somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আতেল হবার সহজ রাস্তা - জোক করছিনা, আমি সিরিয়াস।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের দেশের ইন্টেলেকচুয়ালিটির চর্চা যারা করেন, তাদের শুরু হয় মারক্স দিয়ে শেষ হয় চমস্কি দিয়া। এই জানা থেকে একটা জিনিষ যেইটা জানলাম সেইটা হইলো বাংলাদেশের ইনটেলেকচুয়ালিটির চর্চা খুবি , এবিসি লেভেলে পড়ে আছে। যেইটা ভয়ংকর।
ইন্টেলেকচুয়ালিটির চর্চা একটা জাতির জন্যে গুরুত্তপুরন। রাজনীতিবিদ এবং কর্পোরেটরা যখন জাতির চিন্তাকে পথ দেখায় এবং ন্যশনাল ডিসকোর্স নিরমান করে তখন তখন একটা পথ বলে ৭১ আর ৪৭ এর দর্শনের মধ্যে সকল আলোর দিশা আর আর একটা পথ নিয়ে যায় - দেশ কাঁপানো ২৪ ঘণ্টা বা জাতীয়তা পরিচয় বহন কারি পাব্লিক উৎসব এর বানিজ্যিকিকরনে । এই দুই পথেই গিয়া, মানুষ দিশা হারায়। অথচ, জাতিকে দিশা দেখাইতে পারে একজন ইন্টেলেকচুয়াল যে বলতে পারে, তার ভাত এর প্লেটে ভাত এর দাম বাড়া কমার কারন , তার সন্তান এর স্কুলের সমস্যা এবং তার সাথে তার বউ এর গ্যেঞ্জাম এর মুল কারন কি এবং রাষ্ট্রে তার অবস্থান কোথায় এবং রাজনীতিতে তার কোন সিদ্ধান্ত তাকে কোন পথে নিয়ে যাচ্ছে।
নিত্য জিবিকা অর্জন এর চিন্তায় ব্যস্ত মানুষের পক্ষে সারা দিন বসে বই ঘেঁটে এই সকল প্রশ্নের সমাধান খোজা সম্ভব না। এই সকল চিন্তার পথ এবং মুক্তির রাস্তা ইন্টেলেকচুয়ালদের করতে হয়।

মজার বিষয় হইলো, আজকে ইন্টেলেকট এর চর্চার দায় সবার না হইলেও অনেক বড় একটা জনগোষ্ঠীর যারা পড়তে পারে, চিন্তা করতে পারে এবং নিজের সমালচনা করতে পারে তারা চাইলেই এই চর্চা করতে পারে । আজকের জগতে, ইন্টেলেকচুয়াল আকাশ থেকে নেমে আসা উচ্চ চিন্তার মহা আতেল প্রাতঃ স্মরণীয় মহা পুজনিয় বিদগ্ধ কোন ব্যাক্তি না। আজকের জগতে ,যেই খানে ফেসবুক, নিউজপেপার এবং ব্লগ এর জগতে সবার এক্সেস আছে সবাই তার ইন্টেলেকচুয়ালিটি ব্যবহার করতে পাড়ে ।
কারন, এই জগতে শুরুতে সবার মতামত এর দাম থাকে এক আনা। আপনি কত কোটি টাকার মালিক, আপনি কত দক্ষতার সহিত সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করতে পারেন তাতে কোন বেইল নাই - আপনার মতামত এর শক্তি , আপনার আলোচনাতেই বোঝা যায় । এবং শুরুতে বাকি সবার মত আপনার মতামত এর দাম এক আনা। ফলে, সেই খানে আপনি নতুন কি বলতাছেন, নতুন কি পথ দেখাচ্ছেন তাই আপনার এক আনার দামকে চার আনা করবে। কিন্তু ফিল্ডটা অনেক লেভেল এবং আপনি নিজেই আজকে সেই চর্চা করতে এমপাঅয়ারড।

