somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোনটি সঠিক? আমরা কি ভুল করছি? আসুন জানার চেষ্টা করি।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ৯:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নামাজে দাড়িয়ে হাত কোথায় বাঁধবেন;

ক) সাহাল ইবন সা'দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, লোকদের নির্দেশ দেওয়া হতো যে, সালাতে প্রত্যেক ডান হাত বাম হাতের বাহুর উপর রাখবে (২/১০২ হাঃ ৭০৪ বুখারী)

খ) হুলব আ-ত্বঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বাম হাতের জোড়ের (কব্জির) উপরে ডান হাতের জোড় বুকের উপরে রাখতে দেখেছি (আহমদ, ১/৯০ তুহফাতুল আওয়াযী, ১/১০৯ ফিকহুস সুন্নাহ)

গ) তাউস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সলাতরত অবস্থায় ডান হাত বাম হাতের উপর স্থাপন করতে তা নিজের বুকের উপর বেঁধে রাখতেন (১/৪১১ হাঃ ৭৫৯ আবূ দাউদ)

ঘ) ওয়ায়েল ইবনে হোজর (রাৎ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সাথে সলাত আদায় করলাম, তিনি বাম হাতের উপর ডান হাত সংযোগ করে স্বীয় বুকের উপর রাখলেন (তাঃ ৪৭৯ ইবনে খুযাইমাহ, হাঃ ২৭৫ বুলুগুল মারাম)

এই হাদীসটি ইমাম ইবনে খুযায়মাহ স্বীয় গ্রন্থে সহীহ সনদে রিওয়ায়েত করেছেন ৯২০ পৃঃ বুলুগুল মারাম)

অনুচ্ছেদঃ ১৫
তাকবীরে তাহরীমার পর বুকের নীচে কিন্তু নাভির উপরে বাঁ হাতের ওপর ডান হাত রাখবে; সিজদারত অবস্থায় হাত কাঁধ বরাবর মাটিতে রাখবে। (মুসলিম)

ঙ) হাদীস নং- ৭৯১
ওয়াইল ইবনে হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি নবী (সাঃ) কে দেখলেন, তিনি নামাযে প্রবেশ করার সময় দুই হাত তুললেন এবং তাকবীর বললেন। হাম্মামের বর্ণনায় আছে, তিনি দুই হাত কান পর্যন্ত উঠালেন; অতপর চাদরে ঢেকে নিলেন এবং ডান হাত বাঁ হাতের ওপর রাখলেন। তিনি যখন রুকুতে যাওয়ার ইচ্ছা করলেন, উভয় হাত কাপড়ের ভিতর থেকে বের করলেন, অতপর তা উত্তোলণ করলেন, অতপর তাকবীর বলে রুকুতে গেলেন, তিনি যখন "সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ' বলে উভয় হাত উপরে উঠালেন। তিনি যখন সিজদায় গেলেন, দুই হাতের তালুর মাঝখানে সিজদা করলেন।

চ) ইবন জুরাইজ থেকে তাঁর পিতার সুত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আলী (রাঃ)-কে সালাতে নাভীর উপরে ডান হাত দিয়ে বাম হাতের কব্জি ধরে রাখতে দেখেছি (১/৪১০ হাঃ ৭৫৭ আবূ দাউদ)

ইমাম আবূ দাউদ (রাঃ) বলেন, সাঈদ ইবন জুবাইর থেকে 'নাভীর উপরে' উপরে বর্ণিত আছে। আর আবূ মিজলায বলেছেন, "নাভীর নীচে"। আবূ হুরায়রা থেকেও অনুরূপ বর্ণিত আছে, কিন্তু তা তেমন শক্তিশালী নয়। হাদীসটি "যঈফ"।

ছ) সলাতে নারী-পুরুষ উভয়েই বুকের উপর হাত বাঁধিকে। নারীরা বুকের উপরে আর পুরুষেরা নাভীর নীচে হাত বাঁধিবে এইরূপ পার্থক্যের কথা সহীহ হাদীসে নেই। নারী-পুরুষ ইভয়ের জন্য একই নির্দেশ (সূত্রে শাইখ আবদুস সত্তার {ত্রিশালী}

