somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিতৃত্ব । ( এজাবত যত লেখকের লেখা পড়েছি তার ভিতর সেরা একটি গল্প। ) ২য় খন্ড ।

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২য় খন্ড ..........


নারীদেহের স্পর্শে ঘুম ভেঙে গেলে নিজের মধ্যে কেমন যেন সাড়া টের পায় সে। তবু নিজেকে হয়তো নিবৃত্ত করতে পারত, কিন্তু জুঁইয়ের প্ররোচনায় নিষেধের বাঁধ ভেঙে যায়। অসামান্য সুন্দরী এক নারীর দেহ তাকে মোহমুগ্ধ করে রাখে। কাজেই সন্ধ্যায় যখন তার জন্য নতুন পায়জামা-পাঞ্জাবি নিয়ে আসা হলো, বিনা ওজরে সে দুলহা সেজে চলল বিয়ে করতে। কাজি অফিসে যাওয়ার পর জানল জুঁইয়ের আরো একটি নাম আছে এবং সেই নামই কাবিননামায় লেখা হলো।
কান্দাপাড়া ছাড়িয়ে তাদের রিকশাটি যখন হাসপাতালের সামনে দিয়ে যাওয়া-আসা করছিল, তখন কেমন যেন একটু ভয় ভয় লাগছিল, মনে হচ্ছিল পরিচিত কেউ তাকে দেখে ফেললে কী হবে? তাই নবপরিণীতা জুঁইয়ের আঁচল টেনে নিয়ে নিজের মুখ ঢেকে রাখে। মোতালেবের মুখ ঢাকার এ-চেষ্টায় হাসিতে ভেঙে পড়ে জুঁই, ‘আরে হুজুর, আপনে শরম পাইতাছেন কী জন্য। এ-বিয়াটা আসলে ছোটবেলার বিয়া বিয়া খেলার মতন একটা ঘটনামাত্র। আমার পেটে বাইচ্চা আসলে মাসি আপনেরে কইব, এইবার জুঁইরে তালাক দেন।’
লজ্জা কাটানোর চেষ্টায় বলা জুঁইয়ের কথা যেন মোতালেবকে আরো লজ্জায় ফেলে দেয়। জুঁই সেটা বুঝতে পেরে মোতালেবকে আরো লজ্জা দেওয়ার জন্য বলে, ‘আমার মনে হয় বিকালে যে শট লাগাইছেন, তাতেই কাম হইয়া গেছে। আমি পেটের ভিতরে একটা বাইচ্চার কান্দন শুনতাছি।’
মোতালেব নিচুস্বরে বলে, ‘লজ্জা-শরমের মাথা খাইছেন আপনে। রিকশাআলা হুনতাছে না?’
‘শমসের শুনতাছ নি?’ এবার জুঁই রিকশাঅলাকে ডাকে এবং উত্তরে রিকশাঅলা হেসে বলে, ‘কান ত অহনও নষ্ট হয় নাই।’
‘হুজুর শরমাইয়েন না, শমসের মিয়া আমরার পাড়ার বান্ধা কাস্টমার। আমার লগেও বহুবার শুইছে সে। আজকাও দুপুরে আপনে যখন ঘুমাইতেছিলেন, তখন একবার দরজা ধাক্কাইয়া গেছে। আমি তারে কইছি, আমি এখন আমার স্বামীর লগে আছি, তুমি আরো কয়দিন পরে আইও।’
‘আপনে চুপ করেন। নাইলে আমি কিন্তু রিকশা থেইক্কা নাইমা আডা দিমু।’
রিকশা থেকে নেমে হাঁটা দেওয়ার শক্তি যে মোতালেবের নেই, তা জুঁইও জেনে গেছে। পেছনের রিকশায় সিপাইসহ স্বয়ং রমলা মাসি আছে। তবু মোতালেবকে আশ্বস্ত করে বলে, ‘হুজুর, আপনে অইলেন আমার বিবাহ করা স্বামী। আপনে চুপ করতে কইলে চুপ না কইরা উপায় আছে? এই যে আমি মুখে তালা দিলাম। আপনে না কওন পর্যন্ত এই তালা আর খুলতাম না।’
জুঁইয়ের যে-ঘর থেকে মাত্র ঘণ্টাখানেক আগে তারা বেরিয়ে গিয়েছিল, সে-ঘরই বেশ সাজানো হয়েছে। দরজায় রঙিন নিশান কেটে ঝালর লাগানো হয়েছে। ঘরের ভেতরেও ঝালর টানানো হয়েছে। বেলি, রজনীগন্ধা ও গোলাপ দিয়ে বানানো মালা দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে বিছানার চারদিক। রেশমা, মৌরি ও চশমা ধান-দূর্বা দিয়ে তাদের ঘরে তুলে আনলে হঠাৎ মোতালেবের মনে পড়ে বহু বছর আগে হোসনা বেগমকে বিয়ে করে নিয়ে আসার পর তাদের বরণ করে ঘরে তুলবে বলে মঙ্গলকুলো নিয়ে এভাবেই দাঁড়িয়েছিল মাতৃকুলের নারীরা। একই সঙ্গে গ্লানি এসে গ্রাস করে তাকে, মনে পড়ে