somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পয়লা বছর,পয়লা লেখা

১৬ ই এপ্রিল, ২০০৮ সকাল ১১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেকানিক্স এক্সাম দিয়ে রুমে এসে পিসির সামনে বসে পড়লাম।এক্সাম কেমন হল? হুম্‌ম...গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। অন্তত পরীক্ষায় যেগুলা আসছিল তার চে কম আজাইরা। পরীক্ষা শেষে সবার প্রথম যেটা মনে হয়েছে যে শুধু শুধু এসি ছাড়া বিশ মিনিট বৈশাখি গরমে কষ্ট করে আসলাম। কেষ্ট মেলার চান্স কম। কেবল ক্লাস এটেনডেন্সটা ছাড়া। সেটার কথা ভেবেই আপাতত বগল বাজাই।

টু বি অর নট টু বির বেড়াজাল ভেঙ্গে শেষ মেষ পয়লা বৈশাখে ঢাকা দর্শন করে এলাম। এবং জীবনে প্রথম বারের মত ঢাকায় আমার পয়লা বৈশাখ উদযাপন। যানজট আর গরমের চিন্তায় যাবার আগেই যেমন কাহিল হয়ে পড়েছিলাম দুলদুল বাসে দুলতে দুলতে সেটা কখন চলে গেল বুঝলামই না। যাবার পথে কোন প্রব্লেমই হয়নি। শুধু নিউমার্কেটের মাথায় কিছুক্ষণ মাইনক্যার চিপায় ছিলাম। এরকম হ্যাপা অন্যান্য সময়ও পোহাতে হয়। তারপর অবশ্য বেশি বুদ্ধি করে আজিমপুর এর ঐ দিকে নেমেছিলাম রিকশা নিয়ে সোজা নেসক্যাফে যাবো বলে। বেশি বুদ্ধি থাকলে মাঝে মাঝে যা হয়। ছোট বড় নানা সাইজের মাশুলও দিতে হয়।নেমে দেখি কোন রিকশাই নেসক্যাফের ঐদিকে যাবেনা। কি মুশকিল। পরে আর কোন উপায়ের খোঁজ না পেয়ে পা দুটোতেই সওয়ার হলাম। গরমের ব্যাপারটা তখন থেকেই টের পাওয়া শুরু। গিয়েছিলাম লালটু মার্কা একটা শার্ট পড়ে। ওটা পড়ার ইচ্ছে ছিলনা মোটেও। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঢাকা যাবার আগে ড্রয়ার থেকে পাঞ্জাবি বের করে দেখি ওটার উপর দিয়ে মাত্র বোধহয় কোন ট্রাক্টর চলে গিয়েছে। ইস্ত্রির কোন খোঁজ নেই। কি আর করা।মনে কষ্ট চেপে শার্ট পড়েই মদনের মত বের হলাম।

নেসক্যাফে গিয়ে দেখি সিনা,আহসান আগে থেকেই আছে। অবশ্য ওদের আগে থেকেই থাকার কথা ছিল। কিন্তু সিনা কে আশা করিনি। সাথে ওর আরো কয়েকজন বন্ধু ছিল। ওদের সাথেও পরিচিত হলাম। আরিফকে ফোনে বলে দিয়েছিলাম। সেও সাততাড়াতাড়ি চলে এল।নেটওয়ার্ক এর যন্ত্রণায় অবশ্য ঠিক ঠাক কমিউনিকেট করতে প্রব্লেম হচ্ছিল। তারপর সেখানে কিছুক্ষণ আড্ডা। আই ইউ টি থেকে আমি,স্বপ্নিল,তুহিন। আর ওরা কয়েকজন। একদল গেল পেনাং এ। আমরাও যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কয়েকজন ভেটো দিল। অতদূর গেলে আর চাংখারপুল আছে কি করতে। সো শর্ট মার্চ টু চাংখারপুল। ওইখানে খাওয়া দাওয়া করে কার্জন হলের লনে গিয়ে গোল হয়ে বসলাম। ওখানে আড্ডা হল অনেকক্ষণ। আমি চুপচাপ বসে বসে চারপাশের মানুষগুলো দেখছিলাম। দেখেছি অবশ্য সারাটা পথ জুড়েই। তবু এখানে এসে একটু ভাল করে সবাইকে দেখার অবকাশ হল। কি অদ্ভূত সুন্দর লাগছিল পরিবেশটা। এত মানুষ এত সাজুগুজু করে এসেছে। হাসিখুশি প্রাণচঞ্চল মুখ গুলোর দিকে তাকিয়ে মন খারাপ করে থাকা যায়না। আর মেয়েদের একেকজনের শাড়িতে রঙের কি বাহার!!আমি মুগ্ধ হয়ে দেখছিলাম। পুরোনো প্রশ্নটাই নতুন করে মাথায় খেলছিল... শাড়িতে মেয়েদের এত সুন্দর লাগে কেন?

ওখানে যারা ছিল তাদের বেশিরভাগই কপোত কপোতি। মনের সুখে গুনগুন করছে সবাই। বন্ধু ছাড়া অবশ্য কেউ একা আসতে চায়ওনা। নিজেকে কেমন জানি ব্যতিক্রম ব্যতিক্রম লাগে সবার মাঝে। যেন একা আসাটা মহা গুরুতর একটা অপরাধ। আমরা অনেকজন এক সাথে ছিলাম বলে সেরকম চিন্তা মাথায় সেভাবে আসছিলনা।

কার্জন হলে থাকতে থাকতেই সাড়ে তিনটার মত বেজে গেল। তুহিন উসখুস করছিল চলে যাবার জন্য। আমিও না করলাম না। অবশ্য ওর এফেয়ারটা টিকে থাকলে এতসকালে যাবার কথা মুখে আনতে পারতোনা। বোধহয় আমিও ভাবতে পারতাম না। ওখান থেকে উঠে টি এস সি র দিকে হাঁটা ধরলাম সবাই। এবারের বৈশাখে মানুষ কেন যেন কম কম মনে হচ্ছিল। টি এস সি র দিকে আস্তে আস্তে এগুতেই বোঝা গেল সংখ্যাটা একেবারে কম নয়। টি এস সি একেবারে উপচে পড়ছে লাল পেড়ে সাদা শাড়ী আর বর্ণিল পাঞ্জাবীওয়ালাদের ভীড়ে। মানুষের ভীড় আমার কখনোই ভাল লাগেনা। কিন্তু এই টি এস সি টাকে কেন যেন কখনোই অপছন্দ করতে পারিনা। কোন উপলক্ষ্য থাকুক আর নাই থাকুক সারাক্ষণ কেমন কল কল করে কথা বলে যায়!

অতঃপর ওখান থেকেই রিকশায় আজিমপুর। দুলদুলের টিকিট কেটে একেবারে সোজা আই ইউ টি। এ যাত্রায় জ্যাম ট্যাম বা দুনিয়ার অন্য কোন সমস্যা নিয়েই ভাবতে হয়নি। বাসে উঠে এত গরমের মাঝেও কখন ক্যামনে ঘুমিয়ে পড়েছি নিজেও জানিনা। তুহিন এর ধাক্কায় কিছুক্ষন পরে চোখ মেলে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ওর দিকেই তাকাই।

- কি হইসে?
_দোস্ত ওঠ, আই ইউ টি পৌছায়া গেসি!!
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×