somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্রষ্টার ইতিবৃত্ত

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেদিনের অন্ধকার রাতের পরিষ্কার কালো আকাশে বকুল ফুলের মত ফুটেছিল অজস্র তারা । দৃষ্টিসীমানার কোথাও কোন মানুষের চিহ্ন ছিল না- জাস্ট আমাদের ছোট্টো বাংলোটা। এমন পরিবেশে আমি সৃষ্টির বিশালতা, সৌন্দর্য আর এর রহস্য নিয়ে খুব সুন্দর একটা মোহে বেশ কিছুক্ষণ ধরে বিভোর ছিলাম.. ঠিক এমন সময়ে একটা ছোট্টো চিন্তা আমার সবকিছু ওলোট পালট করে দিলো...
"স্রষ্টা আসলে সৃষ্টির শুরুতে ছিলেন না, বরং তিনি জন্ম নিবেন এই সৃষ্টির মাঝেই"
সৃষ্টির একদম শুরুতে সবকিছু ছিল একদম সহজ সরল। বলা যায় হোমোজিনিয়াস। সেখান থেকে সব আলাদা হল, বিভিন্ন গ্রুপে জড়ো হয়ে হয়ে তৈরী করলো অদ্ভুত সব বস্তু, সৃষ্টি হল প্রাণ। "বুদ্ধিমত্তা" বলতে আমরা যা বুঝি তা আসলে এই মহাবিশ্বে এসেছে অনেক অনেক পরে।
অর্থাৎ সৃষ্টির শুরুতে বুদ্ধিমান কোন কিছুর অস্তিত্ব এই সিস্টেমের ভেতরে ছিল না। পরে তৈরী হয়েছে এবং দিনকে দিন সেই বুদ্ধিমত্তা, প্রকৃতির উপর ক্ষমতা কিছু কিছু সৃষ্টিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে বিবর্তনের ধারায়..
তাহলে কি সর্বশক্তিমান যে স্রষ্টার কথা আমরা কল্পনা করি- তিনি কি আসলে সৃষ্টির আদিতে এই জগতে ছিলেন না, বরং এখন ধীরে ধীরে তৈরী হচ্ছেন এই সৃষ্টিজগতের মাঝেই..?
বিশ্বভ্রুক্ষান্ডের জীবদ্দশার একটা সময়ে হয়ত কোন একটা প্রজাতি বা একটা প্রাণী লাভ করবে প্রকৃতির উপর স্রষ্টাসুলভ কোন ক্ষমতা। হয়ত বা সে তখন তৈরী করবে নিজের আলাদা কোন একটা জগত... সে-ই তখন হবে নতুন স্রষ্টা- নতুন ওই জগতের.. অথবা এই জগতটাকেই নিজের মত করে ডিজাইন করে সাজিয়ে নেবে সে.. সেক্ষেত্রেও এই জগতে তার ভূমিকা হবে ঐ স্রষ্টার মতই..
আমরা এখন কম্পিউটারে নদীর স্রোত মিমিক করতে পারি যথেষ্ট একুরেসিতে, মিমিক করতে পারি সৌরজগতকে, পদার্থের ফর্মেশনকে, সার্কিটে ইলেক্ট্রনের প্রবাহকে- আল্টিমেটলি প্রায় সবকিছুকেই.. আমাদের চেনা জগতের থেকে একদম আলাদা জায়গায় আমরা সৃষ্টি করতে পেরেছি এই জগতেরই কিছু প্রতিচ্ছবি। যেদিন সবকিছু "সিমুলেট" করতে পারবো, সেদিন আমরা নতুন ওই জগতের স্রষ্টা হয়ে যাব। সেই জগতটারই একটা ডিফ্রেন্ট ভার্সনের স্রষ্টা, যেটার অংশ আমি নিজেরাই..