হোসনা বেগমকে সে যেভাবে তালাক দিয়ে এসেছে, তা শরিয়ত মোতাবেক হয়নি এবং এক স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ইদ্দতকাল অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই সে এমন একজনকে বিয়ে করেছে, জেনা করাই যার কর্ম। শুধু তা-ই নয়, আজ বিকেলে সে নিজে জেনার মতো গুরুতর পাপ করেছে। ফলে রমলা মাসির নিজের হাতে বহু যক্ষ করে রান্না করা পোলাও-কোর্মা খেতে গিয়ে বমি হয়ে যায় তার এবং রাতে জুঁইয়ের ঐকান্তিক চেষ্টা সত্ত্বেও সে সহবাসে লিপ্ত হতে পারে না।
দিনকয়েক পর জুঁইয়ের কাছ থেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সব শোনার পর মাসি ডেকে আনে মোতালেবকে, ‘আপনে মিয়া কেমন মরদ। আমার মাইয়াগুলানের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দরী ও যুবতী মাইয়াটার লগে বিচিকাটা খাসির মতন পইড়া পইড়া ঘুমান।’
‘আমার ডর লাগে।’
‘কিয়ের ডর?’
‘রোজ হাশরের ময়দানে জেনা করনের কী জওয়াব দিমু।’
‘আল্লাহর কাছে আমার নামে বিচার দিয়া কইবেন, কান্দাপাড়ার রমলা মাসি আপনেরে বন্দি কইরা জেনা করতে বাধ্য করছে। গুনাগাতা সব আমার নামে লেখাইয়া দিবেন।’
জুঁই হাসতে হাসতে বলে, ‘মাসি গো, তোমারে কী কমু, পয়লা দিন তুমি আমার ঘরে হুজুররে খাওইয়া-দাওয়াইয়া রেস্ট করাইতে পাঠাইলা না। তিনি খাইলেন, খাইয়া নাক ডাকাইয়া ঘুম দিলেন। আমি আর কী করুম হুজুরের পাশে শুইয়া ঘুম দিলাম। কতখান ধইরা ঘুমাইছি কইতে পারি না। হুজুরের চুমাচাপটির চোটে ঘুম ভাইঙ্গা গেল আমার। বাধা দিয়া থামাইতে পারি নাই।’
রমলা মাসি কৌতুকের হাসি দিয়ে বলে, ‘কী মিয়া, বিয়ার আগে যে-কামটা জোর কইরা করলা, বিয়ার পর সেইটা পারো না কী জন্য?’
‘মাসি, আমার হুজুররে আর বকাবকি দিও না। সব ঠিক অইয়া যাইব।’
‘কী ঠিক অইব। তুই মাগি তোর জোয়ানকি দিয়া কী করছ? একটা মরদের মধ্যে মর্দানি জাগাইতে পারছ না। নে, বড়িটা ল, ঘুমাইতে যাওয়ার ঘণ্টাখানিক আগে তর হুজুররে এইটা খাইতে দিবি।’
বড়ির গুণে হোক আর জুঁইয়ের জোয়ানকির জোরে হোক মোতালেব সে-রাতে আবার নারীর স্পর্শে শিহরিত হয়।
পরের দিন জুঁইয়ের কাছ থেকে এ-তথ্য জানার পর রমলা মাসি এবার রেশমার সঙ্গে মোতালেবের দ্বিতীয় বিয়ের আয়োজন করে। শুধু তা-ই নয়, মাসির পূর্বসিদ্ধান্ত অনুযায়ী একে একে চশমা ও মৌরিকে বিয়ে করতে বাধ্য হয় মোতালেব।
মোতালেব প্রথম প্রথম কয়েকদিন তার পোষা দুই জিন শেরালি ও পিরালিকে ডাকাডাকি করছিল। একসময় তার মনে হয়, এই পাপপুরীতে ওরা আসতে নারাজ, অন্য সময় মনে হয় তার স্ত্রী হোসনা বেগম ঠিকই বলত, জিনটিন কিচ্ছু নেই, এগুলো তার কল্পনা। শেরালি ও পিরালির সাড়া না পেয়ে রিকশাঅলা শমসের মিয়াকে দিয়ে খবর পাঠায় খাদিজার জামাই তাহেরের কাছে। শমসের খবর নিয়ে এসে বলে, ‘তাহের মিয়া আপনের লাইগ্যা কিছু করত পারব না। হে আপনেরে জানাইতে কইছে আপনের বউ মইরা গেছে। আপনের দ্বিতীয় মেয়ে আয়শারে তার জামাই তালাক দিয়া কইছে, যার বাপ মুয়াজ্জিন অইয়া বেশ্যাপাড়ায় আশ্রয় নিছে, তার লগে ঘর করন যায় না। বাচ্চা দুইটারে রাইখা দিয়া আপনের মেয়েরে আপনের বাড়িত পাঠাইয়া দিছে।’
