somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই বেশ ভালো আছি...

১০ ই এপ্রিল, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কয়েকদিন ধরেই অপেক্ষায় আছি।বৈশাখ,বৃষ্টি-দুটোরই।হেলতে দুলতে আয়েশী চালে বৈশাখ এই এলো বলে।কিন্তু দ্বিতীয় জনের এখনো কোন খোঁজ নেই।আজকাল দেখি বেশ রকমের গরম পড়া স্টার্ট করেছে।সকাল থেকেই রৌদ্রের খেলা চলে।বৃষ্টিতো দূরে থাক,আশি বছরের বুড়োর পাকা চুলের মত শুধু সাদা মেঘের ওড়াওড়ি।ঐ মেঘে নাকি মন কেমন কেমন করে।গরমের চোটে গলাটাই শুকিয়ে আসে শুধু।মন অবধি আর পৌঁছতে পারেনা।তবু হাঁ করে মাঝে মাঝে আকাশ দেখি।এক কোণায় বৃষ্টি নামানি মেঘ যদি দেখা যায়।কিচ্ছুনা।শুধু একটুখানি বৃষ্টি।ভেতর,বাইরের সব মেঘ ঝেটিয়ে বিদায় করতে পারে এরকম একটা বৃষ্টি।


কয়েকদিন ধরেই মনটা গুমোট হয়ে আছে নানা কারণে।মাত্র শেষ হওয়া মিড এক্সাম বিপর্যয় ভুলতে কষ্ট হচ্ছে।অথচ হিসাব নিকাশ করতে গেলে সব দায়ভার নিশ্চিন্তে আমার কোলে চড়ে বসবে।কাজেই উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর জন্যও এক মিলিমিটার জায়গায় বাকি নেই।যত বড় হচ্ছি দিন দিন তত গাধা হচ্ছি।নিজের ভাল যে বোঝেনা তাকে গাধা ছাড়া আর কি বলা যায়।আমিও সব মেনে নিয়ে হে হে করে হেসে উঠি।যেন গাধা হওয়াতেই দুনিয়ার সব সুখ।আই ইউ টির বিরক্তিকর জিনিসগুলার মধ্যে একটা হচ্ছে মিড এক্সাম শেষ হতে না হতেই পেছন থেকে সেমিস্টার ফাইনাল ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলে।কাজেই মিড এক্সাম খারাপ করে শান্তিমত কয়েকদিন হাপুস হুপুস কাঁদবো সে উপায়ও রাখেনি বজ্জাত অথরিটি।মিড এক্সাম শেষ হতে না হতেই শার্টের হাতায় চোখে মুছে সেমিস্টার ফাইনালে আরো বড়সড় কান্নাকাটির জন্য প্রস্তুত হও।"বাছা,পালাবে কোথায়??" বাংলা সিনেমার ডায়লগের মত তখন মনে হয়- "ছেড়ে দে শয়তান,এ জীবন আর রাখবোনা!!" মনের কথা মনেই থাকে।জীবন তো আর বাংলা সিনেমা না।


এতদিন শুধু শুনতাম।আর এখন বোঝার ঠ্যালায় বাপ মায়ের দয়া দাক্ষিণ্যে প্রাপ্ত জানটা যায় যায় অবস্থা।মেকানিক্যাল এ যখন ভর্তি হলাম তখন থেকেই শুনে আসছি-এইটা এইরকম সাবজেক্ট যা সেইরকম কঠিন।ফার্স্ট ইয়ারের তাচ্ছিল্যে সেইটা বরাবরই উড়িয়ে দিয়েছি।কিন্তু থার্ড ইয়ার এ আর সম্ভব হচ্ছেনা।পড়াশুনা নিয়ে কোনদিনই সিরিয়াস ছিলাম না।আমার মত পাবলিকও এখন রেফার্ড এক্সাম এর দুঃস্বপ্ন দেখে ইদানিং ঘুমের মদ্ধে চিল্লায়ে উঠতেসে।মেকানিক্স স্যারকে দেখলে এখন নবাব সিরাজ উদদৌলা ছবির জল্লাদ মনে হয়।মাথা থেকে ঘাড় নামানোর ধান্দায় যে মানুষটা পরীক্ষায় দুর্বোধ্য প্রশ্ন করার জন্যে নিজের জীবন সঁপে দিয়েছে।সাথে গলাকাটা অন্যান্য সাবজেক্ট গুলাও বসে নেই।এমন মাইনকার চিপায় জীবনে খুব বেশি পড়িনি এ কথা হলফ করে বলতে পারি।


এত কিছুর পরেও বন্ধুদের হাসি হাসি মুখগুলোই এখনো পুরো যান্ত্রিক হতে দেয়নি।ওদের দিকে তাকিয়ে আটটা পাঁচটা ক্লাস করার যন্ত্রণা মুছে ফেলি হাসিমুখে।হই হই করে মাঠে নেমে যাই ফুটবল নিয়ে।কিংবা করিডোরে ঘন্টার ঘন্টা ক্রিকেট খেলা।সন্ধ্যা রাতে রুম আঁধার করে ভোর অবধি নতুন ডাউনলোড করা কোন ইংলিশ সিরিয়াল পাগলের মত একটার পর একটা দেখে যাওয়া।আমার জীবনে বাবা মার চে বন্ধুদের সান্নিধ্যেই বেশি সময় কেটেছে।কখন কীভাবে পরিবারের জায়গাটুকু এইসব বজ্জাতগুলা দখল করে নিয়েছে টেরই পাইনি।তবে ইদানিং টের পাচ্ছি।আর তো বেশি দেরি নেই।খুব বেশি হলে আর দেড়টা বছর।চেনা চেনা মুখগুলো চোখের সামনে থেকে ঝাপসা হওয়া শুরু করবে।কাঁধে যে জায়গাটাতে তুহিন কিংবা মুহিব হাত রেখে চলতো সে জায়গাটুকুতে বাস্তবতা নামের রষকষহীন বেয়াদব মানুষটা জোর করে খামচে ধরবে।স্মৃতিটুকুতেও কি ছায়া ফেলতে চাইবেনা? দেখা যাক...


দূরের চিন্তাগুলো আপাতত ওখানেই থাকুক।তারচে গল্পের বোকা কাকটার মত চোখ বন্ধ করে দুনিয়ার সব অস্থিরতা থেকে নিজেকে কিছুক্ষণের জন্য সরিয়ে রাখি।নচিকেতা বাবুর সাথে গলা মিলাতে পারলেও খারাপ হয়না-"এই বেশ ভাল আছি"

হ্যা,ভালই আছি।কথাটা আজকাল বড়বেশি বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয়...





সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০০৮ রাত ৯:৫৮
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×