ফলে আপনার উপর দায় আছে, আপনার সেই ক্ষমতাকে ব্যবহার করা। আপনার জ্ঞান এর সীমানা এক্সপান্ড করার এবং চিন্তার ধারে শান দেয়ার এবং সবার উপরে - চেষ্টার মাধ্যমে চিন্তার সততা অর্জন করার।
একটা সময় ছিল, যখন জ্ঞান ছিল, উচুতলার লোক এর জিনিষ। একটা ভাল বই এর দাম ছিল, ১০০০ টাকা। মানে ১০টা ভাল বই এর দাম ছিল ১০০০০ টাকা। তার মানে, আপনি চাইলেই জ্ঞান অর্জন করতে পারতেননা। ফলে বড় লোক এর বখে যাওয়া সন্তান এর কাছেই জ্ঞান এর একসেস ছিল।
কিন্তু, সেই দিন পাল্টাইছে। আজকে, এক বছরের মত আহরিত জ্ঞান এর দাম দশ মেগাবাইট। এক মেগাবাইট এর দাম ২ টাকা।
এই দুই টাকা আপনিও খরছ করতে পারছেন এবং সব চেয়ে বেশি প্রিভিলেজ পাওয়া মানুষটাও পাচ্ছে।
ফলে,সময়ের কাছে আপনার দায় আছে, আপনার ইন্টেলেক্ট এর চর্চা করা। নিজের জ্ঞান এবং নিজেকে পরিশুদ্ধ করার । ফলে, আপনার নিজেকে উন্নত করার মাধ্যমে, নিজের চিন্তাকে শানিত করার মাধ্যমে এবং তার প্রয়োগের মাধ্যমে দেশের প্রতি আপনার দায় আপনি নিতে পারবেন।

আমাদের দেশের কিছু কিছু গ্রুপ আছে, তারা একধরনের একাডেমিক ইনটেলেচুয়ালিটি চর্চা করেন। তারা দর্শন দিয়ে শুরু করেন। এইটা ভাল।
কিন্তু জাস্ট একটা ডিসক্লেইমার দেই। একজন মডার্ন মানুষ হিসেবে ইন্টেলেকচুয়ালিটির চর্চা করতে হলে আপনাকে যে দর্শন দিয়ে শুরু করতে হবে এমন কোন কথা নাই। এমন কি আপনি ধর্ষণ নিয়ে পড়াশোনার মাধ্যমেও এই চর্চা শুরু করতে পারেন। কারন, ধর্ষণ আপনার দেশে অত্যন্ত বাস্তব একটা সমস্যা।
এই কথাটা আমি পান করতে বলি নাই।
একটা জিনিষ খেয়াল রাখবেন। যেই ইন্টেলেকচুয়ালিটির চর্চা আপনার বাস্তব জীবনের কোন সমাধান করতে পারে না - সেইটা বরিং, সেইটা পোসপাসের ইনটেলেকচুয়ালিটি, সেইটা ইন্টেললেকচুয়ালিটির স্বার্থে ইনটেলেকচুয়ালিটি। সেইটায় আপনি কোন আনন্দ পাবেন না, সেইটা আপনাকে বিদগ্ধ করতে পারে, কিন্তু সেইটা হয় আপনার জীবনকে একটা ঝগড়াটে বউ এর মত হেল করে তুলবে নয় এবং আপনার জীবনকে চিরতার মত বিস্বাদ করে ফেলবে।
আমাদের মার্ক্স থেকে উঠে আসা ইন্টেলেকচুয়ালরা এই সমস্যায় আছে। তারা মনে করেন, বাংলাদেশের তাবত সমস্যার সমাধান মার্ক্সবাদে নিহিত। এই জন্যে তারা মার্ক্স এর টেক্সটবুক গুলা নিয়ে আক্ষরিক ভাবে একজন আরেক জন এর সাথে বিতর্ক করেন। এবং সাধারন মানুষ তাদেরকে ইন্সিউরেন্সের এজেন্ট এর মত এভয়েড করে। কারন মানুষ দেখে, তার জীবনের যে অন্তর্নিহিত প্রবলেম, সে যখন বাস এর হেন্ডেল করে ঝুলে ঝুলে যেতে যেতে রাস্তায় পড়ে থাকা পানিতে তার যে মুখচ্ছবি দেখে এবং সেই মানুষটার জীবনের যে প্র্যাকটিকাল ক্রাইসিস তার কোন কিছু এই মার্ক্সবাদিরা সমাধান করে দেখাতে পারে না, চিন্তা দিয়েও না বাস্তব ভাবেও না ।
এই মার্ক্সবাদিরা শুধু বিপ্লব এর স্বপ্ন দেখায় এবং এইটা বলে যেই দিন বিপ্লব অর্জিত হবে সেই দিন তার জীবনের সকল ক্রাইসিস “কুল” বলার মত সাথে সাথে দুর হয়ে যাবে।
কিন্তু ততদিন পর্যন্ত তার ভাত এর প্লেটে ভাত এর দাম বাড়া কমা , তার সন্তান এর স্কুলের সমস্যা এবং তার সাথে তার বউ এর গ্যেঞ্জাম এর মুল কারন কি এবং রাষ্ট্রে তার অবস্থান কোথায় এবং রাজনীতিতে তার কোন সিদ্ধান্ত তাকে কোন পথে নিয়ে যাচ্ছে এই বিষয়ে তাদের কোন কিছু যোগ করার নাই।
হয় বিপ্লব নয় ঘোড়ার আন্ডা- এই হচ্ছে মার্ক্স হইতে চমস্কিপন্থীদের সমাধান ।
আপনি এই ধরনের ইন্টেলেকচুয়ালিটির চর্চা করতে পারেন। তাতে দোষের কিছু নাই। এই খানেও আরাম পাবেন,গারল ফ্রেন্ড পাবেন, দরিদ্রদের জন্যে কিছু করতাছেন চিন্তা করে নিজের লিবারেল মনটা একটু সাটিসফ্যাকশানও পাবে এবং সর্বোপরি সোসাইটিতেও ব্যাপক মান মর্যাদা পাবেন।
কিন্তু, মুক্তির কোন পথ না দেখে আপনার মন সব সময় ক্ষিপ্ত হয়ে থাকবে। আপনার জ্ঞান আপনাকে বিরক্ত করে তুলবে। তাই, সেই সর্ব রোগ এর ঔষুধ চিরতার তিতা গেলার বদলে আপনাকে আমি আরও দারুন একসাইটিং একটা জগৎ এর খবর দিব।