মোতালেব এ-খবর পেয়ে অস্থির বোধ করে, তার আরো পাঁচটি মেয়ে অলি, কলি, জুলি, মলি ও পলির কথা মনে পড়ে, যাদের নাম সে রাখেনি, রেখেছিল ওদের মা। মোতালেব ঠিকই ওদের চিনত; কিন্তু সবসময় না চেনার ভান করত, অলিকে হয়তো কলি ডাকত আবার পলিকে ডাকত অলি। এখন মনে হয়, মেয়েগুলোরে আরেকটু ভালোবাসা দিয়ে বড় করা উচিত ছিল তার।
মেয়েদের খবর এনে দিতে শমসের মিয়াকে ধরে মোতালেব। খবর যা পায়, তা তাকে পাগল করে তুলে এবং সে এক রাতে পালানোর চেষ্টা করে। পারে না, ধরা পড়ে যায় তালপাতার সেপাই এবং অন্য পাহারাদার জাম্বো ও গাম্বোর কাছে। শাস্তি হিসেবে রমলা মাসি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মোতালেবকে মুগুরপেটা করায়। পরে আবার ডাক্তার ডেকে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করে। মোতালেবের চার বউয়ের দুজন রেশমা ও চশমা মারধরের এ-ঘটনা দেখে পাড়ার আর সব মেয়ের সঙ্গে হাসি-তামাশা করলেও জুঁই ও মৌরি এ নিয়ে মাসির সঙ্গে ঝগড়াঝাটি পর্যন্ত করতে শুরু করে।
দিনের বেলা তার বউদের সবাই কাস্টমার নিয়ে ব্যস্ত থাকে। কখনো কখনো রাতেও তার চার স্ত্রীর সবাই স্পেশাল ডিউটিতে নিযুক্ত হয়। তখন সে তালপাতার সেপাইয়ের সঙ্গে পাড়া পাহারা দিয়ে বেড়ায়, পাহারা দেওয়ার এক ফাঁকে পালানোর মতলবে সিপাইকে ফাঁকি দিয়ে পাড়া ছেড়ে বেরিয়ে যায়। বেরোতে গিয়ে ধরা পড়ে। মোতালেবকে মারধর করার পর জুঁই তাকে নিয়ে নিজের ঘরে তোলে এবং মাসির চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে পুরো এক সপ্তাহ জুঁই তার ঘরে কোনো খদ্দের ঢুকতে দেয় না।
সে রাতদিন সেবা করে মোতালেবের, মাঝেমধ্যে মৌরিও আসে। রিমান্ডে গরম পানি ঢালায় তার কপালে যে দাগ পড়েছিল প্রতিদিন তিনবেলা মলম লাগিয়ে তাও প্রায় সারিয়ে ফেলে জুঁই। এ ঘটনায় অভিভূত হয়ে পড়ে মোতালেব। টুপি তো পল্লিতে ঢোকার দিন মাথা থেকে ফেলে দিয়েছিল, এবার জুঁইয়ের ইচ্ছায় দাড়িও উধাও করে দিলো। অবশ্য তার নিজেরও মনে হচ্ছিল এত পাপাচারের মধ্যে দিন গুজরান করে দাড়ি রাখার কোনো অর্থ হয় না।
পুরো এক সপ্তাহ পর মোতালেব তখন বেশ সুস্থ হয়ে উঠেছে, জুঁই রাতে তার এক বান্ধা বাবুর সঙ্গে থাকতে রাজি হয়। বাবুকে ঘরে রেখে বাইরে এসে মোতালেবকে ডাকে, ‘হুজুর, একটা কথা আছে।’
জুঁই প্রথম দিন থেকেই মোতালেবকে ‘হুজুর’ ও ‘আপনি’ সম্বোধন করে আসছে, মোতালেবও তাকে ‘আপনি’ বলেই ডাকে। জুঁইয়ের ডাকে পাড়ার একপ্রান্তে এসে দাঁড়ায় মোতালেব। আসার পথে মেয়েদের কেউ কেউ তাকে ‘বেরেশ’ মানে ‘ষাঁড়’ বলে যে রসিকতা করছে তাও বুঝতে পারে। প্রথম প্রথম এরকম ডাক শুনে তার রাগ হতো। এখন মেনে নিয়েছে। আজ আবার ‘বেরেশ’ ডাক শোনার পর তার ছোটবেলার একটা ঘটনা মনে পড়ে, তাদের গ্রামে একমাত্র শুক্কুর আলীরই একটা ষাঁড় ছিল। গাই গরুর যখন প্রজননের সময় হয়, তখন সে ডাকাডাকি শুরু করে, যাকে মোতালেবদের যমুনা চরের গ্রামগুলোতে গাইয়ের ডাক ওঠা বলে। ডাক উঠলে সবাই গরু নিয়ে যেত শুক্কুর আলীর বাড়িতে। মোতালেবের মনের মধ্যে যে-ঝড় বয়ে চলছে তা তো জুঁইয়ের জানা নেই, তাই সে উৎফুল্ল কণ্ঠে বলে, ‘হুজুর, শুনেন, আমার বাইচ্চা অইব। আমি কিন্তু অহনও মাসিরে কিছু জানাই নাই। আপনে কিছু কইয়েন না।’
‘আসমানে চান উঠলে সেইডা আপনে গোপন রাখবেন কেমনে?’
