somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত
উমর রা:। বিশাল সাম্রাজ্যের
সম্রাট তিনি। মহান বীর।
সাহসী পুরুষ। তাকে ভয় পায় না এমন
বীর আরবে কেউ নেই। অথচ এই
মানুষের মনটা ছিল কোমল, নরম।
বিশাল মনের দরদি মানুষ তিনি।
খলিফা হলে কী হবে, তার ভাবনার
যেন শেষ নেই। তিনি সারাক্ষণ
জনগণের কথা ভাবেন।
প্রজারা কে কষ্টে আছে, কেউ
কি না খেয়ে আছেÑ এমন ভাবনায়
তার মন সব সময় ছটফট করে।
তিনি জানতে চান তার জনগণের
দুঃখ-দুর্দশার কথা। খলিফার
মনে তাই স্বস্তি নেই। তিনি প্রায়ই
রাতের আঁধারে মদিনার রাস্তায়
বেড়িয়ে পড়েন। কখনো একা,
কখনো ভৃত্য আসলামকে নিয়ে।
না রাতের মনোরম আকাশ,
নয়নাভিরাম চাঁদ-তারকা দেখার
জন্য নয়; ঘুরে বেড়ান প্রজাদের
অবস্থা দেখার জন্য, জানার জন্য।
একদিন গভীর রাত। মদিনা শহরের
মানুষ ঘুমিয়ে পড়েছে। কোথাও
সাড়াশব্দ নেই। এমনি এক
রাতে মহামতি উমর রা: মদিনার
রাস্তায় ঘুরছিলেন জনগণের
অবস্থা দেখার জন্য।
হাঁটতে হাঁটতে তিনি অনেক দূর
এগিয়ে এলেন। চার দিকে নীরব
লোকালয়। কেউ জেগে নেই। এক
সময় খলিফা খুব কান্ত হয়ে পড়লেন।
তাই তিনি এক ঘরের
দেয়ালে হেলান
দিয়ে খানিকটা বিশ্রাম নেয়ার
চেষ্টা করলেন। হঠাৎ তার
কানে কিছু মহিলার কথা বলার শব্দ
ভেসে এলো।
তারা কী জানি বলাবলি করছিল।
গভীর রাত অথচ
মহিলারা জেগে আছে।
কোনো আপদ-বিপদ হয়নি তো?
খলিফার মন বিচলিত হয়ে উঠল। তাই
খলিফা কান খাড়া করলেন।
তিনি মহিলাদের কথা বোঝার
চেষ্টা করলেন। একজন
মহিলা বলছিল, ‘উঠো আমার মেয়ে।
জলদি উঠো। দুধের
মধ্যে খানিকটা পানি মেশাও।
তাড়াতাড়ি করো।’ এ কথার পর
খানিকটা বিরতি। সাড়াশব্দ নেই।
উমর রা: উদগ্রীব হয়ে আছেন মেয়ের
কথা শোনার জন্য। একটু পরেই
মেয়েটি বলে উঠল, ‘মা,
তুমি এটা কী বলছ?
তুমি কি আমাদের খলিফার
নির্দেশ জানো না? আমাদের
খলিফা আদেশ জারি করেছেন,
দুধে পানি মেশানো যাবে না।’ এ
কথা শোনার পর মা আবারো বলল।
‘তোমার খলিফার কথা শোনার
দরকার নেই। যাও
দুধে পানি মেশাও। তোমার
খলিফা তো আর এখানে নেই।
তুমি দুধে পানি মেশালে তিনি কী করে জানবেন?
মিছেমিছি তুমি এসব
কথা ভেবে সময় নষ্ট করো না।
যা বলছি তা করো গিয়ে।’
মেয়েটি বলল, ‘ও মা, মাগো! তুমি এ
কী কথা বলছো! আমরা সামনা-
সামনি খলিফার কথা মান্য করব আর
একাকী করব না, এটা হয় না।
কেননা উমর আমাদের কাজ
না দেখলেও তার
স্রষ্টা তো দেখছেন। তার
চোখকে ফাঁকি দেবে কিভাবে?
মা ও মেয়ে উভয়ের
কথা খলিফা উমর রা: মনোযোগ
দিয়ে শুনছিলেন।
এবারে মেয়েটির কথা শুনে উমর
রা: অবাক হলেন। তার
খোদাভীতি ও সততায়
খলিফা মোহিত হলেন। আর মহান
আল্লাহর কাছে তার জন্য
মনভরে দোয়া করলেন। সেদিন
খলিফার সাথে ছিলেন তার
গোলাম আসলাম। রাত গভীর
হয়ে এলো। খলিফা আজ আর
দেরি করলেন না।
তিনি ফিরে চললেন আপন
ঠিকানায়। তবে রওনা দেয়ার সময়
উমর রা: আসলামকে বললেন, ‘এ
বাড়ির
ঠিকানা তুমি জেনে রেখো।’ এ
কথা বলার পর খলিফা সেই স্থান
ত্যাগ করলেন। নীরব শহর মদিনার
পথে যখন হাঁটছেন তখন খলিফার
মনে বারবার নাড়া দিচ্ছিল
মেয়েটির সেই সুন্দর কথাগুলো।
পরদিন সকালে উমর রা: ভৃত্য
আসলামকে ডেকে মহিলার
বাড়িতে পাঠালেন। আর
বলে দিলেন মা ও মেয়ের খোঁজ
নিতে। আসলাম আর দেরি করলেন
না। তিনি দ্রুত ছুটে গেলেন ওই
বাড়িতে। তাদের খোঁজখবর
নিলেন। তিনি জানতে পারলেন
ওই বাড়িতে মা ও মেয়ে দু’জনই
থাকেন। মেয়েটির বাবা নেই।
আরো জানা গেল
মেয়েটি বিবাহিত নয়। আসলাম
ফিরে এসে সব কিছু
খলিফাকে খুলে বললেন।
আসলামের কথা শুনে খলিফার মুখ
উজ্জ্বল হয়ে উঠল। তিনি খুশি হলেন।
এক অজানা তৃপ্তির আলোয়
খলিফার মন যেন ভরে উঠল। হজরত উমর
রা:-এর তিন ছেলে। এরা হলেন
আবদুল্লাহ, আবদুর রহমান ও আসিম।
আবদুল্লাহ ও আবদুর রহমান
বিয়ে করেছেন। আসিমের
এখনো বিয়ে হয়নি। উমর রা:
ভাবলেন মেয়েটির
সাথে আসিমের বিয়ে দেবেন।
খলিফা মেয়েটির সুন্দর চরিত্র ও
সততার কথা পুত্র
আসিমকে খুলে বললেন। আর
তাকে বিয়ে করার প্রস্তাবও
ছেলেকে জানালেন। আসিম
বাবার কথায় রাজি হয়ে গেলেন।
অবশেষে মেয়েটি হজরত উমর রা:-
এর ঘরে এলো পুত্র আসিমের বউ
হয়ে। সততার কারণে গরিব
মেয়েটির ভাগ্য বদলে গেল।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×