somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দৃষ্টিনন্দন এবোটাবাদ এখন ভুতুড়ে নগরী

০৪ ঠা জুন, ২০১১ রাত ৯:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অল্পদর্শী
পাকিস্তানের এবোটাবাদের দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যম-িত পর্যটন এলাকাটি এখন ভুতুড়ে জনপদে পরিণত হয়েছে। আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন হত্যার পর সেখানে জীবনযাত্রা থমকে গেছে। পর্যটকদের আনাগোনা একেবারেই নেই। ব্যবসা-বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। স্থানীয়রাও এখন দিন কাটাচ্ছেন ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায়। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিরাপত্তার আশ্বাসও কোনো কাজে আসছে না। লাদেন হত্যার পর এবোটাবাদের ওই বাড়িটির প্রতি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছিল। ধারণা করা হয়েছিল, এরপর সেখানে পর্যটকদের ঢল নামবে। কিন্তু ঘটেছে উল্টো। এখন খুব কম লোকই সেখানে যাচ্ছে। এবোটাবাদের ৯ হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ি পর্যটন কেন্দ্র থানদিয়ানি রিসোর্ট এখন মৃত্যুপুরী। উল্লেখ্য, গত ২ মে আমেরিকান নেভি সিল কমান্ডো অভিযান চালিয়ে লাদেনকে হত্যা করে। ফলে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় জনগণ।
এখন পর্যটনের ভরা মৌসুম। তারপরও ওই এলাকায় কেউ যাচ্ছে না। তারা আতঙ্কে অথবা ঘৃণায় সেখানে ভ্রমণ বর্জন করেছে। বিশেষ করে হোটেল-মোটেল মালিক এবং ফল ও খাবার ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম সঙ্কটে। থমকে গেছে জীবনযাত্রা। অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের চিন্তায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন এখানকার বাসিন্দারা। হাতেগোনা কয়েকজন পর্যটকের দেখা পেলেও তারা সেখানে স্বস্তিতে থাকতে পারেন না। আবার হোটেল ব্যবসায়ীরাও তাদের প্রয়োজনীয় সেবা দিতে পারছেন না। পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাও দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা গ্রাস করেছে তাদের উদ্যম ও উদ্যোগকে। এ সময় নতুন বিনিয়োগ তাদের জন্য লোকসানের। অন্যদিকে সুযোগ-সুবিধা না থাকলে পর্যটকরাও আকৃষ্ট হন না। এ উভয় সঙ্কটে ধস নেমেছে পুরো অর্থনীতির। এছাড়া সার্বক্ষণিক আতঙ্ক এখনো তাড়া করছে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি মোটেই স্বাভাবিক নয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে এলাকার জীবনযাত্রা আরো গভীর অন্ধকারে পড়বে।
এটাই এখন পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের করুণ নিয়তি। দেশটিতে ক্রমবর্ধমান জঙ্গি তৎপরতা ওই দুর্গম এলাকায় পর্যটকদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে ওই পর্যটন নগরীতে ব্যবসা-বাণিজ্য এখন হুমকির মুখে। চরম হতাশার অন্ধকারে পড়েছেন ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ; যাদের বেশিরভাগই পর্যটন-সংশ্লিষ্ট কাজকর্মের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। গ্রীষ্মকাল এখানকার হাজার হাজার ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য সুবর্ণ সময়। বিশেষ করে হোটেল, রেস্তোরাঁ, গেস্টহাউস, বেকারি এবং ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা এ সময় খুবই ব্যস্ত থাকেন এবং প্রচুর উপার্জনও করেন। কিন্তু লাদেন হত্যা তাদের সবকিছুই থামিয়ে দিয়েছে।
একজন হোটেল মালিক বলেন, পর্যটকরা এখন আর তাদের অর্থ ব্যয়ের যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না। কারণ এখানে চলাচল এখন বিপজ্জনক। গোটা এলাকা আমেরিকান গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে। তাই সবাই স্বাচ্ছন্দ্য ভ্রমণে দ্বিধাগ্রস্ত। তিনি বলেন, ‘মৌসুম শুরুর এ সময়ে আমরা নতুন করে সবকিছু ঠিকঠাক ও গোছগাছ করি, পর্যটকদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে থাকি। কিন্তু এবার তার কিছুই করা সম্ভব হয়নি। আমাদের সব পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।’
জেলা ব্যবসায়ী সমিতির প্রধান নাঈম আয়ান বলেন, ‘আমাাদের বার্ষিক আয়ের অর্ধেক আসে এই চার মাসে (মে-আগস্ট)। কিন্তু এবার সবকিছুতেই মন্দা। আমরা এখন এক বিরূপ সময় পার করছি। ওসামা হত্যার খবর প্রকাশের পরপরই আমরা এর প্রতিক্রিয়া বুঝতে পারি। আমরা চাই পর্যটক- কিন্তু তারা আসেন না।’ তিনি বলেন, ‘লাদেন হত্যায় কেবল কিছু সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহের জন্য এখানে আসেন, পর্যটক নয়।’
তিন তারকা ‘সারবান হোটেলে’র ব্যবস্থাপক ববি জোসেফ বলেন, ‘এই চার মাসে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৫০০ পর্যটক এ এলাকায় যাতায়াত ও অবস্থান করেন। তিনি বলেন, মে মাসের মাঝামাঝি থেকেই তাদের অন্তত ৫০ শতাংশ রুমভর্তি থাকে। এবার তা ২০ শতাংশও নয়।’
এবোটাবাদ ওই এলাকায় পর্যটন কেন্দ্রগুলো প্রবেশদ্বার হিসেবে চিহ্নিত। তিনটি পৃথক পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়ার ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার হয় এবোটাবাদের রেলস্টেশন। এগুলো হলো থানদিয়ানি, নাথিয়াগিলি এবং কাঘান উপত্যকা। এছাড়া দূরবর্তী গিলগিট-বালিস্তান পর্যটন নগরীতে যাওয়ারও এটি প্রধান জংশন। সূত্র : বিবিসি অনলাইন
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×