মোতালেবের প্রশ্নের উত্তরে জুঁই বলে, ‘সময় অইলে জানানো যাবে। কিন্তু একটা কথা আপনেরে জানাইয়া রাখি, আমি চাই না, আমার মাইয়া এই বেশ্যাপল্লিতে বড় হোক।’
‘মাইয়া হইব নিশ্চিত হইছেন কেমনে?’
‘আপনেরে তো মাসি আনছে মাইয়া জন্ম দেওয়ানোর লাইগ্যা।’
এরপর আর কথা চলে না। মোতালেবের মনে পড়ে, একবার তাদের গাই গরুটার ডাক উঠলে সে নিজেও তার আব্বার সঙ্গে নিজেদের গাই গরু নিয়ে গিয়েছিল। তাদের গাই গরুর সঙ্গে বেরেশের মিলন ঘটিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে পাঁচ টাকা দিতে হয়েছিল শুক্কুর আলীকে। জুঁই যখন তাকে জানাল সে গর্ভবতী হয়েছে, নিজেকে তার শুক্কুর আলীর ষাঁড়ের মতো মনে হলো। তবু জুঁইয়ের আনন্দ ম্লান করে দেওয়া হবে বলে নীরবতা অবলম্বন করে। অবশ্য সিপাই চলে আসায় চাইলেও মোতালেব আর কিছু বলতে পারত না। সিপাই বলে, ‘জুঁই, তর বান্ধা বাবু বইয়া বইয়া বিরক্ত অইতাছে। তাড়াতাড়ি যা।’
জুঁই চলে যাওয়ার পর সিপাই বলে, ‘লও মুয়াজ্জিন, চা-বিড়ি খাইয়া আসি।’
গত কয়েক মাসের মধ্যে মুয়াজ্জিন মোতালেবের জীবনে আরো একটা বড় পরিবর্তন হলো। এখন সে চা-সিগারেটে আসক্ত হয়ে পড়েছে। সিপাই জোর করে মাঝে কয়েকদিন মদও খাইয়ে দিয়েছে তাকে। মদ্যপানে এখন আর আপত্তি নেই তার। তবে মদ গলা দিয়ে নামার সময় যে জ্বলুনি শুরু করে, তা সে সহ্য করতে পারে না বলেই এড়িয়ে চলে। সিপাই বলে, ‘পয়সা থাকলে কান্দাপাড়ায় বাঘের চোখও কিনতে পারবা। কিন্তু পলাইতে চাইলে পারবা না।’
মোতালেব বলে, ‘যদি আমার শেরালি আর পিরালিরে আনতে পারতাম?’
একসময় এই পল্লির অনেকের জন্য মোতালেব মুয়াজ্জিনের দেওয়া জিনের পানিপড়া আনতে গিয়েছে। সে-কথা সে এখন স্বীকার করতে নারাজ। তাই হেসে উড়িয়ে দিয়ে বলে, ‘ধুর মিয়া, জিনটিন বইল্যা কিছু নাই।’
‘হেইডা বুঝনের মতো ঘিলু তোমার আছেনি? আমি কোরানের হাফেজ, আমি জানি, জিন আর ইনসানের মাজেজা।’
‘হ, সবজান্তা শমসের অইছ?’
