somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তকে নিয়ে নিউইয়র্কে মত বিনিময় সভা

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত বাংলাদেশের মিডিয়ার বিকাশ সম্পর্কে বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে গণমাধ্যমের মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন মিডিয়ার জন্ম হতে থাকে। বর্তমানে যত পত্রিকা এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার জন্ম হয়েছে, এ সব প্রতিষ্ঠানের জন্য আরো আড়াই হাজার সাংবাদিক এবং ৪০ জন বার্তা সম্পাদক প্রয়োজন। আমাদের দেশে মিডিয়ার সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু স্বতন্ত্র মিডিয়া হাউজ একটিও গড়ে উঠেনি। এটা আমাদের জন্য চরম হতাশার সংবাদ। দৈনিক ইত্তেফাক ছাড়া আর কোন মিডিয়া হাউজ স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারেনি। সেসাথে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার পরস্পর বিরোধী সংবাদ প্রকাশ পাঠক সমাজকে বিব্রত করছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা তথ্যানুসন্ধান ও নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সংবাদ তৈরি করছি না। রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থে মিডিয়া ব্যবহৃত হচ্ছে। সাংবাদিকরাও দুটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ নিয়ে বিভক্ত। ফলে আমরা সবসময় সঠিক সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করতে পারছি না। তিনি বলেন, দৈনিক পত্রিকার পাশাপাশি বেসরকারি টেলিভিশন এখন নতুন রিয়েলিটি। নতুন নতুন ছেলেমেয়েরা এ পেশায় যুক্ত হচ্ছেন। তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া জরুরি। কিন্তু প্রশিক্ষণ না নিয়েই নতুন নতুন সাংবাদিকরা এ পেশায় জড়িত হচ্ছেন। ফলে সাংবাদিকতায় পেশাদারিত্ব দেখা যাচ্ছে না। তিনি বাংলাদেশের সাংবাদিকতা বা টিভি টক শো’তে স্বাধীনভাবে কথা বলা প্রসঙ্গে বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে সাংবাকিতা করছি এবং টিভিতে টক শো করছি। আমি কখনও উপর মহলের চাপ অনুভব করিনি। টিভির টক শো’র অতিথির বক্তব্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে, কিন্তু কেউ বলেনি টক শো’তে অমুককে নেয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে আমি বলব, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ভোগ করছি।
তিনি যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রসঙ্গে বলেন, যুদ্ধাপরাধীর বিচার না করলে ক্ষমতাসীন দল আগামী নির্বাচনে ভোট চাইতে পারবে না। কারণ, বিগত নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের প্রতিশ্রুতি ছিল তাদের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। এই দাবিটি দেশের আপামর জনগণের দাবি। মাত্র কয়েকজনের সংগঠন ‘মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারস্ ফোরাম’ এই দাবিতে বিভিন্ন জেলা ও শহরে যখন সভা করেছিল। দাবিটি জনগণকে উদ্বেলিত করেছিল। ফলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিটি সবমহলেই গুরুত্বের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। এর বিরোধীতা করছেন, এমন কাউকে পাওয়া যায়নি। এ পর্যন্ত কেউ বলেননি যে, তারা যুদ্ধাপরাধীর বিচার চান না। বিএনপি বা জামাত থেকেও এ ধরনের কথা কেউ বলেননি। ফলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া বর্তমান সরকারকে অব্যাহত রাখতে হবে এবং যুদ্ধাপরাধীর বিচার করতে হবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, আইনী প্রক্রিয়ার দুর্বলতার কারণে যেন যুদ্ধাপরাধীরা গোলাম আজমের নাগরিকত্ব লাভের মত রেহাই পেয়ে না যান। নিউইয়র্কে এই মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় গত মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) রাতে উডসাইডস্থ এটিএন বাংলা’র কার্যালয়ে। মত বিনিময় সভার শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং রাজনীতির গতিপ্রকৃতি’। এই বিষয়ের ওপর শ্যামল দত্ত বক্তব্য রাখেন। এরপর উপস্থিত সুধী ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। অনুষ্ঠানের শুরুতে শ্যামল দত্ত এবং সমবেত সুধীদের পরিচয় করিয়ে দেন সাপ্তাহিক আজকাল পত্রিকার সম্পাদিক দর্পণ কবীর। এই অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক সফররত ইউএনবি’র সিনিয়র সাংবাদিক সদরুল হাসান।
দেশের রাজনীতি প্রসঙ্গে শ্যামল দত্ত বলেছেন, রাজনীতিতে বিরোধীতা অব্যাহত রয়েছে। সরকারি দল সংসদে যায়, বিরোধী দল সংসদে যায় না-এমন কালচার বহাল রয়েছে। ওয়ান ইলাভেনের কারণে অনেকে ভেবেছিল, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি বাড়বে। বাস্তবে তা দেখা যাচ্ছে না। রাজনীতি যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই রয়েছে। তিনি আরো বলেন, দেশের বিদ্যুত সমস্যা প্রকট, গ্যাসের সরবরাহ কমে গেছে। মানুষ বর্তমান সরকারের কাছে এই সংকট নিরসনের আশা করছে। সরকারও চেষ্টা করছে। বিদ্যুত উৎপাদন বাড়াতে হলে দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিখাতে ব্যাপক উন্নতি করেছে। ফসলের বাম্পার ফলনে জাতীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তিনি ছাত্রলীগ এর কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বলেন, ছাত্রলীগ নিয়ে সরকার বিব্রত। তাদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। মতবিনিময় উপস্থিত ছিলেন পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, নিউইয়র্ক পত্রিকার সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান, বাংলাপত্রিকার সম্পাদক আবু তাহের, এটিএন বাংলা ইউএস এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ফখরুল আলম, বাঙালী পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি শহীদুল ইসলাম, এটিএন বাংলা ইউএস এর বার্তা সম্পাদক ফকীর সেলিম ও রিজু মোহাম্মদ, সাংবাদিক মাহমুদ খান তাসের, সাংবাদিক শরিফ শাহাবুদ্দিন, সাংবাদিক মুজাহিদ আনসারী, বার্তা সংস্থা ইউএনএ-এর সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ, প্রকৌশলী নির্মল পাল, কবি সুমিন শাওন, গোপালগঞ্জ জেলা সমিতির সভাপতি ও সংস্কৃতি কর্মী জি এইচ আরজু, বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাহী সদস্য আব্দুল মান্নান, ডেমোক্রেট নেতা মঞ্জুর চৌধুরী, সংস্কৃতি কর্মী রাসেল কবীর, ছাত্রলীগ নেতা সুবল দেবনাথ, ফটো সাংবাদিক নিহার সিদ্দিকী, জেবিবিএ-এর নেতা আনোয়ার হোসেন, রাজীব আহসান প্রমুখ।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×