এই জগত টায় আপনি গ্লোবাল ওয়ার্নিং আসলে হইছে নাকি হয় নাই তা নিয়া যে বিতর্ক তার ভেতরে আপনাকে যাইতে হবে এবং তাতে গেল বছর কেন জেলেরা ইলিশ পায় নাই বেশি সেইটার খবর আপনি পাবেন , আপনি আরও জানবেন স্টিভ জবস কেন এই যুগের নিউটন এবং আপনি আরও জানবেন এই স্টিভ জবস এর আবিষ্কার যেই ভাবে এলুমিনিয়াম এবং রেয়ার আরথ এর ব্যবহার বাড়ায় দিছে তাতে কেমনে আপনার সন্তান এর ভবিষ্যৎ কিভাবে ধ্বংস হবে , আপনি আরও বিতর্ক করবেন গত কয় বছর ইউরোপে কেন রিসেশান থেকে জার্মানি বেচে গেল এবং আপনি তখন গ্লবালাইজেশান এর কারনে আপনার দেশে যে গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি হইলো তার ইফেক্ট কি হইলো তা নিয়ে সচেতন হবেন।

আপনি আরও জানবেন নিউ লেফট কি ? নিউ লেফট কোন দিকে আগাইছে, আপনি জানবেন সম্পদ এর সুষম বন্টন শুধু মার্ক্স এর পথে নয় আর অনেক পথে অর্জন করা যায়। আপনি তখন লেফট এর কোর আইডিওলজি, লিবারেল হওয়ার মুল অর্থ গুলো খুজে পাবেন।
আপনি তখন ইকনমকিসে আগ্রহী হবেন। আপনি জানবেন আমেরিকা কেমনে ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে এবং চায়না এবং ইন্ডিয়া কেমনে নতুন বিশ্বের পলিসিকে ডিফাইন করছেন এবং আপনি আরও জানবেন চায়না কিভাবে আজকে আফ্রিকাতে নতুন অর্থনৈতিক কলোনি এস্টাব্লিশ করছে।