সিপাইয়ের সঙ্গে আলাপ চালিয়ে গেলেও মোতালেব পালানোর তক্কে তক্কে আছে, তাই বলে, ‘লও, তোমারে মাল খাওয়ামু। আমার চাইর বউ পাঁচশো কইরা মোট দুই হাজার টাকা দিছে।’
পরিকল্পনা ছিল সিপাইকে মদ খাইয়ে মাতাল করে পালানোর চেষ্টা করবে। প্রকৃতপক্ষে ঘটে উলটোটা। নিজেই মদ খেয়ে এত মাতাল হয় যে বমি করে ভাসায় মদের দোকান এবং একসময় অচেতন হয়ে দোকানের চাটাইয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
সকালে রমলা মাসি এসে ভাঙায় তাদের ঘুম, ‘বলি মুয়াজ্জিন, আজকা যে তোমার কোর্টে হাজিরার দিন, এইটা মনে নাই?’
কান্দাপাড়ায় বন্দি হওয়ার পর অনেকবারই মোতালেবের মনে হয়েছে, কোনটা ভালো ছিল, জেলখানা, না পতিতাপল্লি? শেষ পর্যন্ত অবশ্য সিদ্ধান্তে আসতে পারে না সে। কারণ, তার মনে হয়, মেয়েটাকে বোধহয় সে নিজেই খুন করেছে আর খুনের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
জুঁই ও মৌরি তার কাছে বারবার জানতে চেয়েছে, ‘হুজুর, সত্য কইরা কন, আপনে কি সত্যই নিজের মাইয়ারে খুন করছেন?’
‘না। আমি খুন করি নাই। বাচ্চাটা মনে হয় আমি কোলে নেওয়ার আগেই মারা গেছিলো।’
রিমান্ডে যেমন বারবার নিজের মেয়েকে খুন করার কথা স্বীকার করেছে, তেমনি জুঁইয়ের প্রশ্নে বারবারই অস্বীকৃতি জানিয়ে যাচ্ছে। তবু জুঁই জানতে চায়, ‘মাসি যে কয় সে পয়সাপাতি দিয়া খুনের ঘটনাটা চাপা দিছে। ডাক্তাররে মেলা টাকা দিয়া নিউমোনিয়ার কথা লিখাইয়া আনছে?’
জুঁইকে বোঝাতে গিয়ে মোতালেব যেন নিজেকেই বোঝায় যে, সে তার মেয়েকে খুন করেনি। এখন কোর্টে হাজিরা দিতে যাওয়ার জন্য তৈরি হতে গিয়ে সে ওই ঘটনাটা আরও একবার ভেবে দেখার চেষ্টা করে। মোতালেব তো হাসপাতালে আসার আগে ঠিক করে এসেছিল স্ত্রীর কাছে মাফ চেয়ে নেবে, অথচ তাকে বাথরুম থেকে বেরোতে দেখে মুখ ঢেকে পালাল।
পালাল কেন? একবার মনে হয় লজ্জা পেয়ে পালিয়েছিল সে। এত বছরের দাম্পত্য জীবনে হোসনা বেগম তো সাত চড়ে রা করেনি, অথচ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসার দিন সে স্বামীকে মারার জন্য বঁটি নিয়ে তাড়া করেছিল, ওই ঘটনা মনে পড়ে যাওয়ায় পালিয়েছিল সে? কিছুই ঠিকমতো মনে করতে পারে না। তার আবার মনে হয় কোলে নিতে গিয়ে বাচ্চাটার গলা টিপে ধরেনি তো? তার মাথা কি তখন থেকে খারাপ হয়ে গেছে, বাড়তি কিছু ভর করেছে যার প্ররোচনায় সে নিজের মেয়েকে খুন করেছে?
