somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পথে পথে হিমু পরিবহণ

০২ রা মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


লেখাঃ জাজাফী

শ্রাবণের শেষ বিকেলে আমি দাড়িয়ে আছি শাহবাগে। আকাশে কোন মেঘ নেই,পড়ন্ত বিকেলে সূর্য তার যত টুকু তেজ তা পৃথিবীতে নিংড়ে দিচ্ছে। সেলিমের আসার কথা। ও এলে ওকে সাথে নিয়ে যাব রুপার বাসায়।রুপাকে পাব কিনা জানিনা অবশ্য সেলিমের কাছে নিশ্চই ফোন আছে ওর ফোন থেকে না হয় রুপাকে একটা ফোন করে বাসায় থাকতে বলে দেব। সেলিম ছেলেটা বেশ করিৎকর্মা। ইদানিং বেশ সামাজিক দায়িত্ব সচেতন হয়ে এটা ওটা করার চেষ্টা করছে। মাজেদা খালা জানেনা যে ইতমধ্যে বাদলের মত সেলিমও আমার ভীষণ ভক্ত হয়ে উঠেছে। প্রথম যেদিন আমি সেলিমকে দেখলাম নিজেই থ হয়ে গেলাম। হলুদ পাঞ্জাবী,উস্কোখুস্কো চুল চেহারায় দার্শনিক ভাব। আমার সামনে এসে মাথা নিচু করে লাজুক ভঙ্গিতে বললো হিমু দা আমি আপনার ভীষণ ভক্ত। আমি স্বভাবসুলভ ভাবে বললাম তুমি যে আমার ভক্ত তাতো তোমাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু তুমিতো খালি পায়ে না। আমার কথা শুনে সেলিম একটু খুকখুক করে কাশি দিয়ে বললো হিমু দা আমিতো আপনার ভক্ত মাত্র সরাসরি হিমুতোনা। খালি পায়ে থাকতে পারিনা। সেই থেকে সে আমার পিছনে লেগে আছে। আমার পিছনে লেগে আছে বলতে আমার সাথে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করছে। ও আরো অনেক অনেক হিমু ভক্তদের নিয়ে একটা বিশাল দায়িত্ব হাতে নিয়েছে। হুমায়ুন আহমেদের নামে ক্যান্সার হাসপাতাল বানাবে। এ জন্য ওর রুপার সাহায্য দরকার। রুপার সাথে যেহেতু আমার ভাল জানাশোনা আছে তাই সেলিমের ধারনা হিমুদা সাথে থাকলে রুপাদির সাথে বিষয়টা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাবে।বাবা বলেছেন সব সময় মহাপুরুষরা ভাল কাজের সাথে যুক্ত থাকে। আমিও বাবার কথা রাখার চেষ্টা করছি। ছেলেটা বলেছিল আজ শাহবাগে এসে আমার সাথে দেখা করে রুপাদের বাসায় যাবে। সে জন্য বিশ মিনিট হলো এখানে অপেক্ষা করছি। শাহবাগ এখন আর আগের মত নেই। এখন কোন বিশেষ কিছু হলেই তরুনেরা শাহবাগে এসে জমা হয়। মিছিল করে,গলা ফাটিয়ে শ্লোগান দেয়। এই বিশ মিনিটেই অনেক কিছু চোখে পড়লো। আমি দাড়িয়ে থাকা অবস্থায় হঠাৎ দেখি নীল ক্ষেত থানার ওসি আকরাম সাহেব মটর সাইকেলে করে যাচ্ছেন। আমাকে দেখেই থামলেন। হিমু ভাই এখানে দাড়িয়ে কেন? ওঠেন থানায় গিয়ে এক কাপ গরম চা খেয়ে আসবেন। ভাবলাম যাই এতো করে যখন বলছে। আমি হাটছি আর ওসি সাহেব আস্তে আস্তে মোটর সাইকেল চালাচ্ছেন।ঘন্টা দুই তার সাথে আড্ডা দিলাম,তিন চার কাপ চা খেলাম তার পর মনে হলো এখন ওঠা দরকার। সেলিম নিশ্চই শাহবাগে এসে আমাকে না পেয়ে চিন্তা করছে। সত্যি সত্যিই দেখি সেলিম এসে দাড়িয়ে আছে আর এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। আমাকেই খুজঁছে এটা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। হঠাৎ আমার দিকে চোখ পড়তেই ওর মুখ উজ্জল হয়ে উঠলো। উচ্ছ্বাস দমিয়ে না রেখে বললো হিমু দা আপনি সত্যিই দেখা করার কথা মনে রেখেছেন। কোন কথা না বলে ওকে নিয়ে রুপাদের বাসার দিকে রওনা হলাম। রুপাকে একটা ফোন করা দরকার এ কথা বলতেই সেলিম ফোনটা বের করে দিল। রুপাকে সাথে সাথেই পাওয়া গেল তবে সে বাসায় নেই। সে আছে কাটাবনে। শাহবাগ থেকে কাটাবন খুব বেশি দূরে নয়। বললাম ওখানেই তোমার সাথে দেখা হচ্ছে। রুপার সাথে সেলিম বেশ কিছুক্ষণ কথা বললো। জয়নালের সাথে দেখা করার দরকার ছিল বলে আমি সদর ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। পরে জানতে পারলাম রুপা সেদিন সেলিমকে নিয়ে এমন কয়েকজনের সাথে দেখা করেছিল যারা ক্যান্সার হাসপাতালের জন্য প্রায় ১৯ লাখ টাকা দিয়েছে। আমি রুপার পরিচিতি আর পরিধি দেখে অবাক হই। কত সহজেই সে এতো গুলো টাকা জোগাড় করে ফেললো।ইদানিং শুনছি ফেসবুকে হিমু পরিবহন নামে একটা পেজও তৈরি করা হয়েছে। যতই লুকিয়ে থাকতে চাই হিমু ভক্তরা ততোই আমাকে বাইরে নিয়ে আসে। রাতে স্বপ্নে বাবা এসে ধমকে গেলেন হিমালয় তুমি বেশি মানুষের সাথে মিশছো এটা ঠিক হচ্ছেনা। আমি কি করবো? যে মানুষগুলো ক্যান্সার হাসপাতাল গড়ে তোলার জন্য আমার নামে হিমু পরিবহন খুলে এতো কষ্ট করছে তাদের সাথে আমি না থেকে পারিনা। আমি হিমু খালি পায়ে হেটে চেষ্টা করছি ক্যান্সার হাসপাতালের কাছে পৌছাতে। যেখানে আগে থেকেই হিমু পরিবহন পৌছে গেছে।


জাজাফী
উত্তরা,ঢাকা।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

লিখেছেন আবু ছােলহ, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

গুগল থেকে নেয়া ছবি।

সামুতে মাল্টি নিক নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। অনেকের কাছে মাল্টি যন্ত্রণারও কারণ। শুধু যন্ত্রণা নয়, নরক যন্ত্রণাও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×