আপনাকে তখন জানবেন, মানুফাকচারিং সারা বিশ্বেই নিম্নবিত্তের চাকরি দেয়, তাই মানুফাকচারিং কে আপনি রেস্পেক্ট করবেন।
আপনি তখন মানুষের চিন্তায় ধর্মের ভুমিকা সম্পর্কে জানবেন সেই জানা থেকে আপনি ধর্মকে জানা শুরু করবেন, স্রষ্টাকে ভয় বা স্রষ্টাকে বাতিল করার ভাবনা থেকে নয়।
আপনি তখন বুঝবেন, পকেটে ক্রেডিট কার্ড রেখে ডাক্তার ইউনুস এর সুদ ব্যবসাকে বাতিল করে দেয়ার মধ্যে একটা কন্ট্রাডিকশান আছে সেই কন্ট্রাডিকশান সম্পর্কে আপনি আরও সতর্ক হবেন।
আপনি গ্লবালাইজেশান এর ফলে বিশ্ব পুজির যে মুভমেন্ট তাকে ক্রিটিকালি এনালাইজ করতে শিখবেন - আরে ওইটা তো শুধুমাত্র ধনী দেশদের নতুন পুজির কলোনি সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্র বলে বাতিল করতে পারবেন না কারন আপনি বুঝতে পারবেন আপনার জগতটা একটা বৈশ্বিক জগত - আপনি চান কি না চান একটা পরিবর্তনের হাই স্পিড বুলেট ট্রেনে আপনি উঠে পরেছেন এই খান থেকে লাফ দিয়ে নামার কোন উপায় নাই । ফলে আপনি আপনার বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে বোঝার চেষ্টা করবেন কোন পলিসি ডিসকোর্স এর মধ্যে আপনার দেশের মুক্তির পথ।
আপনি তখন বুঝবেন, আপনার দেশের গার্মেন্টস শ্রমিকরা কেন ফ্যাক্টরি আগুনে পড়ায়, কেন রাস্তায় মাইর খায়, কেন তাদের অবরোধে আপনার বাস আটকে থাকে । আপনি তখন বুজবেন, কিছু বেসিক কাজ করতে আপনার সরকার কত ব্যর্থ এবং কি পরিমাণ গান্ধা হলে একটা দেশের সরকার এর পলিসি এত ভাবে শ্রমিক বিরোধী হয়। এবং আপনি আরও বুজবেন কেন মার্ক্সবাদি বাম্পন্থিদের হাতে কোন সমাধান নাই বরং তারা সমাধানের পথটাকে ওভার সিমপ্লিফাই করার মাধ্যমে শ্রমিক শ্রেণির ক্ষতি করছে ।

আপনি জাস্ট ষড়যন্ত্র তত্ত দিয়ে সব বাতিল করে দিতে পারবেন না। কারন, আপনি তখন বুঝতে পারবেন কোন বৈশ্বিক ষড়যন্ত্র নয়, আপনি নিজে এবং আপনার জাতি নিজের দোষেই পিছিয়ে আছে। আপনি তখন নতুন বিশ্বে আপনার প্রধান চ্যালেঞ্জ গুলো সম্পর্কে সতর্ক হবেন।
আপনি তখন বুজবেন টেকনোলজি আপনার জীবনেকে কিভাবে মৌলিক ভাবে পালটে দিয়েছে ।
আপনি তখন জানবেন ফিল্ম এপ্রিসিয়েসান, আর্ট এপ্রিসিয়েশান এবং পপুলার কালচার আপনার জীবন এর পার্ট। তখন আপনি মমতাজ এর গান শুনতে ভয় পাবেন না এবং তার মধ্যে আপনি শিল্পের মুল ফর্ম গুলো পাবেন এবং আসল আর্ট আর নকল আর্ট এর পার্থক্য বুঝবেন।
এইটা নিউ ইন্টেলেকচুয়ালিটি। আপনি বলতে পারেন, এইটা কমন সেন্স, কমন নলেজ। ভুল। বরং বাস্তবতা হইলো, এইটার মধ্যে আপনার যেই পরিমাণ আবিষ্কার করতে হবে, তাতে আপনি নিজের সৃষ্টিশীলতা বাদে কোথাও পৌছাইতে পারবেন না।
এইটাই আপনার লাভ। ধর্ম গ্রন্থের মত এই জ্ঞান বুলির মত শিখে এই খানে আপনি কোথাও পৌঁছাইতে পারবেননা আপনাকে নিয়ত ইন্টারপ্রেট করতে হবে। সেই খানে আপনি সৃষ্টির আনন্দ পাবেন এবং আপনার চিন্তা আপনার দেশের জন্যে সমাধানের পথ খুজবে।
আপনি জানবেন। যেই জ্ঞান মুক্তির পথ দেখায় সেই জ্ঞান সব চেয়ে কঠিন জ্ঞান। সেই জ্ঞান সব চেয়ে আলোকিত জ্ঞান। ফলে জ্ঞান আপনাকেও মুক্তি দিবে।

