somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জমানো কথার শেষ গল্প ।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে আমার অনেক খুশির একটা দিন । দীর্ঘদিন এইরকম একটি দিনের অপেক্ষায় ছিলাম ।জানতাম না হঠাৎ করে দিনটি আজকেই হয়ে যাবে । অনেকদিন হয়েছে প্রিয়জনদের সাথে দেখা হয় না । যোগাযোগও হতো কম । মাঝে মাঝে শুধু ফোন দিয়ে খবর দেওয়া নেওয়া হত এই পর্যন্তই ।এই ছিল তাদের কাছে আমার সর্বোচ্চ কাছাকাছি থাকা ।

তবে আজ সবাই আমাকে ঘিরে আছে ।আজ আসলেই আমি তাদের অনেক কাছাকাছি আছি । আমাকে নিয়ে অনেক আয়োজন চলছে । সকল কিছুর কেন্দ্রবিন্দু শুধুই আমি । দিনটা সত্যিই আমার । সবাই আমার সেবাযত্নে ব্যস্ত । খুবই ব্যস্ত ।কারো সাথে যে একটু কথা বলবো সেই সুযোগও পাচ্ছি না ।এত ব্যস্ত হলে চলে ? অনেক জমানো কথা ভেবে রেখেছিলাম আজকে সবাইকে ঘটা করে বলবো বলে । অথচ তারা আজকে আমাকে কোন কথাই বলতে দিচ্ছে না যেন দীর্ঘদিনের জমিয়ে থাকা সকল সেবাযত্ন আজকেই ওরা পুষিয়ে দেবে !আরে বাবা ! আমিতো হারিয়ে যাচ্ছি না । আমাকে নিয়ে গোসল করায়ে দিচ্ছে যেন আমি ছোট্ট বাবু, আলতো আদুরে শরীর মোছে দিচ্ছে, সুন্দর তকতকে জামা পরিয়ে দিচ্ছে, গায়ে সুঘ্রান মেখে দিচ্ছে । আমাকে একটুও কষ্ট করতে দিচ্ছে না । যেন সবাই চাচ্ছে আমার যেন আর কোনপ্রকার কষ্ট না হয় ।সময় পার হচ্ছে আর আমি শুধুই অবাক হচ্ছি আমার এতো সেবা যত্ন দেখে। মনের অজান্তেই আমার খুব খুব ভালো লাগছে । শেষ পর্যন্ত তাহলে সবার বোধোদয় হয়েছে । আমি যে একা একা অনেক কষ্টে দিন কাটিয়েছি সবাই সেটা বুঝতে পেরেছে । তাই আজ এত এত আয়োজন ।যাক অবশেষে আল্লাহ আমার দিকে চোখ তুলে তাকিয়েছেন । দীর্ঘদিনের জমে থাকা সকল কষ্ট আজ গুছতে যাচ্ছে ।

আমাকে তারা হাঁটতেও দিচ্ছি না । ওরা তুলে আমাকে খাটে নিয়ে রাখলো খুব সতর্কতার সাথে যেন আমি কাঁচের কোন কিছু পড়লেই ভেঙ্গে যাব হা হা হা... । আমার আসলেই অনেক অবাক লাগছে ।সবার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি শুধু । আমি স্বপ্ন দেখছি না তো ?আমাকে যেভাবে সবাই ঘিরে আছে অবাক হওয়ারই কথা ।একে একে দেখতে সবাই ভিড় জমাচ্ছে ।আহা ! কত পরিচিত মুখ কত মধুময় স্মৃতি আজ ভেসে উঠছে । বাড়িটা যেন আলোয় আলোকিত হয়ে গেল ।আয়নায় আমি নিজের দিকে নিজেই বার বার তাকাচ্ছি আমার কি কোন পরিবর্তন কিংবা দেখতে অন্যরকম লাগছে কিনা । কই নাতো ওই রকম কোন পরিবর্তন হয় নি । পুরাই স্বাভাবিক তবে জামাটাতে আমাকে অনেক মানিয়েছে । নিষ্পাপ লাগছে শিশুদের মত ।আমাকে বেশ লাগছে । যাক অনেক দিন পরে নিজেকে দেখে নিজেরই খুব ভালো লাগছে কত সুন্দর পরিপাটি হয়ে আছি । এতদিন তো দেখতে খচ্চরের মত লাগতো । এখন বুঝতে পারলাম কারো সেবা যত্ন পেলে আমি এইরকমই পরিপাটি থাকতাম সবসময় ।থাক সে কথা এখন আর মনে করে লাভ নেই । এখন তো সবাই আমার সেবাযত্ন করছে এতেই আমি অনেক খুশি কিন্তু সবাইকে কেমন যেন ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে । মনে হয় আমার খোঁজ খবর অনেকদিন রাখতে পারেনি বলে লজ্জায় মন খারাপ করে আছে । আরে বোকা তোদের উপর আমি রাগ করতে পারি ? তোরা যে আমার কত আপনজন সেটা কি তোরা জানিস ?ঠিক আছে আজকে তোদের সব মাপ । এখন আমাকে একটু উদ্ধার কর ।

খাটটা আস্তে আস্তে উপরে উঠে যাচ্ছে । আবার একটু একটু করে হাঁটছেও । একি খাটও কি আজ খুশিতে উন্মাদ হয়ে গেছে !ধীরে ধীরে ওরা আমাকে কোথায় যেন নিয়ে যাচ্ছে । কেন তারা এমন করছে ! এই তোরা এমন করছিস কেন ? আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস ? কেউ আমার কথার কোন উত্তর দিচ্ছে না । খাটের পেছনে দলে দলে সবাই আসছে । আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না । আমাকে নিয়ে এইসব কি হচ্ছে ? আমার কি অপরাধ ? এতক্ষন আমাকে এত সেবা যত্ন করলি এখন কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস তোরা আমাকে ? চুপ করে আছিস কেন ? তোরা কথা বলিস না কেন ? আমার কথা শুনছিস না কেন ?কেউ আমার কথার জবাব দিল না।ওরা ওদের কাজ করে চলে গেল । আমাকে ওরা চিরতরের জন্য একা রেখে চলে গেল । আর কখনো নাকি আসবেনা । আমার সাথে যোগাযোগ করা নাকি ফুরিয়ে গেছে ।আমাকে নাকি এখন থেকে একাই থাকতে হবে । আমি এখন আর ওদের দলে নেই ।

আরে বোকা আমি তো অনেক আগেই তোদের দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছি ।আজ তো শুধুই তার আয়োজন মাত্র...

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:৩৫
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×