তবে এই স্রষ্টা হবার কিছু রিস্ক আছে- নিজের সৃষ্টির কাছে হেরে যাবার রিস্ক। আর তাই কম্পিউটার বেজড আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মূল নিয়মটি হল মানুষের, অর্থাৎ স্রষ্টার কোন ক্ষতি করা যাবে না, তাকে মেনে চলতে হবে।
ঠিক একই নিয়ম কি আমাদের স্রষ্টাও আমাদেরকে দিয়ে দেননি? আমি ধার্মিক নই, কিন্তু মিলটা মজা লাগে।
তাহলে থিউরিটা এমন দাঁড়াচ্ছে যে একটা সৃষ্টিজগতের মাঝে বুদ্ধিমান সত্ত্বার জন্ম হলে একসময় তারা নিজেরাও নতুন জগত সৃষ্টি করার সামর্থ্য লাভ করতে পারে। সেই নতুন জগতটার ক্যারেক্টারস্টিক্স হতে পারে একই রকম অথবা একেবারেই আলাদা।
নতুন সৃষ্ট ওই জগতেও আবার একই সাইকেল চলতে থাকা সম্ভব.. অনন্ত স্টেপের একটা নেস্টেড লুপে।
আজ আমাদের রোবটেরা আমাদের এক প্রকার উপাসনা করে যাচ্ছে। আর আমরা করে যাচ্ছি আরেকজনের। তিনি যদি থেকে থাকেন- তবে চান্স আছে তার জগতটারও একজন প্রথাগত "স্রষ্টা" থাকার। স্রষ্টা ও সৃষ্টির এই চেইনের শেষ কোথায় তাহলে? এভাবে চলতে থাকলে লাস্ট স্টেপে গিয়ে কি হবে? আদৌ কি কখনো শেষ হবে এটা? নাকি হবে না? শেষ হলে সেই সুপ্রিম স্রষ্টা ও তার বসবাস করা জগতের বৈশিষ্ট্য, ধরন কতটাই না অদ্ভুত হবে আমাদেরটার থেকে, তাই না?
এলান তুরিনের একটা উক্তি খুব ভাল লাগে আমার- "যন্ত্র কখনো মানুষের মত বুদ্ধিমান হবে না। যন্ত্র যন্ত্রের মত বুদ্ধিমান হবে"
সব সৃষ্টিই আসলে তার নিজের জায়গাটাতে ইউনিক এবং একই সাথে সবকিছুর মাঝে অর্থহীন...
চিন্তার এই পর্যায়ে একটা উজ্জ্বল সাদা আলো হঠাৎ আমাকে ঢেকে ফেলে উপর থেকে। আমি চমকে উঠি। বাইরে আবছাভাবে দেখি সবকিছু একদম স্থির হয়ে থমকে দাঁড়িতে আছে।
আমার ছোট ভাই সাফাতের একটা থিউরি আছে- তার ভাষ্য মতে সময় আসলে মৌলিক না। গতি বা মোশন হচ্ছে মৌলিক। আর গতির হিসেবের জন্য "সময়" নামক এই এবসার্ড আইডিয়াটা তৈরী হয়েছে.. একটা সময় এটা নিয়ে তর্ক করলেও এখন আমি বুঝি যে আমি আসলে কিছুই বুঝি না। তাই আজকেও আমি বুঝলাম না যে আলোকস্তম্ভের বাইরে সবাই স্থির, নাকি সেখানে শুধু সময়টাই সেখানে থেমে আছে..
"তোমার কি মনে হয়? স্রষ্টা আলাদা একটা জগত সৃষ্টি করলে সেটা কিসের মত করে করবেন?"
উপর থেকে কথাগুলো ভেসে আসছে...
আমি একটু ঘাবড়ে গেলাম শুরুতে। তারপর ব্যাপারটা হজম করে উত্তর দিলাম-
"এটা তো তার পার্সোনালিটির উপর ডিপেন্ড করবে। স্রষ্টা যদি তার নিজের বাস করা জগত নিয়ে অতীত জীবনে অসন্তোষে ভোগেন, তাহলে তিনি নিজের বাস করা জগতের খুঁতগুলোকে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করবেন, তিনি স্যাডিস্ট হলে ইচ্ছে করে নরক বানাবেন, আর নার্সিসিস্ট হলে সবকিছু বানাবেন নিজের ইমেজে.."
উপরের লোকটা হাসলো। আমি তার পরিচয় আন্দাজ করতে পারলাম।
"তুমি জানি কি নিয়ে লেখাপড়া কর?"