মামলার বাদী হোসনা বেগম মারা যাওয়ার পর আদালতে তার পক্ষে কোনো আইনজীবীও উপস্থিত থাকে না এবং সাক্ষ্য-প্রমাণে বিবাদী যে নিরপরাধ, তা প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক মামলার একমাত্র আসামি মুয়াজ্জিন ও হাফেজ আবদুল মোতালেব আলীকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। পাড়ায় ফেরার পথে মোতালেবের একবার মনে হয়, যত পাহারা থাকুক, সে পালাতে চাইলে জনগণ তাকেই সহযোগিতা করবে। শেষ পর্যন্ত সে তা করে না, তার মনে হয়, এই মুখ নিয়ে আয়শার সামনে গিয়ে দাঁড়াবে কী করে। খবর পেয়েছে, খাদিজা ও আয়শার ছোট পাঁচ বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোটটি, যার নাম পলি, সে তাঁতিদের এক ছেলের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। বাকি চারজনকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি আগলে রেখেছে আয়শা। খাদিজা ও তার জামাই আবু তাহের যেমন পারে সহযোগিতা করছে ওদের।
বেকসুর খালাস হয়ে ফিরে আসার পর মোতালেব কান্দাপাড়ার পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে আরো খাপ খাইয়ে নেয়। নিজের চার স্ত্রী জুঁই, রেশমা, চশমা ও মৌরির সঙ্গে সারাক্ষণ রঙ্গরসিকতা করে বেড়াচ্ছে। আজ এর কাছ থেকে টাকা নেয় তো কাল ওর কাছ থেকে। চাইলে মাসিও টাকা-পয়সা দেয় তাকে। সেই টাকা সে ওড়ায় তালপাতার সেপাইয়ের সঙ্গে মদ-সিগারেট খেয়ে।
দিন-মাস কাটে। সন্তান প্রসবের সময় এগিয়ে আসছে জুঁইয়ের। রমলা মাসি চাপ দিচ্ছে, ‘মুয়াজ্জিন সাব, অহন তুমি জুঁইরে তালাক দেও।’
মোতালেবের এখন আর কোনো কথা বলতেই বাধে না, মাসির মুখের ওপর বলে দেয়, ‘আপনে তো নিয়মনীতি কিছুই জানেন না, পোয়াতি স্ত্রীরে শরিয়ত মোতাবেক তালাক দেওয়া যায় না। আগে বাইচ্চাডা হোক, তারপর ভাইবা দেখবেন নে।’
‘তো তোমার এই কথাডা না হয় মাইনা লইলাম। কিন্তু তোমার বাকি তিন বউয়ের পেটে বাইচ্চা আসতাছে না কেন?’
‘আমি তো আর আল্লাহ না। জীবন তাইনে দেন।’
‘কথায় কথায় এত আল্লাহবিল্লাহ কইরো না তো? আমার তো মনে অইতাছে তোমার লগে মিইল্যা গিয়া আমার মাইয়াগুলান বাচ্চা না অওনের কোনো ব্যবস্থা নিছে।’
মোতালেবের চার বউয়ের মধ্যে একমাত্র মৌরি এ-সময় উপস্থিত ছিল। বয়সে সে সবার ছোট হলেও সে সবার তুলনায় ঠোঁটকাটা, মাসির মুখের ওপর আঙুল তুলে বলে, ‘আমি তো মুয়াজ্জিনরে আমার সঙ্গে থাকার সময় জোর কইরা পায়জামা পরাইয়া লই?’
‘কেন? এই কাজ করছ কেন? আমি তরারে কই নাই আমার অনেক মেয়ে বাচ্চা লাগব।’ রাগে যেন কাঁপে রমলা মাসি। সে মোতালেবকে বলে, ‘তুমি কনডম পরাইতে দেও কেন?’
মোতালেবের উত্তর দিতে হয় না, মৌরি বলে, ‘হ, বাইচ্চা বিয়াই আর তুমি তারারে দিয়া ব্যবসা করো?’
‘চুপা করিস না, মৌরি। আগামী দুই মাসের মধ্যে পেট বাঁধাইতে না পারলে তরে আমি দৌলতিয়ায় বেইচ্যা দিমু।’
‘তোমার কেনা মাল, তুমি যেখানে ইচ্ছা বেচবা’ বলে চলে যায় মৌরি।
ওইদিন রাতে মরিয়ম ওরফে মৌরির সঙ্গে থাকতে গিয়ে মোতালেব জানতে চায়, ‘কেনা মাল বলতে মাসিরে কী বুঝাইছিলা?’
মৌরি জানায়, সে প্রেমিকের হাত ধরে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এসেছিল বিয়ে করে ঘরসংসার পাতবে বলে। সে জানত না, তার প্রেমিক কত বড় নষ্ট মানুষ। ওই প্রেমিক তারে কুমিল্লা থেকে নিয়ে আসে টাঙ্গাইলে। দুই রাত হোটেলে কাটানোর পর নিজেদের জন্য বাড়ি দেখার নাম করে কান্দাপাড়ায় রেখে পালায়। সে একে একে বলে রেশমা ও চশমার কথা। ওরা দুজন চাচাতো বোন। রমলা মাসির এক মহিলা দালাল গার্মেন্টসে চাকরি দেবে বলে রংপুর থেকে এখানে নিয়ে আসে তাদের।
মোতালেবের আগ্রহ জুঁইয়ের কথা জানার, যা সে জুঁইয়ের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেও জানতে পারেনি। তাই জানতে চায়, ‘জুঁইয়ের কথা কিছু কইলা না?’
‘ও আল্লাহ, জুঁই আপা তোমারে কিছু জানায় নাই? তার লগে না তোমার গলায় গলায় পিরিত।’
‘না, জানায় নাই, আমি কত জিগাইলাম, হে উত্তর দেয় না।’
‘জুঁই আপা নিজের ইচ্ছায় আইছে এই পাড়ায়।’
মোতালেব আশ্চর্য হয়, ‘এইডা কী কইলা?’
