somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডক্টর পিয়াস করিমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। একাত্তুর টিভির এখন আরো একজন ভদ্র পাঞ্ছিং ব্যাগ লাগবে

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

টক শো আমি খুব একটা দেখিনা। কিন্তু, নেগেটিভিটির প্রতি মানুষের স্বাভাবিক আকর্ষণের জন্যে কিনা জানিনা, টিভি খুললে একাত্তুরেই আটকে যেতাম। সেই খানে প্রায়ই দেখতাম ডক্টর পিয়াস করিমকে।

বাংলাদেশের টক শোতে নতুন কিছু বলার নাই, শেখার নাই, জানার নাই। সেইটা পাবলিক ইন্টেলেকচুয়ালিটির চর্চা হোক আর সরকারের সাথে জনগনের হিস্যা নিয়ে আলাপ হোক। দর্শক হতে শুরু করে, ক্যামেরাম্যান পর্যন্ত সবাই জানে, কে কোন যুক্তি দেবে এবং কোন যুক্তির উত্তরে কে কি বলবে। ফলে, বাংলাদেশের বিভাজিত পলিটিক্সে টক শো হয়ে ওঠে মূলত, যে যা শুনতে চায় সেইটাকে রিইনফোরস করার জায়গা। কারন, দর্শকও জানে টকশোতে কে কি বলবে।কোন প্রশ্নের উত্তরে কার কাছ থেকে কি উত্তর আসবে। এবং সেইটার কাউন্টার যুক্তি কি হবে।

এই অবস্থায় ডক্টর পিয়াস করিম অনেকের অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। এর অন্যতম একটা কারন হইলো শঠতা, ভণ্ডামি, ক্রুরতা, লোভপূর্ণ কিছু মানুষের যথেচ্ছ মিথ্যাচার সম্মুখে, সেই মিথাচারে ক্ষুব্ধ না হয়ে , নিজেকে সর্বোচ্চ পরিমান আত্মসংবরণ করে, ভদ্র ভাষায় তার উত্তর দিয়ে যেতেন তিনি। অনেকে সেইটা গুন হিসেবে দেখেছেন, অনেকে মনে করেছেন পাঞ্ছিং ব্যাগ হওয়ার অসীম ক্ষমতার কারনেই, উনাকেই একাত্তুর বার বার ডাকতো।

তাদের মূলত দুইটা টেকনিক, এক, তারা প্রথমতেই ডক্টর পিয়াস করিমকে ডিজিটিমাইজ করেছিল, এই বলে যে উনি একজন দলীয় লোক। ফলে, একজন ডিলিটিমাইজ পিয়ার করিম কি বলেছে সেইটা যেহেতু দলীয় অবস্থান তাই এইটাকে আমলে নেয়ার দরকার নাই।
দুই, তারা তাদের দলীয় তল্পিবাহকদের মাইকের উপরে সম্পূর্ণ দখল দিতো যেন তারা আনলিমিটেড প্রপগান্ডা চালাতে পারে। এবং ডক্টর পিয়াস করিমকে উনারা অল্প বলার সুযোগ দিতো এবং যেই খানে বলার মত কিছু আছে সেই খানে, উপস্থাপক বা উপস্থাপিকা উনাকে মাইক দিতো না। এর ফলে, স্টুডিওতে যে টেনশন সৃষ্টি হইতো এবং এতে সরকার বিরোধী দর্শকের যে ক্ষোভের সৃষ্টি হইতো বা সরকার দলীয়দের একচ্ছত্র অধিপত্তের ফলে তাদরে সমর্থকদের যেই অর্গাজম হইতো সেই দ্বন্দ্বটাই একাত্তুর টিভির মুল আকর্ষণ। এই ভাবে পিয়াস করিম, মূলত একাত্তুর টিভিকে বৈধতা দিতেন, উনার অজ্ঞাতে।

কিছু জায়গায় ওরা উনাকে একটা সুযোগ দিতো, অনৈতিক অবৈধ সরকারের কার্যক্রমের সমর্থনে তাদের সীমাহীন মিথ্যাচার এবং মিথ্যাচারের একটা প্রত্যুত্তর দেয়ার।যেইটাকে তারা কয়েক জন মিলে উত্তর দিয়ে দিতো। ইমেজটা এমন ছিল যে ক্ষুধার্ত নেকড়ের দল একটা মানুষের আসে পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাকে খাওয়ার জন্যে, এবং একটা লাঠি দিয়ে মানুষটি নেকড়ে গুলোকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কিন্তু, নেকড়ে গুলো মানুষটাকে খেয়ে ফেলতো। কারন দলান্ধ উপস্থাপক বা উপস্থাপিকা ফাইনালি এবং কোটারি রাষ্ট্রীয় জন্ত্রের সুবিধাভোগী সহযোগীরা , তাদের দলের লাইনটাকে চাপিয়ে দিয়েই, আলোচনা শেষ করতো। কিন্তু, উনার উপস্থিতি তাদের বৈধতা দিতো। এই জন্যেই, ওরা উনাকে বার বার ডাকতো।

একাত্তুর টিভির এখন আরো একজন ভদ্র পাঞ্ছিং ব্যাগ লাগবে যিনি, সকল মিথ্যাচার , অসত্য কথন আর ভণ্ডামির মুখেও একটা দুর্বল, ডিলিজিটিমাইজড প্রতিপক্ষ হিসেবে, নিজেকে আত্ম সংবরণ করে ভদ্রজনোচিত যুক্তি দিয়ে বিরুদ্ধ পক্ষের খুঁটি কোন মতে ধরে রেখে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিয়ে একাত্তর টিভির টিআরপি রেটিং ধরে রাখতে পারবে।

ডক্টর পিয়াস করিমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। ভালো লোক ছিলেন। দেশপ্রেমিক ছিলেন।
১৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×