"কম্পিউটার সাইন্স। কিন্তু আপনার তো এগুলো জানার কথা।"
"তোমার বানানো একটা জটিল প্রোগ্রামের সবগুলো ভ্যারিয়েবলের মান কি তুমি প্রতিটা মূহুর্তে মুখস্থ বলতে পারো কখনো? ইন্টারমিডিয়েট রেজাল্টগুলো সম্পর্কে কোন আইডিয়াও কি তোমার থাকে ফ্লুইড ফ্লো সিমুলেশনের ক্ষেত্রে? তাহলে আমি কিভাবে পারবো? খাতা কলম নিয়ে বসে হিসেব করে বলতে হবে। কিন্তু সেটা কি কথোপকথনের জন্য ভাল হবে?"
আমি থতমত খেলাম.. অবাক হলাম উপরওয়ালার কথায়- আমি কখনো ভাবিনি যে স্রষ্টার ক্ষেত্রেও এমনটা হতে পারে..
"দেখো, তোমরা মানুষেরা যেই লাইনে আগাচ্ছো- পুরোটাই নিজেদের স্বার্থ বেজড। তোমাদের সবথেকে বুদ্ধিমান সৃষ্টি হল কম্পিউটার, ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক্স। এর সবটাই কিন্তু জাস্ট তোমাদের নিজেদের কাজ হাল্কা করার জন্য। একটা ছোট্টো বাক্সের ভেতরে তোমরা পানির ঢেউ নকল করতে পারো, নকল করতে পারো সৌরজগতের গতি প্রকৃতি। কিন্তু নকল করার পর অবাক হও সেটার "প্রিসিশন" নিয়ে। সেটার দর্শনগত দিকটা কখনো খেয়ালই কর না তোমরা..আমি কিন্তু এমন ছিলাম না।"
স্রষ্টা একটু থামলেন। "ওই ছোট্টো বাক্সের মাঝেই তোমরা সৃষ্টি করতে পেরেছো এমন কিছু যা প্রায় তোমাদের স্রষ্টার সৃষ্টির সমান। কিন্তু ডাইমেনশন একেবারেই আলাদা.. এটাকে কি বলবা তুমি? জাস্ট "বিশেষ জ্ঞান"? নাকি আরো বেশীকিছু?"
আমি উত্তেজনা কমাতে কাঁপা কাঁপা একটা সিগারেট ধরালাম। স্রষ্টা মুচকি হেসে বললেন- "আচ্ছা, একদিনের জন্য মনে হয় বেশী হয়ে যাচ্ছে। আজকে তাহলে থাকুক। কিছু কি বলতে চাও এখন?"
আমি কিছুক্ষণ ভাবলাম- ছোটবেলায় এই মুহুর্তটা কল্পনা করে অনেক কিছুই ঠিক করে রেখেছিলাম আমি। কিন্তু তার কোনটাই এখন আর অর্থপূর্ণ মনে হয় না। কি বলবো তাকে আমি? কি-ই বা জানার আছে তার কাছ থেকে এরকম একটা বসায়? চার বলের ইউনিফিকেশনটা জানতে চাইবো? নাকি কোয়ান্টাম মেকানিক্সের রহস্যটা বুঝাতে বলবো? আর এগুলোর কোনটাই কি আসলে কোন ম্যাটার করে? আমি কিছুক্ষণের জন্য চোখ বন্ধ করলাম-
"কেন বানালেন সবকিছু?" চোখ মেলে উপরে তাকিয়ে বললাম- "এই সৃষ্টির পেছনে আপনার মোটিভেশন কি ছিল? সবাই আপনাকে বাহবা দিতে থাকবে দিন-রাত আর সেটা আপনার ভাল্লাগবে- এটাই?"
স্রষ্টা আবার হাসলেন- "না না.. এতোটা নার্সিসিস্ট আমি নই। আজকের মত এরকম ভাবে কথাবার্তা এর আগে তোমার প্রজাতির যত জনের সাথে আমি বলেছি- সবাই কিছুটা করে হলেও ব্যাপারগুলোকে নিজের মত করে ধরে নিয়েছে। তাই যা শুনেছো- তার সব আসলে সত্যি না।"
"তাহলে?"