‘আগে শুইন্যা লও, জুঁই আপা কিন্তু এসব কথা আমারে ছাড়া আর কাউরে কয় নাই। তুমিও কাউরে কইবা না কিন্তু। জুঁই আপা আছিল হিন্দু। তার আগের নাম ছিল জয়শ্রী। আচ্ছা, তুমি কি আমার আসল নামটা জানো?’
‘জানি, তোমার আসল নাম মরিয়ম। হজরত ঈসা নবীর মায়ের নামে নাম। আচ্ছা, জুঁইয়ের কথা কও।’
‘জুঁই আপা কলেজে পড়ত। একদিন কলেজ থেকে ফেরার পথে চাইর মুসলমান বেডা তারে ধইরা নিয়া পাটক্ষেতের ভিতর ফালাইয়া র‌্যাপ করল। র‌্যাপ করার দৃশ্য ভিডিও করল তারা। তারপর ওই ভিডিও আবার ছড়াইয়া দিলো আশপাশের সব জাগায়।’
‘কী আশ্চর্য, র‌্যাপ করল আবার ভিডিও করল? ভিডিওতে ওই চারজনরে দেখা যায় নাই?’
‘না, ওই বেডাদের একজন ছিল ভিডিও দোকানের মালিক, সে জুঁই আপার সঙ্গে প্রেম করতে চাইছিল। আপা রাজি না হওয়ায় তিন বন্ধুরে লইয়া এই কাজ করছে।’
‘হের পর?’
‘আর কী, ঘটনা জানাজানি হইয়া যাওয়ায় আপারে তার বাড়ির মানুষ শেল্টার না দিয়া দিলো বাড়ির বার কইরা। আপা আইস্যা ধরল ওই ভিডিঅলারে। কইল, তুমি আমারে বিয়া করবা, নাইলে আমি গলায় ফাঁস দিমু আর সবকিছু লেইখ্যা রাইখ্যা যামু। বেডা ডরাইয়া গিয়া রাজি অইল। জুঁই আপাও মুসলমান হইয়া তারে বিয়া করল, নতুন নাম রাখল সালেহা।’
‘তারপর?’
‘তারপর আর কী? বন্ধুবান্ধব লইয়া যে-মেয়েরে গ্যাং র‌্যাপ করছে, তারে কি আর বউ হিসেবে মানতে পারে পুরুষ মানুষ। বেডা আপারে ছোঁইয়াও দেখে না আর। বাইরে বাইরে পলাইয়া বেড়ায়। এর মধ্যে আরেকটা বিয়া কইরা বউ আইন্যা ঘরে তুলল। নতুন বউ খাটে পা তুইল্যা খায় আর আপা খাইট্টা মরে। তাইলে সইত, কিন্তু বেডা আবার দিন-রাইত যখন ইচ্ছা আপারে ধইরা মাইরধর করে। না পাইরা আপা পলাইয়া আইস্যা নিজেই এই কান্দাপাড়ায় উঠল।’
মৌরি যখন জুঁইয়ের জীবনের করুণ কাহিনি মোতালেবকে শোনাচ্ছিল, তখনই জুঁইয়ের প্রসববেদনা শুরু হয়। মাসি তাকে নিয়ে হাসপাতালে রওনা দেয়। সঙ্গে নিয়ে যায় সিপাইকেও।
পরদিন সকালে দরজা খুলে মোতালেব দেখে খুশির বান ডেকেছে রমলা মাসির পট্টিতে। এ-ওকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছে। রমলা মাসি বলে, ‘মুয়াজ্জিন, তাড়াতাড়ি হাতমুখ খুইয়া আসো। পরীর মতন একটা মাইয়া হইছে তোমার।’
হাত-মুখ ধুয়ে মাসির কাছ থেকে এক বাটি মিষ্টি নিয়ে মৌরির ঘরে যায় মোতালেব। ততক্ষণে মৌরির ঘুম ভেঙে গেছে এবং মাসির চিৎকার করে দেওয়া খবর তার কানেও এসে গেছে। মোতালেবকে মিষ্টি খেতে দেখে ফুঁসে ওঠে মৌরি, ছোবল দেওয়ার আগে সাপ ফণা তুলে যেমন শব্দ করে, তেমন হিসহিস শব্দ করে বলে, ‘মিষ্টি না খাইয়া তুমি বিষ খাইতে পারো না?’