এই সব জ্ঞান চর্চায় আপনার সব চেয়ে বড় লাভ হবে, আপনি বাংলাদেশের বর্তমান ইনটেলেকচুয়াল লাইনের লোকদের মত সব কিছুকে বাতিল করে দেয়া থেকে মুক্তি পাবেন। আপনি বাস্তবতাকে আপন করে নিবেন। এবং আপনার জানা যত বাড়বে আপনার এই বাস্তবতা সম্পর্কে ক্রিটিসিজম গুলো তত প্র্যাক্টিকাল হবে। ফলে, আপনি তখন দেখবেন, আপনার হাতে কিছু সমাধান আছে। মার্ক্সপন্থীদের মত ফ্রাস্ট্রেটেড আপনি হবেন না। কারন, তখন আপনার চিন্তা আপনাকে তখন সমাধান দিতে থাকবে। সেইটা আপনি প্রয়োগ করতে পারেন কি না পারেন আপনি যে সমাধান এর চিন্তা করতে পারছেন সেই ভাবনাটাই আপনাকে ইন্সপায়ার করবে।

আপনি যখন এই সব ঢুকবেন তখন হে উৎসব নিয়া বিতর্ক আপনার কাছে প্রাচীন যুগের মানুষদের অর্থহীন ছোটলকি বলে মনে হবে। কারন, জ্ঞান এর আদান প্রদান নিয়ে হীনমন্যতা বোধে ভুগাটা আপনার কাছে যন্ত্রণাদায়ক চিন্তা মনে হবে। আপনার মনে হবে, এই ধরনের চিন্তার চিরতা গেলার জীবন যাপন করার চেয়ে চেয়ে সুইসাইড করা ভাল। আপনি তখন এইটাও বুঝতে পারবেন যে, সব জ্ঞান এর আদান প্রদানই কর্পোরেট ধান্দা। ফলে, কর্পোরেট ধান্দার ভেতর থেকেই আপনি সম্পদের বন্টন এর রাস্তা খুজবেন । কারন, সেইটাই আপনার দেশের ক্রনি ক্যাপিটালিজম এর বাস্তবতা। আপনি বুজবেন বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিয়ে তাকে ব্যবহার করা টা এবং প্রাক্টিকাল হওয়াটা আপনার নিউ ইন্টেলেকচুয়ালিটির একটা গুরুত্তপূর্ণ মুলনিতি।
ফলে, আপনি তখন অর্থনীতি, সমাজনিতি, রাষ্ট্রনীতি, মরালীটি, গেমস, আর্টস সব মেশানো শুরু করবেন। কিন্তু কোন কিছুর জন্যে আপনাকে দুর্বোধ্য আতেল সাজতে হবেনা। আপনি যেই জগতে বাস করেন, যেই গান শুনেন, যেই সিনেমা দেখেন, যেই রাজনীতির মধ্যে থাকেন – যেই বাস্তবতায় বিরাজ করেন তার ব্যাখ্যাই হবে আপনার দায়। ফলে, আপনি আপনাকে বুজবেন , আপনার পাশের মানুশেরা আপনাকে বুঝবে।
এই ধরনের চিন্তার একটা ক্রিটিসিজম হইলো, আসলে আপনি ইন্টেলেচুয়ালিটিকে উলটা পথ থেকে ধরবেন। আপনি এমন সব জিনিষে হাত দিবেন যাকে বুঝতে হইলে আপনার অনেক কিছু জানা উচিত ছিল। কিন্তু, বাস্তবতা হইলো একজন মডার্ন মানুষ হিসেবে আপনি এমন ভাবে ইনফরমেশান পাইছেন তাতে আপনি অনেক কিছু আগে জানছেন এবং এখন আপনাকে পিছনে আগাইতে হবে। আগাইতে আগাইতে আপনি এক জায়গায় পউছাবেন যখন আপনি বুজবেন আপনার পড়তে হবে স্টাডি অফ মরালীটি - নৈতিকতার মুল ভিত্তি। সেইটা পড়ার পর আপনি রুটে পউছাবেন। কারন, নৈতিকতা হলো ট্রাডিশনাল ইন্টেলেচুয়াল স্টাডির একদম প্রথম পর্ব।

