমি বললাম যে আমি মিথ্যা বলবনা কিন্তু আমার পরিচিতজনরা অন্যায় করে যাচ্ছে আর তাদের বড় রকমের শাস্তি হতে বাঁচাতে গিয়ে মিথ্যা বলে ফেলছি, যার দ্বারা আমার মিথ্যা তো বলা হচ্ছেই সাথে অন্যায় কে ও প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। আমি বললাম আমি আমার পরিচিতজনদের বিপদে এগিয়ে আসব, সেই শুজুগ পেয়ে সবাই আমার কাছে সাহায্য পাওয়ার আসা করতে লাকবে, আমি যখন আমার সামরথের বাইরে গিয়ে সহযোগিতা সম্পূর্ণ করতে পারবোনা তখন সবার সাথে উল্টো সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু হবে এমন কি সবাই এর ভিতরে আমার স্বার্থ খোঁজা শুরু করবে।
সুতরাং, আমার বেক্তিগত অভিমত যে আমাকে তো পরিবর্তন হতে হবেই সাথে আশেপাশের সকলকেও আমার পরিবর্তনের চেষ্টা করতে হবে। আর সেটা না করলে আমার একা একা পরিবর্তন হয়ে ভাল হওয়া কঠিন। তাই আমাদের কাছের পরিচিতদের সাথে নিয়ে পরিবর্তন হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
আসুন আমরা প্রথমে নিজের ঘরের সবাইকে ও আমাদের বন্ধু-বান্ধবদের সাথে নিয়ে পরিবর্তন হওয়ার চেষ্টা করি। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে সমাজে ছড়িয়ে পড়ি এবং সমাজটাকে নাতুন করে সাজানোর চেষ্টা করি। ভালো ভালো অভ্যাস গুলু একটা একটা করে নিজের ভেতর গেঁথে ফেলি এবং অন্যায় কাজ গুলু পরিত্যাগ করি। অন্যথায় আমাদের অবস্থা খারাপ থেকে আরো খারাপের দিকে যেতে থাকবে আর নিভতে থাকবে আমাদের সোনালী স্বপ্ন গুলু।
বিঃদ্রঃ আমি আমার থেকে শুরু করতে চাই, আমার অনুরুধ আমার বন্ধুদের প্রতি-
আসুন, হাতে হাত মেলান। ইন-সা-আল্লাহ্ আমরা সফল হব। আমি উৎসাহী বন্ধুদের নিয়ে একটা গ্রুপ তৈরি করে শুরু করতে চাই, যারা যারা রাজী আছেন আমাকে ইনবক্স করুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৪