‘কী অইছে, ক্ষেপছ কিয়ের নিগা।’
‘তোমার এখন জুঁই আপারে ডিভোর্স দেওয়া লাগব। মাসি একটা নতুন মেয়ে কিনছে, তোমার লগে তার বিয়া দিব। তবে মাইয়াডা কুনোভাবে পোষ মানতাছে না। মাইরধর চলতাছে। কিন্তুক মাইয়ার এক কতা। বিষ খাইব, তবু পরপুরুষের লগে জিনা কইরব না।’
‘বালাই কয় মাইয়া। না, আমিও আর বিয়াসাদিত নাই। আমি আমার বাচ্চাডারে তো নিমুই, লগে জুঁইরে লইয়া পলামু। তুমি খালি আমারে এই পাড়া থিকা বাইর অওনের ব্যবস্থা কইরা দিও।’
‘সত্যই আপনে জুঁই আপারেও লইয়া যাইবেন?’
‘হ, সত্যই নিয়া যামু।’
‘ঠিক আছে, তাইলে আমি ব্যবস্থা কইরা দিমু।’
হাসপাতালে এক সপ্তাহ কাটিয়ে ফিরেছে জুঁই। মোতালেব ঘুরেফিরে জুঁইয়ের ঘরে আসে। মৌরি তো সারাক্ষণের জন্য আসন পেতে বসেছে এ-ঘরে, ‘কী হুজুর, তুমি না জুঁই আপা আর তার বাচ্চারে নিয়া পলাইবা?’
‘পলামু, কটা দিন যাক।’
‘হুজুর, আমি তো আপনের লগে যামু না। আমরা তো জানি, আপনে নিজের মাইয়ারে খুন কইরা জেলে গেছিলেন।’ জুঁই স্পষ্ট আপত্তি জানিয়ে বলে, ‘পারলে আমি নিজেই মাইয়াটারে লইয়া পলামু।’
‘আপনেরারে আমি কতবার কইছি, আমি আমার মাইয়াডারে খুন করি নাই। মাইয়ার মা সন্দেহ কইরা মামলা দিছিল।’
হঠাৎ ‘আগুন, আগুন’ চিৎকার শুনে দৌড়ে বেরিয়ে যায় মৌরি ও মোতালেব। ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই জানতে পায়, নতুন আনা মেয়েটা গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মৌরির কাছে মোতালেব নতুন মেয়েটার নাম জানতে চায়।
‘নাম জাইনা কী অইব?’
‘কও না, জাইনা রাখি।’
‘পলি।’
আচমকা যেন পাগলামি ভর করে মোতালেবের গায়ে। ‘কী কইলা? পলি...’ বলতে বলতে ছুটতে থাকে সে। সবাইকে ঠেলে এগিয়ে যায়। তারপর মেয়েটি যেখানে মরে পড়ে আছে, সেখানে গিয়ে থামে সে। পলি! এ যে তার ছোট মেয়েটা।
হঠাৎ মাথা চক্কর দিয়ে ওঠে মোতালে১বের। আগুনে পোড়া এই ঝলসানো শরীরের মেয়েটা তার আত্মজা! আর এর সঙ্গেই কিনা তার বিয়ে দিতে চেয়েছিল রমলা মাসি।
একটু সুস্থির হওয়ার পর ভিড়ের মধ্যে জুঁইকে দেখতে পায় এবং এটাই সুযোগ বুঝতে পেরে দ্রুত ফিরে যায় জুঁইয়ের ঘরে।
বাচ্চা মেয়েটি ঘুমাচ্ছে। তার মনে হয়, ওর সঙ্গে পলির কোথায় যেন একটা মিল আছে। এমন সময় বহুদিন পর শেরালি ও পিরালির কথা শুনতে পায় সে। ওরা বলে, ‘মাইয়াডারে কোলে লন, কেউ দেখতে পাইব না।’
‘এমুন মাসুম বাইচ্চারে আমি মানুষ করুম কেমনে?’
এবার আর জিনেরা কথা বলে না, কথা বলে মৌরি, ‘লইয়া যান, নিয়া আপনের মেয়েদের হাতে তুইল্যা দেন। তারাই এরে বড় করতে পারব।’
মোতালেবকে দ্বিধা করতে দেখে মৌরি নিজেই বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নেয়, ‘আপনে শর্টকাট মাইরা মেইন রোডে গিয়া খাড়ান, আমি ঘুরাপথে অরে লইয়া আয়তাছি।’
মৌরি বেরিয়ে যেতে জিনদের দুজনও তাড়া লাগায় এবং সেও ভাবে, এক মেয়েকে হারিয়ে আরেক মেয়ে পেয়েছে। এখন কেবল বাচ্চাটারে নিয়ে মালতিপাড়ায় পৌঁছতে পারলেই হয়।


শেষ । ধন্যবাদ
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×