somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একাত্তরের কর্ণেল মনজুরুর রহমান

১১ ই জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

((লেখাটি আলী মাহমেদ এর ব্লগ থেকে পাওয়া।তবে এটি তারো মৌলিক রচনা নয়।একটি বই থেকে নেয়া।
সূত্রঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, অষ্টম খন্ড, পৃষ্টা: ৬০৫-৬০৮ ))


ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ। চীফ কর্নেল মনজুরুর রহমান। এই কলেজের অসম্ভব প্রিয় একটি মুখ।যুদ্ধের সময় ক্যাডেট কলেজ থেকে সবাই পালিয়ে যান কিন্তু কর্নেল রহমান কয়েকজনের সঙ্গে থেকে যান। মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার পাশাপাশি তিল তিল করে গড়ে তোলা এই প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যেতে তাঁর মন সায় দিচ্ছিল না।
পাক আর্মি ঘিরে ফেলে একদিন এই কলেজ। নেতৃত্ব দিচ্ছিল ১২ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন ইকবাল। সঙ্গে ঝিনাইদহের অল্প কয়েকজন স্থানীয় মানুষ। টমেটো নামের একজন মিথ্যা অভিযোগ করে, কর্নেল রহমান তার পরিবারের লোকজনকে মেরে ফেলেছেন।

পাক আর্মিরা একেক করে মারা শুরু করে।

পাক আর্মির ক্যাপ্টেনের সঙ্গে কর্নেল রহমানের কথা কাটাকাটি হয়। কর্নেল রহমান বলেন, আমি একজন সামরিক অফিসার। আমাকে এভাবে মারা অন্যায়। আমার অপরাধের বিচার একমাত্র সামরিক আদালতেই হতে পারে। একজন আর্মি কর্নেল একজন ক্যাপ্টেনের কাছে যে আচরণ পেতে পারে- আমাকে সেটা দেয়া হচ্ছে না কেন?
কর্নেল রহমানের কোন যুক্তিই এদেরকে প্রভাবিত করলো না। কর্নেল রহমান মৃত্যুর জন্য প্রস্তত হলেন। হাত থেকে খুলে দিলেন ঘড়ি, পকেট থেকে বের করে দিলেন কলেজের চাবি, যা ছিল তাঁর কাছে।একজন সিপাই তাঁর ঘড়ি উঠিয়ে নিজের হাতে দিয়ে দেখলো কেমন মানাচ্ছে তাকে- আর হ্যা হ্যা করে হাসতে থাকলো।
কর্নেল রহমান প্রাণ ভিক্ষা চাইতে রাজী হলেন না। শুধু ৫ মিনিট সময় চাইলেন।
ধীর পায়ে এগিয়ে গেলেন নিজ হাতে লাগানো গোলাপ গাছটার দিকে। হাঁটু গেড়ে বসলেন। কি যেন বিড়বিড় করে বলছিলেন- দূর থেকে শুধু ঠোঁটনড়া দেখা গেল। তারপর হাত তুলে মোনাজাত করলেন। মোনাজাত শেষ করে বললেন, আয়্যাম রেডী, তাকিয়ে রইলেন ক্যাপ্টেনের চোখে চোখ রেখে।
ক্যাপ্টেন ইকবাল পরপর ৩টা গুলি করলো।
লুটিয়ে পড়লেন কর্নেল রহমান। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগে প্রায় শোনা যায় না একটা স্বর শোনা গিয়েছিল,

"মা আয়েশা, তোকে দেখে যেতে পারলাম না।"
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×