somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার দেখা একটি শহরের মৃত্যু

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৮:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই লেখাটা শুরুর আগে অনেক পড়াশুনা করে নেয়া উচিৎ ছিলো, বিশেষ করে লেখার প্রতিপাদ্য যখন আমার প্রিয় শহর ঢাকা। কিন্তু আমি ইচ্ছে করেই তা আর করিনি। আমার লেখায় থাকবে আমাদের সময়ের কথা, মমতা নিয়ে, ভালোবাসা নিয়ে যে শহরের জন্য লিখবো তার ইতিহাস কেন টানা লাগবে সেই লর্ড ক্লাইভের যুগ থেকে ? বরং তা না করে আমি শুরু করবো সেই সময় থেকে, যখন এই আমি নিজ চোখে এ এই অপূর্ব শহরটি কে দেখা শুরু করেছিলাম। আর এই লেখা টা লিখতে বসে এখন মনে হচ্ছে আসলেই, অনেক দিন পার করে দিলাম এই শহরটার বুকে।
আহারে, কি মধুর ই না ছিলো সময় টা।১৯৮৪ সনের শুরুর দিক। আমি তখন ক্লাস ওয়ান অথবা টু এর ছাত্র, রামপুরা থেকে মতিঝিল এর রিকশা ভাড়া ছিল দেড় টাকা, বড় জোর পৌনে দু টাকা। স্পস্ট মনে আছে, বাবা মা এর সাথে মতিঝিল এ জি বি কলোনী থেকে রামপুরা আসতাম রিকশাচালকের জাস্ট পেছনের খালি জায়গা টা তে দাঁড়িয়ে। এটুকু মনে আছে যে মৌচাক থেকে শুরু করে রামপুরা বাজার পর্যন্ত খুব বেশি হলে ২/৪টা চার চাকার গাড়ী দেখতাম, হয়তবা ভাগ্য খুব ভালো থাকলে একটা মালবাহী ট্রাকের দেখা মিলতো কি মিলতো না। রাস্তায় গাড়ী ঘোড়ার দেখা পাওয়া মানে আমার শিশু মনে এক ঈদের খুশী। তখনো কি আমাদের কেউ ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পেরেছিলাম যে সামনে কি দিন আসছে ? ধীরে ধীরে এর পরের মাত্র কয়েকটা বছরে ঢাকার চেহারা কেমন করে যেন চেনা থেকে অচেনা অন্য একটা দিকে মোড় নিতে থাকে। ১৯৯৩/৯৪ এর কথা।থাকি তখন রামপুরা তে। কোন এক যাদুবলে আমাদের চিপা কানা গলির মধ্যে লাখ লাখ রিকশার মেলা বসে।সে আমার কাছে এক মজার দৃশ্য। একের পর এক রিকশা যাচ্ছে আসছে বিরামহীন স্রোতের মত, একটার পেছনে একটা লাগানো, চুল পরিমান ফাঁকা নেই। অবস্থা দেখে মনে হত কোন কারনে একটা রিকশাওয়ালা নিজে থেকে রিকশা না টানলেও পেছনের বাঁধ ভাংগা রিকশার জোয়ার তাকে ঠেলে সামনে নিয়ে যাবে। মানুষের হাটা চলার কোন জায়গা নেই। মানুষেরও যে জ্যাম লাগে ঐ সময়েই প্রথম বুঝতে শিখি। আস্তে আস্তে কানা গলি ছাড়িয়ে নির্মম ও অসহনীয় এই যানজট ছড়িয়ে যেতে থাকে সবখানে।
আমি অর্থনীতি অথবা রাজনীতি বুঝিনা। আমি বুঝতে পারিনা কোন নীতি বলে প্রানবন্ত একটা শহর ঘন্টার পর ঘন্টা এরকম ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। একটা শহর বাসযোগ্য হতে গেলে নাকি তার কমপক্ষে ২৫ ভাগ শুধু চলাচলের রাস্তা থাকার কথা। ডি আই টি আর রাজউক তাহলে কি কাজ নিয়ে এত ব্যস্ত ? এখানে বসে থাকা লোকগুলোর ছেলে মেয়ে মা বোনেরা কি এই রাস্তায় চলাচল করে না ? সারা জীবন ঘুষের বিনিময়ে অবৈধ ভাবে রাস্তাখোর কিছু মানুষকে সুবিধা দিয়ে তারা একটা শহরের অপমৃত্যুই ডেকে এনেছেন। ১৯৯০ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত দায়িত্বে থাকা রাজউক, ডি আই টি , গনপূর্ত, গৃহায়ন প্রতিটা দপ্তরে কর্মরত প্রতিটি কর্মকর্তা কর্মচারী কে আমার স্বপ্নের এই শহর হত্যার অপরাধে আমি দায়ী এবং দোষী মনে করি। সেই সাথে দুর্ভাগা মনে করি নিজেকে, তিলে তিলে আমার প্রিয় এই শহরটার অপমৃত্যু নিজের চোখে দেখতে !!!!
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৮:৩৬
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×