মৌচাক মোড়ে কফিউদ্দিনের কফি স্টল। বছরের পর বছর ধরিয়া কফি বানাইতে বানাইতে বোধ করি সে নিজেও তাহার পিতৃদত্ত নামখানি ভুলিয়া গিয়াসে।
প্রথম যখন মুক্তিযোদ্ধা কফি স্টল নামক সাইনবোর্ডটি দেখিয়াছিলাম, টাশকি খাইসিলাম বলাই বাহুল্য, লোকটাকে চরম ভন্ড বলিয়া মনে হইসিল। একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কখনোই এই রূপ স্ট্রিপটিজের আশ্রয় নিবে না। যাহা হউক, তৃষ্ণায় গলা ফাটিয়া যাইতেসিল। কিছুটা অপারগ চিত্তে দরমার ঝাঁপ ঠেলিয়া প্রবেশ করিয়া, তাহার দিগন্তবিস্তৃত টাক ও বাদবাকী ফাঁক দিয়া, ময়ূরীর পোস্টারখান দেখিতে দেখিতে কহিলাম - চা পাওয়া যাবে মামা?
চুখজোড়া কি বাসায় থুইয়া আইসেন মিয়া? মামা খ্যাঁক করিয়া উঠিলেন। আমি বিস্ফারিত নেত্রে লক্ষ্য করিলাম মামার টাকের কালার চেঞ্জ হইতে থাকিলো ইগুয়ানার ন্যায়।
আমার মলিন মুখ দেখিয়া মামার দয়া হইলো। তিনি চোখ মারিয়া কহিলেন, দার্জিলিং টি খাইয়ামু, তয়...।
আমার বক্ষ দুরু দুরু করিয়া কাঁপিয়া লাগিলো। আমি ভালো ছেলে, বাসায় বান্ধবী আসে, এফএলএফের বাসায়। ফিউচার ল'ফুল ফাদার।
বাচ্চা নাই, কারণ আমার ঐটা আসে, ডটেড।
বরাভয় হাস্য করিয়া অবশেষে মামা কহিলেন, তিনি শখের কবি, তাহার কাব্যগ্রন্থটি পাঠ করিবেন।
আমি রাজী হইয়া গেলাম। বেশির ভাগই নবীরে নিয়া লিখা বাট দুই একটা তরুণতরুণীমার্কাও আসে।
শুনিতে শুনিতে মামার চশমার কাঁচ ফাটাইয়া দেওয়ার লোভ সম্বরণ করিয়া থাকিলাম। আর প্রতিজ্ঞা করিলাম জনপ্রিয় ডিজ্যুস কবি ম্যাজিক মেহেদীর কুলকুচি নামের সান্ধ্য কবিতা কোচিং সেন্টারে কফিউদ্দিনরে ভর্তি করায়ে দিবো, জান্টুশের আত্মজীবনী গোস্টরাইট করে যত টেকা পাইবো, তাহা থেকে একটি নগণ্য ভাগ খরচ করিয়া।