somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামাজিক সেবা ফান্ড

১৫ ই নভেম্বর, ২০১২ সকাল ৭:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

- তুমি আগে বল প্রষ্টেট ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য গবেষনা হোক সেটা তুমি চাও কীনা?
- আমি আমার গোঁফটা অর্ধেক ফেলে দিতে পারি
- না না ডেভিড ফ্রি চ্যালেঞ্জ দিয়েছে যে টোনি যদি মাথা চেঁছে ফেলে, তাহলে ২০০০ ডলার গবেষনা ফান্ডে দেবে, তোমাকে চুলের মায়া ছাড়তে হবে...

আমার কিউবটা আমার বস টনির রুমের ঠিক পাশেই। সকালে অফিস শুরু হতে না হতেই দেখি সিইও ন্যান্সি আর ফাইনান্স ডিরেক্টর হিদার দুই মহিলা টনির রুমে ঢুকলো। আমি তাদের আলাপ শুনছিলাম আমার কিউবে বসে বসে।

কয়েকদিন আগে অপারেশন ইনচার্জ ডেভিড ফ্রিকে একজন চ্যালেঞ্জ করেছে – ১০০০ ডলারের চ্যালেঞ্জ, সে সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহন করেছে – গোঁফ কড়া গোলাপি রঙ করে অফিসে ঘুরে বেড়াচ্ছে, প্রষ্টেট ক্যান্সারের চিকিৎসার গবেষনায় চলে গেছে সেই টাকা। (এই সাইটটাতে আছে এই ফান্ড রেইজিঙ সংক্রান্ত তথ্য:http://ca.movember.com)

এইভাবে মজা করতে করতে ভালো কাজের ফান্ড তৈরী হচ্ছে।

আরেকবার দেখলাম একটা খেলা হলো অফিসে – কোন ডিপার্মেন্ট সর্বাধিক সংখ্যক পেনি জমা করতে পারে – পুরষ্কার হচ্ছে ডিপার্টমেন্টের সবার জন্য একবেলা পিটজা।সব সংগ্রহ যাবে একটা ফান্ডে যারা কমিউনিটির বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে। আমাদের দেশে চারানা আটানা যেমন আজকাল পড়েই থাকে, এইখানে তেমনই পেনিগুলো বলতে গেলে ব্যবহৃত হয়না, এই ড্রয়ারে সেই ড্রয়ারে কোণাকাঞ্চিতে পড়ে থাকে। এই খেলায় জেতার জন্য সবাই বাসার সবকিছু ঝাড়াঝুড়া দিয়ে পেনিগুলি নিয়ে আসে- পেনি রাখার রোল পাওয়া যায় সেই রোলে সাজিয়ে। আমিও আমার ছেলে আর বউকে নিয়ে বাসার যেখানে যত পেনি পেলাম রোল করলাম। প্রায় চারশোর মত পেনি পেলাম খুঁজেপেতে। আমরাও মজা পেলাম, বিশেষ করে আমার ৩ বছরের ছেলে মহা আনন্দ পেল আমাকে হেল্প করে।
খেলার একটা মজার স্ট্রাটেজি হচ্ছে অন্য ডিপার্টমেন্টের পেনি সংগ্রহকে সাবোটাজ করা যায় – ধরেন ক ডিপার্টমেন্টে ৩০০ পেনি সংগ্রহ করেছে, এখন খ ডিপার্টমেন্ট যদি ক ডিপার্টমেন্টের ফান্ডে ৩ ডলার দেয়, তাহলে ক ডিপার্টমেন্টের পেনির কাউন্ট হয়ে যাবে শূণ্য। আর সাবোটাজ মানি কেউ অস্বিকার করতে পারবে না, কেউ যদি সাবোটাজ মানি দেয় সেটি নিতেই হবে, এইটা খেলার একটা রুল। এইভাবে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত একজন আরেকজনকে সাবোটাজ করতে চেষ্ঠা করে, এইভাবে ফান্ডটাও বাড়তে থাকে।

এই রকম অনেক নজির দেখি এইখানে কানাডায় আমার এই ছোট শহরে – ভালো ভালো উদ্যোগের জন্য ফান্ড সংগ্রহের নানান চমৎকার সব আইডিয়া।

শহরের দরিদ্রদের, অভাবীদের জন্য আছে ফুড ব্যাংক, টাকা না দিতে পারো খাবার দাও – শুকনো খাবার, টিনজাত খাবার, পাউডার দুধ থেকে শুরু করে বিনস অথবা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র যেমন টিস্যু পেপার অথবা টুথপেষ্ট।

তাছাড়া টেলিভিশনে বিভিন্ন সেবামূলক সংস্থার নানা রকম মন ছোঁয়া বিজ্ঞাপন চলছে নিত্যই – মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য, সেবা করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

আমি নিজে একবার এইরকম বিজ্ঞাপনে উদ্বুদ্ধ হয়ে একটা সেলাই মেশিন কেনার টাকা দিয়ে দিলাম অনলাইনে আমার মায়ের মৃত্যু দিবসে।মিলাদতো করতে পারি না এইদেশে, তাই ভাবলাম এই পৃথিবীর কোন এক প্রান্তে কোন এক গরীব মহিলা সেলাই মেশিনটা পাবে, তার সংসারে হয়ত কিছুটা স্বাচ্ছন্দ ফিরে আসবে। অনলাইনে দান, কোন ঝক্কি ঝামেলা হলো না, ঘরে বসে আরামসে বেরিয়ে গেল কিছু টাকা। আমার বউকে বোঝালাম “সদগায়ে জারিয়া” জারী থাকবে (যদিও যে প্রতিষ্ঠানকে টাকাটা দিলাম সেটা খৃষ্টানদের পরিচালিত)।

এই রকম জন্মগতভাবে ঠোঁট কাটা বাচ্চাদের অপারেশনের জন্য টাকা দিতে পারেন। আপনার টাকায় একটা বাচ্চার মুখে ফুটবে হাসি। দিনে মাত্র ১ ডলার দিয়ে আপনি স্পন্সর হতে পারেন আফ্রিকার অথবা অন্য কোন গরীব দেশের গরীব কোন বাচ্চার, সেই বাচ্চার ছবি, তার খোঁজখবর পাঠাতে থাকবে, এইভাবে আপনি দেখতে পাবেন আপনার টাকায় দরিদ্র একটি শিশুর জীবনে গুনগত পরিবর্তন আসছে। শুধু দেয়ার মত একমুখি নয়, বরং দেয়া-নেয়ার দুইমুখি একটা যোগসূত্র তৈরী করে দেবে, আপনি তখন সংগত কারনেই দান করতে স্বাচ্ছন্দ অনুভব করবেন।

আমরাও কি বাংলাদেশে বিদেশী দাতা সংস্হার উপর নির্ভর না করে, নিজেদের শক্তি ও সামর্থ থেকে এইরকম নানান মজার মজার আইডিয়ার মাধ্যমে নানা রকম ফান্ড গড়ে তুলতে পারি না বিভিন্ন সামাজিক সেবামূলক কাজের জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১২ সকাল ৮:০৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×