কিন্তু, এইটা আজকালকার সময়ের প্রধান ইন্টেলেকচুয়ালরা যেমন বলে, ইন্টেরেস্টিং টাইমস। ফলে, আগের যা কিছু নিয়ম ছিল সেই গুলো এখন আর নিয়ম নাই। সেই গুলোকে সময় পিছনে ফেলে দিছে। তাই এইটা একটা ভিন্য সময়ের ভিন্য ইন্টেলেকচুয়াল রিয়ালিটি। এইটার একটা ভাব চক্করঅয়ালা নাম ও দিতে পারবেন। পোস্ট পোস্ট মরডারনিজম। :p
রেফারেন্স চাইলে আমি দুই জন এর নাম বলতে পারি। তারা হইলো, স্লাভ জিজেক (Slavoj Žižek) - এবং ইয়াকব স্মিল(Vaclav Smil )

আপনি সেই রাস্তায় যদি সত্যি রাস্তা খুজে পান তখন বুঝবেন, জ্ঞান এর দুইটা ফর্ম আছে। একটা ফর্মে আপনি ইট আর সিমেন্ট দিয়ে একটা বিল্ডিং বানাবেন। এবং সেই বিশাল বিল্ডিং এর ভেতরে আপনি যখন ঢুকবেন তখন আপনি আর আকাশ দেখতে পাবেন না। আপনি নিজের তৈরি ঘর এর দেয়ালের মধ্যে আটকা পড়ে যাবেন।

আর একটা জ্ঞান আছে তাতে আপনি বিশাল একটা সমুদ্রের পাড়ে এক দিক থেকে আর এক দিকে ছুটাছুটি করতে থাকবেন । এই দিকের মাটি খুড়বেন, ওই দিকের মাটি খুঁড়বেন। এর পর সব মাটি দিয়ে আপনি বানাবেন বালির প্রাসাদ। কিন্তু, ঢেউ এসে বার বার আপনার প্রাসাদ টাকে ভেঙ্গে দিবে। আপনাকে আবার খুড়তে হবে, আপনি আবার বানাবেন একটা নতুন প্রাসাদ। সেইটা আবার ভেঙ্গে দিবে ঢেউ।

আপনি বুজবেন, জ্ঞান দিয়ে আপনি যতই নতুন বিল্ডিং বানাবেন, আপনার সেই বালির প্রাসাদ বার বার ধুয়ে যাবে। এবং আবার আপনাকে নতুন করে পথ খুজতে হবে। আবার বানাতে হবে । আবার সেইটা ভেঙ্গে যাবে। আবার বানাবেন।
এই কাজটা যদি আপনার পেইন লাগে, তাইলে ইনটেলেক্ট এর চর্চা করা আপনার কাজ না। কারন এই ভাঙ্গা এবং গড়া টাই আপনার ইনটেলেকচুয়াল এক্সারসাইজ এর সব চেয়ে বড় আনন্দ।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×