somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেয়ামত সংঘটিত হবার নিদর্শণ সমূহ। পর্ব-৬

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম

কেয়ামতের নিদর্শন সমূহের ধারাবাহিক আলোচনায় আজকে শুরু করছি ৫৬ নং থেকে। আব্বা-আম্মার হজ্জ্ব গমন উপলক্ষে গত দু'দিন লেখালেখি করতে পারিনি বলে দুঃখিত। আপনার আমার বাবা-মায়ের জন্য দোয়া করবেন যেন তারা সুস্থ শরীরের হজ্জ্ব পালন করে দেশে ফিরতে পারেন।

৫৬) বাক-জাদুতে সম্পদ উপার্জন এবং চাপাবাজি প্রতিযোগিতাঃ

শরীয়ত সম্মত পন্থায় পয়সা উপার্জনে দোষের কিছু নাই। জজ, উকিল ও ব্যরিষ্টারগণ এ নিয়মেই বেতনভূক্ত চাকুরী করে থাকেন। কিন্তু ভ্রান্ত কথা, ব্যবসায় মিথ্যা শপথ, আর অধিক চাপাবাজিকে পেশা হিসাবে গ্রহণ-কে ইসলাম সম্পূর্ণ নিন্দা করে।
উমর বিন সাঈদ বিন আস রা. একদা পিতা বরাবর খুবই পান্ডিত্য ও সাহিত্য-পূর্ণ ভাষায় একটি আবেদন পেশ করলেন। আবেদন পাঠ শেষ হলে ছেলেকে উদ্দেশ্য করে তিনি বললেন- তোমার কথা কি শেষ হয়েছে? ছেলে বলল- জ্বি হ্যাঁ....! পিতা বললেন- ওহে বৎস! ভেবো না যে, তোমাকে আমি অবহেলা করছি অথবা তোমার আবেদন পূরণে আমি অসম্মত। তবে শুনে রাখ- নবী করীম (সাঃ) কে আমি বলতে শুনেছি- "অচিরেই এমন জাতির আবির্ভাব হবে, যারা গরু-গাভীর মত মুখ ব্যবহার করে উপার্জন করবে।" (মুসনাদে আহমদ)

আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সাঃ) বলেন- "কোয়ামত ঘনিয়ে আসার অন্যতম নিদর্শনি হচ্ছেঃ
১) অসৎ ব্যক্তিদের মর্যাদা দান
২) সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তিদেরকে অসম্মান
৩) অশ্লীল সংলাপ ব্যাপক আকার ধারণ
৪) (দ্বীন ছাড়া) সকল কাজ সুচারুরূপে সম্পাদন
৫) সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ব্যাপক অনাচার প্রকাশ। "ব্যাপক অনাচার" কি? জিজ্ঞেসা করা হলে নবীজী বললেন- আল্লাহর কালাম ছেড়ে যা কিছুই লেখা হবে, সবাই অন্যায়।" (তাবারানী)

৫৭) কোরআন অবহেলা এবং অনর্থক গ্রন্থের ছড়াছড়িঃ

কেয়ামতের অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে, মানুষ প্রচুর পরিমাণে বই-পুস্তক পড়বে। বিভিন্ন বিষয়ের বই দিয়ে ঘরোয়া লাইব্রেরী সাজিয়ে তুলবে। কোরআনের জ্ঞান অবহেলা করে পার্থিব জ্ঞান অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
উপরোক্ত হাদিসেই এর প্রমাণ পাওয়া যায়--"সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ব্যাপক অনাচার প্রকাশ পাবে............।"

৫৮) কোরআনের পাঠক বেড়ে যাবে, জ্ঞানী (ফক্বীহ)দের সংখ্যা কমে যাবেঃ

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সাঃ) বলেন- "অচিরেই এমন এক জামানা আসবে, যখন কোরআনের পাঠক বেড়ে যাবে, দ্বীনের বিশুদ্ধ জ্ঞানসম্পন্ন লোক কমে যাবে, ওহীর জ্ঞান উঠিয়ে নেয়া হবে এবং সংঘাত বেড়ে যাবে। সংঘাত কি? জিজ্ঞেসা করা হলে নবীজী বললেন- "পারস্পারিক হত্যাযজ্ঞ-"। অতঃপর এমন এক জামানা আসবে, যখন কোরআন পাঠ করা হবে, কিন্তু কোরআনের আয়াত তাদের কণ্ঠাস্থি অতিক্রম করবে না (অর্থাৎ কোরআনের বিধান বাস্তবায়িত হবে না) অতৎপর এমন এক জামানা আসবে, যখন কাফের, মুনাফেক, মুশরেক ব্যক্তি ইসলাম নিয়ে মুমিনের সাথে তর্কযুদ্ধ করবে।" (মুস্তাদরাকে হাকিম)

আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সাঃ) বলেন- "কেয়ামতের পূর্বমুহূর্তে জ্ঞানকে আল্লাহ আকস্মিক উঠিয়ে নেবেন না; বরং উলামাদেরকে উঠিয়ে নেবেন। অবশেষে যখন বিজ্ঞ আলেম বলে কেউ থাকবে না, তখন মানুষ মূর্খদের শরণাপন্ন হয়ে ফতোয়া জিজ্ঞেস করবে। আলেম নামধারী মূর্খরা ভুল ফতোয়া দিয়ে নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে, অন্যদের-ও পথভ্রষ্ট করে ছাড়বে।" (বুখারী-মুসলিম)

বর্তমান সময়ে মুসলমানদের ধর্মীয় পরিস্থিতি যাচাই করলে দেখবেন যে, একদল যুবসম্প্রদায় সুমধুর কণ্ঠে কোরআন পাঠে প্রতিযোগিতা শুরু করেছে। রকমারি ডিজাইনে, নানান সুরে, বাহারি ভঙ্গিতে কোরআনের আওয়াজ ভেসে আসছে। অপরদিকে কোরআনের সঠিক শিক্ষা ও ইসলামী বিধি-বিধান নিয়ে গবেষষণা করার মত লোক নেই। যারা কোরআন পাঠ সুমধুর করতে গিয়ে এত সময় ব্যয় করছে, তাদের কাউকে যদি আপনি পবিত্রতা সংত্রান্ত একটি মাসালা জিজ্ঝেসা করেন বা ছহু সেজদা কখন - কি কারনে দেওয়া লাগে- জিজ্ঝেসা করেন, সঠিক উত্তরটি পাবেন না।

চলবে...........
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×