জ) কোন সহীহ হাদীসে নাভীর নীচে হাত বাঁধার কথা নেই। হানাফী মাযহাবের সুপ্রসিদ্ধ ফেকার কিতাব হিদায়া, ইউসুফী প্রেসের ছাপা, বাবে ছিফাতুস সলাত ১ম খন্ডের হাশিয়া ৮৬ পৃষ্ঠায় আছে।
অর্থাৎ সলাতে নাভীর নীচে হাত বাঁধিবার হাদীস "যঈফ" এবং উহার যুউফ বা দুর্বলতা সম্বন্ধে মুহাদ্দিসগণ সকলেই একমত। (সূত্রে শাইখ আবদুস সত্তার {ত্রিশালী}।

ঝ) নাভীর নীচে হাত বাঁধা সম্পর্কে মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ ও অন্যান্য হাদীস গন্থে চারজন সাহাবী ও দুজন তাবেঈ থেকে যে চারটি হাদীস ও দু'টি আছার বর্ণিত হয়েছে, সেগুলি সম্পর্কে মুহিদ্দিসীনের বক্তব্য হলো "লা-ইয়াসলুহু: ওয়া হি:দুম মিনহা-লীল ইসতিদ লা-লী" (যঈফ হওয়ার করণে) এগুলির একটিও দলিল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয় (১/৫৫৭-৫৫৮ মিরা'আতুল মাফাতীহ, ২/৮৯ তুহফাতুল আহওয়াবী)

ঞ) প্রচলিত সলাতে দাঁড়িয়ে নাভীর নীচে হাত বাঁধা হয়। এটা সহীহ হাদীসের বিপরীত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সব সময়ই ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে বুকের উপর বা সিনার উপর হাত বাঁধতেন। এটাই সুন্নত (১/১০২ বুখারী "মূল", ১/১৭৩ মুসলিম "মূল", ১/১১০ আবূ দাউদ "মূল", ৬ পৃষ্ঠা মারাসিল "মূল"ম ১/৩৪-৩৫ তিরমিযী "মূল", ১/৫৯ ইবনে মাজাহ "মূল", ১/৭৫ মিশকাত "মূল", ১/২৩৩ ইবনু খুযায়মাহ "মূল", ১৬০ পৃঃ মুয়াত্তা মুহাম্মদ "মূল")।

ট) প্রচলিত সলাতে নাবী ও পুরুষের কিছু নিয়ম পার্থক্য দেখা যায়। কিন্তু কোন সহীহ হাদীসে এরূপ পার্থক্যের কথা বলা নেই। বরং পুরুষ ও নাবী নির্বিশেষে সলাতের পদ্ধতি একই রকম (২/৫২ হাঃ ৬০৩ বুখারী, মিশরী ছাড়া ১ম খন্ড ১৪৯ পৃঃ, সুত্রে মুফতী মোহাম্মাদ আবদুর রউফ)। সামান্য কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া।

(টিকাঃ ইমাম আবু হানিফার মতে তাকবীরে তাহরীমার সময় কান পর্যন্ত হাত উঠাতে হবে; ইমাম মালেক ও শাফেয়ীর মতে কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠাতে হবে। আবু হানিফার মতে, নাভির নীচে হাত বাঁধতে হবে, মালিক ও শাফেয়ীর মতে, বুকের নীচে কিন্তু নাভির ওপরে যে কোন স্থানে হাত বাঁধতে হবে। হাত উঠানো ও হাত বাঁধার ব্যাপারে ইমাম আহমেদে একমত হানাফীদের অনুরূপ এবং অপর মত মালেকী ও শাফেযীদের অনুরূপ।)

এবার নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করুন। কোনটি মানবেন? সহীহ হাদীস? না-কি অন্যকিছু? না-কি কারো মতবাদ?
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×