somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চার নম্বর উদ্বায়ী পদার্থ।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ৯:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৯৯ সালের কথা। গোকুল চন্দ্র দাশ স্যারের কাছে বাংলা পড়ি। ক্লাস নাইনে। স্যারকে সংক্ষেপে গোচদা বলা হয়। ব্যাপারটার মধ্যে যে অশ্লীল ইঙ্গিত আছে সে সম্পর্কে স্যারের তেমন ধারনা নাই। এক ছেলে একবার গিয়ে বলেছিল স্যার আপনাকে সবাই গোচদা বলে। স্যারের স্বভাব সুলভ বিনিত হাসি, বলবেই তো। ওটাই যে আমার পদবী। স্যার কে নিয়ে আরেকটা মজার ব্যাপার আছে। এক ছেলে তখন বাইরের এক স্কুল থেকে ত্রান্সফার হয়ে আসছে। গোকুল স্যারকে চিনেনা। স্যার ক্লাসে বহুবচন পড়াচ্ছেন। উদাহরন দিতে বলা হল। ছেলেটা অবলীলায় বলে গেল, নারীকূল, পাখিকূল, পশুকূল, গোকুল।

স্যারের কাছে প্রথম দিন ছিল পরীক্ষা। প্রথম প্রশ্নটাই ছিল – গ্রামের নাম কি? খুবই চিন্তায় পড়ে গেলাম!! গ্রামের নাম হল আমার কয়ারিয়া থানা কালকিনি জেলা মাদারীপুর। সারা জীবন যদিও ঢাকায় ছিলাম। আবার নানা বাড়ি যদি চিন্তা করি গ্রামের নাম মানপাশা থানা মনে নাই জেলা ঝালকাঠি। কিন্তু অপশন এ দেখি একটাও নাই। বড্ড চিন্তায় পড়ে গেলাম। ৪ টা অপশন পড়লাম। রসুলপুর , রহমতপুর, কাশীপুর, জামালপুর। স্যার এর কাছে গেলাম। স্যার নিম্নলিখিত কোনো গ্রাম আমি চিনিনা। স্যার বললেন কি পরীক্ষা দিতে আসছ? আমি বললাম স্যার আমি আজ নতুন। স্যার বললেন, ওহ হো। আজ তো “মহেশ” অধ্যায়ের উপর পরীক্ষা। তারপর বুঝলাম। মহেশ গল্পে উল্লেখিত গ্রামের নাম এবং উহা কাশীপুর।



কয়েকদিন আগে ব্লগেই মনে হয় ফানি একজনের প্রশ্নের উত্তর নিয়ে একটা পোস্ট ছিল। মানে একজনের উত্তর পত্রের ছবি। আমার কাছে মনে হয় ফানি আনসার শুধু যে ফেল করা ছাত্র ছাত্রীরা লিখে তা না। অনেকের খাতাতেই এই জিনিষ পাওয়া যাবে। আমার এক বন্ধু আছে। বর্তমানে অনেক ভাল জায়গা থেকে গ্র্যাজুয়েট করা, অনেক ভাল রেজাল্ট করা। সে একবার স্কুলে থাকতে একটা ব্যাখ্যা লিখেছিল, আলোচ্য কবিতাংশটুকু “বিশিষ্ট বিদ্রোহী ব্যাক্তি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত”………., ব্যাস স্যার আর যায় কই। দে মাইর।

এক বন্ধু আবার কবর নাটকের ক্যারেক্টার চেঞ্জ করে ফেলেছিল। মুর্দা ফকির না লিখে লিখেছিল মুর্গা ফকির। মুর্গা ফকির কবর নাটকের একজন আলোকিত চরিত্র। সততা, ন্যায়, অবরোধ প্রতিরোধ এগুলো তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। পুরাই বেরা-ছেড়া। এক বন্ধু একবার শীতের সকাল রচনা লিখল। “আমি শীতের সকালের শৈততা অনুভব করি। আমি শীতের সকালের শিশির বিন্দুকে আলিঙ্গন করি। আমি শীতের সকালে পাখির গান অবগাহন করি”। স্যার থামালেন। ওই থাম কি বললি? আরেকজন কি দাড় করিয়ে, ঐ তুই বল অবগাহন মানে কি? জ্বি স্যার। অবগাহন মানে গোসল।

এই ছোট ব্লগটা লেখা পেছনে একটি পটভুমী আছে। ভার্জিনিয়া টেক-এ এরো স্পেশ ইঞ্জিনিয়ারিং এ পিএইচডি রত আমার স্কুল বন্ধু আরাফাত ইসলাম খান যাকে আমরা চিকন আলী বলে চিনি সে কয়েক দিন আগে বেশ দুঃখ প্রকাশ করেছে আমার সামনে। ১৯৯৮ সালে ক্লাস এইটে বিজ্ঞান পরীক্ষায় প্রশ্ন এসেছিল চারটি উদ্বায়ী পদার্থের নাম কি। মানে যা কঠিন থেকে বাষ্প হয়ে যায় তরল হওয়ার মত কষ্ট নেয় না। পাশাপাশি সিট ছিল আমাদের। আমি নাকি তাকে তিনটার নাম বলে ছিলাম। নিশাদল, আয়োডিন আর নেপথলিন। আমি বললাম স্যরি দোস্ত। কর্পূর এর নামটা বলা হয় নায়। সে এরপর বেশ খুশি। দেরীতে হইলেও আমি তাকে ৪ নম্বরটা বললাম। যদিও পরীক্ষার খাতায় ঐ জিনিস লেখার আর সুযোগ নাই। কারন ৪ নম্বরটা বলতে যে ১২ বছর লাগিয়ে দিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১২:৪৩
৩৮টি মন্তব্য ৩৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×