somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দৃষ্টি জুড়ে আকাশ আমার, আকাশ জুড়ে তুমি.....

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রোজা আসার পর থেকেই পুবের রোদ মাথার ওপর উঠিয়ে তবেই ঘুম থেকে ওঠা হয়। আজকে নয়টার দিকেই উঠে গেলাম। রাতে ঘুম ভাল হয়েছে সেটাও বলতে পারবোনা। অথচ বিছানায় উঠেছিলাম একেবারে সেহরী খাবার পর পর। আমার খালি মনে হচ্ছিল যদি সাড়ে দশটায় উঠতে না পারি। অতদুর যাবার আগেই সোয়া নয়টার দিকে সেই যে ঘুম ভাঙ্গলো আর জোড়া লাগলোনা।আমি মিছেমিছি বিছানায় এপাশ ওপাশ করলাম আরো কিছুটা সময়। শেষমেষ সাড়ে দশটার দিকে আর সহ্য হলোনা। দুলদুলে উঠে যখন সীটে হেলান দিয়ে বসলাম তখন ঘড়ির কাটা সোয়া এগারোটার কাছাকাছি। ভাবলাম বেশ আগেই ওঠা হল। পৌছেও যাওয়া যাবে আগে আগে। আমি তখন আগে গিয়ে একা একা কি করবো সেই চিন্তা করা শুরু করলাম। কিন্তু উপরতলায় যিনি থাকেন আমার সাথে মস্করা না করলে তার মনে হয় ভাল লাগেনা। প্রথমটা হল বনানী পৌছানোর পর। তিথির ফোন রিসিভ করার পর পরই হ্যালো বলার আগে প্রথম যে কথাটা মনে পড়লো আমি চন্দনের গুড়া আনতে ভুলে গেছি! লাইফে রিওয়াইন্ড অপশনটা কেন নাই সেটা ভেবে কিছুক্ষণ হা হুতাশ করলাম। অবশ্যই মনে মনে। তিথিকে ভুলে যাবার কথাটা বলতেও ভুলে গেলাম! সায়েন্স ল্যাব এর মোড় পর্যন্ত পৌছতে পৌছতে বারোটা বাজলো। বাহ! চলেইতো এসেছি। নিজের সময়জ্ঞানের উন্নতি দেখে নিজেই রীতিমত পুলকিত। উপরতলার মহাশয় তখন দ্বিতীয় ফাইজলামিটা করলেন। পাঁচ মিনিটের পথে তিনি পাক্কা একঘন্টা জ্যামে আটকে রাখলেন। ওদিকে ওর ক্লাস যেখানে একটায় শেষ হবার কথা ছিল সেটা সোয়া বারোটাতেই শেষ। শুনে আমার মুখটা কেমন তিতে হয়ে গেল। এমন চমৎকার টাইমিং ব্রাডম্যান তার জীবদ্দশায়ও বোধহয় করে যেতে পারতেন না। টেন্ডুলকার এখন মরে গেলেও পারবেনা। সামনে পিছের অনড় বাসগুলো দেখতে দেখতে খালি একটার পর একটা দীর্ঘশ্বাস পড়তে লাগলো। হা কপাল!
সেন্ট্রাল লাইব্ররির মুখ দেখতে দেখতে একটা বিশ। তাও ভাল। শেষমেষ গন্তব্যে তো পৌঁছানো হল।
তারপর…. তারপরের সময়টা কেমন ঘোর লাগা।
বেশ কিছু সময় চলে যাবার পর বৃষ্টিটা এলো একেবারে না বলে কয়ে। লাইব্রেরির ভেতরে কিছুক্ষণ থেকে অত:পর ডিপার্টমেন্ট বরাবর হাঁটা।
করিডোরে হাঁটাহাঁটি, কয়েকটা ক্ষণ থেমে থাকা, শেষমেষ সিঁড়ির ওপর অস্থায়ী শেকড় গাঁড়া।
বৃষ্টি তখন ঝুমঝুমিয়ে হাসছে।
আমি বলি এ বৃষ্টি থামবে। ও বলে, না।
বৃষ্টি শেষমেষ আমার দিকে মুচকি হেসে একসময় সত্যি সত্যি বিদায় নিলো। আর আমি হাসলাম ওর দিকে তাকিয়ে।
আরো কিছুটাক্ষণ তাহলে পাওয়ার খাতায় জমা হল। রিকশা ধরতে পা বাড়ালাম। ঘড়িতে তখন পৌণে তিনটা।
ধানমন্ডি দুই এর দিকটায় কেউ যেতে রাজি নয়। ঘুরতে ঘুরতে শেষমেষ পেলাম একজনকে। ত্রিশ টাকা শুনে ও গড়িমসি করে। আমি তাড়া দিলাম ওঠো।পাঁচটা টাকা কতটা সময় বাড়িয়ে দিলো তোমার আমার সে খেয়াল আছে?
রিকশার গতি ক্ষণে ক্ষণে থামে। ঘড়িতে শুধু সময় বাড়ে। আমি জ্যামের প্রতি মনে মনে স্তুতিবাক্য আওড়াই। কতদিন পর কে জানে।
টুকটুকিয়ে কথা চলে। টক ঝাল মিস্টি।
শেষ সময়টা এলোই বলে। আমি বিদায় নেই হাসি মুখে। শ্যামলীতে যখন দুলদুলের ফিরতি বাসের খোঁজে ফুটপাথে পা বাড়াই ততক্ষণে পাঁচটা ছুঁই ছুঁই।
তিথি তখন অনেক পেছনে। না দেখা দুরত্বে।
আমি পাশাপাশি কারো হেঁটে চলার আওয়াজ পাই। না তাকিয়েই বুঝতে পারি।
ভালোবাসারা কখনোই বুঝি পাশ ছাড়া হতে চায়না।
১৬টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×