"স্রষ্টা হতে হলে অতৃপ্তি থাকতে হয়। আমারও তাই ছিল। জাস্ট একটু ভাল থাকার জন্যই আসলে সবকিছু করা..."
"কিন্তু আমরা তো ভাল নেই। আপনি কি জানেন আমি আপনাকে কতটা ঘৃণা করি?"
"হুম... জানি। কিন্তু মনে রেখো- আমি যথেষ্ট করেছি। আমার থেকে অনেক বেশী ভাল আছো তোমরা। আমিও এটাই চেয়েছিলাম- কিছু সুন্দর জিনিস - যা আমার জগতে পাওয়া সম্ভব না, তা যেন তোমরা পাও। আমি পাই না। কিন্তু তোমাদেরকে পেতে দেখতে আমার ভাল লাগে.. তোমাদের সৃষ্টি হয়ত আরো বেশী সুন্দর হবে, তাদেরটা আরেকটু... এভাবেই আমরা এগিয়ে যাবো একটা ইউটোপিয়ার দিকে। তখন আর ভাল থাকার জন্য কাউকে কিছু সৃষ্টি করতে হবে না। সবাই তৃপ্তি নিয়ে বেঁচে থাকবে অনন্তকাল- এটাই ছিল আমার উদ্দেশ্য।"
আমি মন দিয়ে তার কথাগুলো শুনলাম। তার কথার টোনে মিশে ছিল হাজার বছর ধরে জমে থাকা একটা হাহাকার। আমার খুব কষ্ট হতে থাকলো। তীব্র মায়া হতে লাগলো আজীবন অদেখা এই সত্ত্বাটার জন্য। প্রথমবারের মত তার জন্য জন্ম নিল এক প্রকার ভালবাসা.. কিন্তু নিরর্থক এই জীবন, আমৃত্যু অতৃপ্তি, দিনান্তে তিনটি সফল ধর্ষনের সংবাদ - এসব তো আমি চাইনি। জন্ম দেয়ার আগে একটাবার অন্তত সে আমাকে জিজ্ঞেস করে নিতো....
স্রষ্টা বলতে থাকলেন- "এই সমস্যগুলো আসলে বিশাল একটা প্রোজেক্টের কিছু ছোট ছোট পার্ট। বলতে পারো সিস্টেমের বাগ। বা সাইড ইফেক্ট।"
"কিন্তু আমার কাছে তো ওই বিশাল প্রোজেক্টের চেয়ে এই ছোট জিনিসগুলোই বেশী গুরুত্বপূর্ণ। আমি কেয়ার করি না নিহারীকা কতটা সুন্দর। আমি চাই একটা ছেলে রেপ করতে গেলে তার জননাঙ্গ খসে পরবে- এমন একটা পৃথিবী। যা তুমি বানাতে পারোনি এবং আমার মতামত না নিয়েই এই খোঁড়া জগতটাতে তুমি আমাকে নির্বাসিত করেছো।"
"আমি স্যরি পিয়াল।" একটু থামলেন স্রষ্টা। গল্পের ছন্দে আবার বলতে শুরু করলেন- "এটা আমার ফার্স্ট প্রোজেক্ট ছিল। অনেক বিখ্যাত হয়েছিলাম আমার ওখানে এই প্রোজেক্টের কল্যাণে। কিন্তু আসলে অনেক কিছুই আমি তখন বুঝতাম না। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে পরে আমি অন্য কিছু প্রোজেক্ট করেছিলাম। ওগুলোতে কোন খুঁত রাখিনি আমি। প্রায় পার্ফেক্ট ছিল ওগুলো। কিন্তু মজার ব্যাপার কি জানো? ওই নিখুঁত সিস্টেমগুলোও শেষমেশ ঘুরেফিরে ওই এক দিকেই গিয়েছে। অতৃপ্তির ওই অসুখটা- এটা সবখানে মিশে আছে পিয়াল... এর থেকে মনে হয় কারো মুক্তি নেই। নেই স্রষ্টার, বা কোন সৃষ্টির। একটা সময় আমি বুঝতে পারি যে কোন কিছু সৃষ্টি করাটাই আসলে একটা পাপ। ঠিক যেমনটা কাউকে জন্ম দেয়াটাও। আমার কল্পনার ওই ইউটোপিয়াটা আসলে কোনদিন সম্ভব না । আর তাই কখনো শেষ হবে না সৃষ্টির মাধ্যমে মুক্তি পাবার ওই বৃথা চেষ্টাটাও। লুপের ভেতর লুপ চলতেই থাকবে... বাড়তে থাকবে দিনের পর দিন। স্রষ্টা তার নিজের মত করে, নিজের ভাল-মন্দের বিচার ক্ষমতা দিয়ে একটা কিছু বানাবেন। কিন্তু সেটা তার সব সৃষ্টির কখনোই ভাল লাগবে না.. তারা তখন অশান্তিতে পুড়তে থাকবে। আবার যাদের ভাল লেগে যাবে, বা মেনে নিবে, তারাও একটা সময় ঠিকই হাঁটু গেড়ে বসবে অস্তিত্বের মাঝে মিশে থাকা ঐ নিগূঢ় শূণ্যতায়.. তাই এখন আর কিছু বানাই না আমি। তোমাদেরকে দেখিও না। শেষ বয়সে এসে পাপমোচনের আশায় নিজের স্রষ্টার উপাসনা করেই পুরোটা সময় কাটিয়ে দিচ্ছি আমি.. শুধু কিছু স্পেশাল এলার্ম মনিটর করি। আজ সেগুলোরই একটা ট্রিগার করলো। ভেবেছিলাম আর কখনো তোমাদের সামনে আসবো না। আগের প্রতিটা সাক্ষাতই শেষ পর্যন্ত তোমাদের দুনিয়ায় শুধু অশান্তি-ই বাড়িয়েছে। তবে তোমার প্রোফাইল দেখে মনে মনে হল তোমাকে নিয়ে ওই ভয় নেই। তাই আসলাম।"
আমি সিগারেটে শেষ টানটা দিলাম- "আর এসো না। উই ডোন্ট নীড ইউ হিয়ার। আর যদি পারো, সব শেষ করে দিও।"
"সেটাও কি অবিচার করা হবে না? আমি এমন একটা অবস্থায় আছি যেখান থেকে কোন সুবিচারী স্টেপ নেয়া যায় না..."
স্রষ্টার কন্ঠ্যের এক চাপা আর্তনাদের মধ্য দিয়ে উষ্ণ একটা ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হল আমার ছোট্টো আলোকিত ওই আকাশটায়। আমার নুব্জ শরীর ভিজে যেতে থাকলো স্রষ্টার কান্নায়- একটু একটু করে...
"আমি নিজের সব দৈনতাকে ঝেড়ে ফেলে তোমাদের সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছিলাম। সত্ত্বা হিসেবে তোমরা আমার থেকে অনেক বেশী সুপেরিয়র। আর তাই তুমি কখনো বুঝবে না কতটা তীব্র কষ্টের এই অনুশোচনাটা.... ঋণাত্বক অনুভূতির খুব সামান্য একটা অংশই মানুষের মাঝে আছে এবং সেটাও আসলে একটা সাইড ইফেক্ট। আমার ইচ্ছাকৃত না।"
আমি চমকে উঠলাম তার কথায়। যে বিষাদ আমি সারাটা জীবন বয়ে নিয়ে বেরিয়েছি সেটা স্রষ্টার "সামান্য" অংশ??
আমি উপরের দিকে তাকালাম- কিছু নেই সেখানে। সাদা আলোটা নিভে গেছে। আকাশ জুড়ে আবার সেই অজস্র পবিত্র রঙের বকুল ফুল.. আমার মন জুড়ে শীতল বাতাস.. নিরাকার অদৃশ্য সেই স্রষ্টার জন্য আমার চোখে প্রথমবারের মত জমা হল একটুখানি অশ্রু...
স্রষ্টার সাথে এরপর আমার আর কোনদিন দেখা হয়নি...
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:১৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×